“হিন্দুদের সতীদাহ এবং বাল্য বিবাহ নিয়ে দুটি কথা”
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ
সতীদাহ প্রথা, বাল্য বিবাহ এই নিয়ে সেই ছোট বেলা থেকে বহু নিন্দা শুনে আসছি। এই গুলো আইন করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভালো হয়েছে। কিন্তু, প্রগতিশীল হিন্দু সমাজে এই প্রথা কি করে এলো তা নিয়ে কি কেউ ভাবনা চিন্তা করে দেখেছেন?????
সনাতনি সমাজে তো ছিলো ‘স্ব্যয়ম্বর’ প্রথা। পরিনত বয়ষে অনুঢ়া কন্যারা নিজেদের পছন্দ মতো স্বামী পছন্দ করে নিতেন। শ্রী কৃষ্ণের সময় থেকে পৃথ্বীরাজ চৌহান (৯০০ বছর আগে অবধি) সকলের জীবনীতে এই প্রথার কথা শোনা যায়। তাহলে?????? হঠাৎ করে হিন্দুরা এতো অসভ্য হয়ে গেলো কি করে??????
দয়া করে একবার মুসলমানি শাসনের সময়কার প্রাসাদ দুর্গ গুলো ভালো করে ঘুরে দেখে আসুন। লালাকেল্লা, ফতেপুর সিক্রি, আগ্রা ফোর্ট, ইত্যাদি ইত্যাদি। এমনকি আমাদের বাড়ীর পাশে, মুর্শিদাবাদের হাজার দুয়ারী। পারলে ঘুরে আসুন তুরষ্কের খলিফার প্রাসাদ, ইস্তানবুলে। এর প্রতিটি জায়গায় আমি গেছি,হ্যাঁ, তুরষ্কেও (২০১৩ সালের জুলাই মাসে)।
এই সব প্রাসাদে বিলাস বৈভবের নগ্ন প্রকাশ তো দেখতে পাবেন ই, সেই সংগে দেখতে পাবেন সেই সব প্রাসাদের মালিকেরা রাতে বা যৌন ঊত্তেজনা হলেই, নগ্ন অবস্থায় কি করতেন। এদের বেশী ভাগ মালিকেরা (সুলতান, সম্রাট রা) তাদের বিয়ে করা বৌদের সংগে যৌণ সুখ লাভ করতেন না। কারন, সাধারন হিন্দুদের সম্পত্তি লুটে, ঐ সব প্রাসাদ বানিয়ে তুলতে, , যে সময় তাদের কেটে যেতো, তার মধ্যে ওদের বিয়ে করা বৌ গুলোর (আকবরের ছিলো ৭ টি) যৌনাঙ্গ শুকিয়ে যেতো (মেনোপজে যা হয়)। প্রয়োজন পড়তো অনুঢ়া, অক্ষত যোনি, সদ্য কৈশোর পেরোনো বাচ্চা বাচ্চা মেয়েদের। (স্মরন করিয়ে দেই আয়েষার কথা,-৬ বছরের সময় তাকে ৫২ বছরের এক বৃদ্ধকে বিয়ে করতে হয়েছিলো)। তা এই অল্প বয়ষী মেয়েদের কোথা থেকে ধরে আনা হতো????? গ্রাম গঞ্জ থেকে, পাইক বরকন্দাজদের পাঠিয়ে এই মেয়েদের ধরে এনে যৌণ দাসী বানিয়ে রাখা হতো। আগ্রা দুর্গে আছে যে হারেম সেখানে থাকতে পারতো ২০০০ মেয়ে। ১৯৭৭ সালে গিয়ে আমি সেই হারেম দেখে এসেছি, এবারে দেখলাম সেই দিকে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। তুরষ্কের খলিফার প্রাসাদে হারেম ১১ একর জমির ওপরে বানানো মুরগীর খোপের মতো ছোট ছোট অসংখ্য ঘর। এখানে ও যারা থাকতো তাদের বেশীর ভাগ ভারতীয় হিন্দু মেয়ে, যাদের আমাদের এখান থেকে উপঢৌকন হিসাবে পাঠানো হতো, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শাসকদের দ্বারা। রাজা দাহিরের দুই মেয়েকেও ওখানে পাঠানো হয়েছিলো।
সুলতানদের নারী লোলুপতা লিখতে হলে পর্ন গ্রাফির কাসুন্ধি ঘাটতে বসতে হবে। মেবারের রানার সুন্দরী স্ত্রীকে (রানী পদ্মিনী) লুট করে ধরে আনার জন্য সুলতান আলাউদ্দিন খলজী তো সসৈন্যে আক্রমনই করে বসলেন। হায়, পারলো না। সিরাজদৌল্লার নজর চলে গিয়েছিলো নাটোরের রানী ভবানীর ষোলো বছরের বিধবা মেয়ের সৌন্ধর্য্যের দিকে। পাইক বকন্দাজ পাঠিয়েও যখন সে কাজ করতে পারলো না তখন বাধ্য হয়ে হাজার দুয়ারীর হিন্দু মেয়েদের দিয়ে কাজ চালিয়ে নিলো। এই তো হলো বিগত ৮০০ থেকে ৯০০ বছরের হিন্দু মেয়েদের কাহিনী আর বাবা মায়ের দুঃশ্চিন্তা।
তা এই, হিন্দু মেয়েদের নিয়ে এই যে “লাভ জিহাদ” শুরু হয়েছে সেটা কি আজকের????? দেখছিলাম, বলিঊডের খানেরা তো হিন্দু মেয়ে ছাড়া পছন্দই করে না। একজন তো ৩ বারে ৩ জনকে বিয়ে করেছে, আর একজন দুই বারে দু জনকে। এখন না হয় এই হিন্দু মেয়েগুলো সেঁধে (কি সাধ জানি না বাপু,ওরাই জানে) খান দের পেছনে দৌড়াচ্ছে। ৮০০ -৯০০ বছর আগে তো সেই সুযোগ ছিলো না? হিন্দু বাবা মা তাই সর্বদা শংকিত, ভীত, সন্ত্রস্থ থাকতো। ১২ বছর কেনো, তার আগেই বিয়ে দিয়ে দিতো, কারন একবার বিয়ে হয়ে গেলে ঐ যৌণ উন্মাদ গুলো ফিরে তাকাবে না, কারন ওদের চাই অক্ষত যোনি।
আর সতীদাহের কথা বলছেন?????? ৭১২ সালে রাজা দাহিরের রানী ‘রানী বাই’ এর সময় থেকে এখনো ‘লাভ জেহাদের’ শিকার হিন্দু মেয়ে গুলো অগুনে পুড়ে মরছে। রাজা দাহিরের দুর্গের ৬০০০ মহিলা আগুনে ঝাপ দিয়ে ছিলো। চিতোর দুর্গের ৩০০০০ হাজার মহিলা বিষ খেয়ে জলের কুপে ঝাপ দিয়ে মরেছিলো।(চিতোড় গড়ে সেই কুপ এখনো আছে)। হিন্দু মহিলাদের আগুনে আত্মাহুতি দেওয়া এবং “জহর ব্রতে” মরার মিছিল ১০০০ বছর ধরে চলেছে। “সতীদাহ প্রথা” সেই হিন্দু মহিলাদের মৃত্যুর মিছিলের এক ক্ষুদ্র সংষ্করন। তা সেতো বন্ধই হয়েছে বেশ কিছু বছর হয়ে গেলো। এখনো তাই নিয়ে হিন্দু দের গাল পাড়া কেনো?????????
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................