“আসসালামু আলাইকুম, ভাই আমি আপনার একজন দ্বিনী ভাই হিসেবে আপনাকে আবার ইসলামে ফিরে আসার দাওয়াত জানাই। আমার বিশ্বাস মহা পবিত্র আল কুরআন ভলো করে পড়লে আপনার ভুল ধারনা ভেঙ্গে যাবে। আপনি জানেন কি, পবিত্র কুরআনের মত একটি আয়াত লেখার চেষ্টা করেছিলো বিশ্বের বড় বড় বিজ্ঞানীরা, নাসার বিজ্ঞানীরাও বহু চেষ্টা করে কুরআনের মত একটি আয়াত লিখে আনতে পারেনি। আপনিও পারবেন না। তাই আপনার হেদায়েত কামনা করে আপনাকে ইসলামের ছায়াতলে ফিরে আসার আহ্বান জানাই। জাজাকাল্লাহ খয়রান…”
নাসার বিজ্ঞানীরা যে কুরআনের আয়াত লেখার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে এরকম দৃঢ় বিশ্বাস দেশের বড় সংখ্যক শিক্ষিত মুসলমানই বিশ্বাস করে। আমি জানি যিনি বা যারা আমাকে এরকম হেদায়েতি ম্যাসেজ পাঠান তারা নিজেরাই কুরআন ভালো করে পড়েনি। নইলে জানত, কুরআনের মত করে সুরা শয়তনই লিখে এনেছিলো! এতটাই নিখুঁত যে আল্লার কম্পিউটার দুইদিন ধরে টেপাটেপি করেও ধরতে পারেনি! জিব্রাইল সেশনজট পাকিয়ে ছিলো কিনা, কিংবা আল্লা আয়াত লিখে নিজেই ভুলে গিয়েছিলো কিনা সেটা ধরতে আল্লার সময় লেগেছি্লো দুইদিন। এ দুই দিনের মধ্যে মুহাম্মদ শয়তানের আয়াত তার সঙ্গীদের মুখস্ত করিয়ে ফেলেছিলো। এমনকি সেই আয়াত পাঠ করে কাবার সামনে সেজদা পর্যন্ত দেয়া হয়েছিলো!
অথচ আল্লাহ বড়াই করে বলেছিলো মানুষ জ্বিন ও শয়তানকে সাহায্যকারী হিসেবে নিয়েও তার লেখা আয়াতের মত কিছু লিখে আনতে পারবে না। সুরা বনি ইসরাইলিতে আল্লা বলেন, ‘যদি মানুষ ও জিন এ কুরআনের অনুরূপ হাযির করার জন্য একত্রিত হয়, তবুও তারা এর অনুরূপ হাযির করতে পারবে না যদিও তারা একে অপরের সাহায্যকারী হয়’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত-৮৮)।
কিন্তু মুহাম্মদই তার একটা আয়াত ডিলিট করার জন্য বলল, এই আয়াত শয়তান জিব্রাইলের ছুল ধরে এসে আমাকে দিয়ে গেছে। আমি ধরতে পারিনি। দুইদিন পর জিব্রাইল এসে আমাকে জানায় একটা আকাম হযে গেছে যেটা আমি বা আল্লা কেউই ধরতে পারেনি! কি সেটা? সুরা ওয়ান-নাজম সুরার এই আয়াতটা- “তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও উযযা সম্পর্কে? এবং তৃতীয় আরেক (দেবী) মানাত সম্পর্কে? তাঁরা হলেন উচ্চপর্যায়ের গারানিক (এক প্রজাতির পাখি); তাঁদের কাছে সাহায্য চাওয়া যায়”
সহি বুখারীর দ্বিতীয় খন্ডের ১৯ অধ্যায়ের ১৭৭ নম্বর হাদিস থেকে জানা যায় মুহাম্মদ কুরাইশদের তিন প্রধান দেবী সম্পর্কে আবৃত্তি করেন এই তিন দেবীর কাছে মানুষ সাহায্য চাইতে পারে। কুরআনের সুরা ওয়ান-নাজমে এই আয়াতটুকু পাঠ করে কাবার সামনে সিজদা করেছিল মুহাম্মদ। পৌত্তলিকরা তাদের দেবীদের স্বীকার করায় খুশি হয়ে তারাও মুহাম্মদের সঙ্গে সিজদায় শরিক হয়।
কিন্তু দুদিন পরই মুহাম্মদ ১৮০ ডিগ্রী পল্টি খেয়ে বলেন এই আয়াত আমি বাতিল করছি কারণ এটা শয়তান কুরআনের আয়াতের মত করে এনে পরিবেশন করেছিলো যা আমি বুঝতে পারিনি। তারপর তিনি আয়াত ডিলিট করে নতুন আয়াতে লেখেন, “তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও ওজ্জা সম্পর্কে? পূত্র সন্তান কি তোমাদের জন্য আর কন্যা সন্তান আল্লাহর জন্য? এমতাবস্থায় এটা তো হবে খুবই অসংগত বন্টন । এগুলো কতকগুলো নাম বৈ তো নয় যা তোমরা ও তোমাদের পূর্ব পুরুষরা রেখেছ (৫৩:১৯-২১)।
অতএব প্রমাণিত হয়েছে কুরআনের মত সুরা লেখা সম্ভব এবং সেটা শয়তান করিয়ে দেখেয়েছে। অন্তত মুহাম্মদের দাবী অনুযায়ী সেটাই প্রমাণিত হয়। আল্লার কুরআনে চ্যালেঞ্জ আসলে লজিক্যাল ফ্যালাসি! কি রকম? ধরেন আমি চ্যালেঞ্জ করলাম, শেক্সপিয়রের হেমলেটের মত একটি নাটক লিখে এনে দেখাও। কিংবা মাইকেল মধুসূধনের মেঘনাদবধ কাব্যের মত একটা কাব্য লিখে এনে দেখাও। আমি জানি এটা কারোর পক্ষেই সম্ভব না। কারণ প্রতিটি মানুষই আলাদা। শেক্সপিয়র বা মধুসূদনের চাইতেও ভালো কাব্য কেউ লিখতে পারবে কিন্তু তাদের মত করে নয়। সেই মানদ্বন্ডও তো কোথাও নেই। কাজেই এরকম বোগাস চ্যালেঞ্জ আসলে একটা চাতুরি। কুরআনকে মানুষের লেখা নয় রহস্যময় কোন শক্তির লেখা বলে মানুষদেরকে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা…
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................