হজ, কাবাঘর, হজরে আসওয়াদ, জমজমের কূপ ইসলামে পৌত্তলিকতার এক বিরাট নিদর্শন হয়ে আছে…

আল্লাহো আকবর! ইসলাম সমস্ত শিরক আর কুফরির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দুনিয়াতে এসেছে। কোন মুসলমানের পক্ষেই তাই মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে হিন্দুয়ানী রীতিকে, ভাস্কর্যের নামে কোন মুর্তিকে কিছুকে সহ্য করা সম্ভব না। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে কোন পৌত্তলিকতা সহ্য করা হবে না!

হুজুর বেয়াদপী না নিলে একটা প্রশ্ন জিগাই। মনের মধ্যে বড্ড খচখচ করতাছে… ব্রাহ্ম ধর্মের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কেশবচন্দ্র সেন ঠিক করেছিলেন তিনি পৃথিবীর প্রধান চারটি ধর্মগ্রন্থকে বাংলা অনুবাদ করবেন। সেই মোতাবেক তিনি তার প্রিয় চার শিষ্যকে চারটি ধর্মীয় গ্রন্থ বাংলায় অনুবাদ করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কুরআন অনুবাদের দায়িত্ব পড়েছিল গিরিশচন্দ্র সেনের উপর। এটিই সর্বপ্রথম বাংলায় কুরআন অনুবাদ। বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানদের কুরআন বুঝে পড়ার জন্য আল্লাহ কেন একজন অমুসলিমকে বেছে নিলেন সেটা ভেবে দেখেছেন?
           আরবের তিন দেবী

এ্যাঁ… কি… বাংলা কুরআন… নামাজকালাম পড়তে বাংলা কুরআন কি কাজে লাগে? বাংলা কুরআনে কোন আমল নাই। কে এটা অনুবাদ করছে তাতে আল্লাপাকের কি?

সেটা না হয় তাইলে বাদ দেই। কিন্তু হুজুর, আবদুল মুত্তলিবকে কেন জমজম কূপের সন্ধান করার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল?

কয় কি, তিনি নবীজির শ্রদ্ধেয় দাদাজান! নবীজির বংশ হাশিমি গোত্রের হাতে ছিল কাবার দায়িত্ব।

কাবাঘরকে হাতি দিয়ে গুড়িয়ে দিতে চেয়েছিল রাজা আবরাহা। আবদুল মুত্তালিব কাবার আল্লার মূর্তির সামনে প্রার্থনা করলেন কাবাঘরকে রক্ষা করতে। আবাবিল পাখি দিয়ে কাবাঘরকে রক্ষা করা হলো। তারপর ধরেন, জমজমের পানির মত পানি যেটা মুসলমানরা মহা পবিত্র বলে মনে করে- সেই কূপটা তিনিই পূনঃখনন করে ফের পানি প্রবাহ আনলে…

তাতে তগো সমস্যাটা কি বুঝতাছি না!

এইসব করার কারণে আবদুল মুত্তালিব ইসলামের নবী না হয়েও গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক আবদুল মুত্তালিব বেহেস্তে যাবেন কিনা?

যাইবো না সেটা কে কইছে?

আবদুল মুত্তালিবের পুত্র আবু তালিব কেবলমাত্র ইসলাম ধর্মকে স্বীকার করেনি বলেই মুহাম্মদ তাকে জাহান্নামে ফেলে দিয়েছেন। এই যে দেখেন হাদিস কি বলছে- আল্লাহর নবী আবু তালিবকে বললেন- চাচা, বলূন আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই। তাহলে আমি আল্লাহর কাছে আপনার জন্য সাক্ষ্য দেব। অত:পর আবু তালিব তার শেষ বাক্য উচ্চারন করে মারা গেলেন যা ছিল- আমি আব্দূল মুত্তালিবের ধর্মে বিশ্বাসী এবং আল্লাহর নবীর কথা মেনে নিতে অস্বীকার করলেন। তখন আল্লাহর নবী বললেন -তারপরও আমি আপনার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইব যদি না তিনি নিষেধ করেন। (সহি বুখারী, বই – ২৩, হাদিস নং-৪৪২)।

নীজির বংশ মক্কার ইব্রাহিমি তরিকার অনুসারী একেশ্বরবাদী ছিলেন।

আবদুল মুত্তালিব কাবার সামনে তীর নিক্ষেপ করে ভাগ্য গণনা করতো না হুজুর? লাত, উজ্জা, মান্নাত দেবীরে কাবায় রেখেই তো তাদের চারপাশে সাতবার ঘুরত। সেটাকে আপনি ইব্রাহিমি ধর্ম বলছেন! উপরের হাদিসটি থেকে জানা যাচ্ছে আবু তালিব তার পূর্ব পুরুষের ধর্মকেই পালন করতেন। অর্থ্যাৎ আবদুল মুত্তালিব আলাদা একটা ধর্মে বিশ্বাসী ছিলেন। যেই ধর্মে প্রফেট মুহাম্মদও তার কৈশোর-যৌবন বিশ্বাস করে এসেছিলেন। সেই ধর্ম বিশ্বাস করায় আবু তালিবের জন্য আল্লাহ’র কাছে মুহাম্মদ ‘ক্ষমা’ চাইবেন!

আবদুল মুত্তালিবরে নিয়া তো কিছু বলা হয় নাই।

দাদাজান তো দূরের কথা যে মা তারে দশ মাস পেটে ধরছে তারেই নবীজি দোযগে ফেলে দিচ্ছেন! কেবল মাত্র মুশরিক হওয়ার কারণে তার জন্য নবী দোয়া করতে পারেন নাই আল্লার নির্দেশে। তাই মার জন্য ‘ক্ষমা’ চাইছেন! কিসের ক্ষমা? কি পাপ করেছেন? এই যে হাদিসটা- আবু হোরায়রা থেকে বর্ণিত, আমি নবীকে বলতে শুনেছি- আমি আমার মায়ের জন্য ক্ষমা ভিক্ষার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলাম কিন্তু তিনি তা মঞ্জুর করেন নি। আমি তার কবর জিয়ারত করার অনুমতি চেয়েছিলাম এবং তিনি তা মঞ্জুর করেছেন। সহি মুসলিম, বই-৪, হাদিস-২১২৯।

   ইসলাম পর্ব আরবের প্রধান দেবতা।


এই ব্যাটা নাস্তেক, কি কইতে চাস তুই?

আমি বলতে চাই, এত কিছু রেফারেন্স বলছে আবদুল মুত্তালিব একজন মুশরিক ছিলেন। তার দোযগে যাওয়া ইসলাম অনুযায়ী সময়ের ব্যাপার মাত্র। স্বয়ং নবী তার জন্য সুপারিশ করতে পারবেন না। তাহলে ইসলামের অন্যতম নিদর্শন কাবাঘরকে রক্ষা করার জন্য আবদুল মুত্তালিব নেতৃত্ব দিয়েছিল কেন? জমজম কূপ যার পানি মুসলমানদের জন্য মহাপবিত্র তা কেন আবদুল মুত্তালিবের হাতেই পূনঃখনন হতে যাবে? উত্তর দেন হুজুর… 

ইসলাম নিয়া তগো এত খাউজানি ক্যারে? আর কোন ধর্মরে চোখে দেহস না!

আসলে কাবাঘর ছিল আবদুল মুত্তালিবের ধর্মের ঈশ্বরের ঘর। জমজম কূপের পানি আবদুল মুত্তালিবের ধর্মের অনুসারীরা পবিত্র জ্ঞান করত। বাবু জাহেল, আবু তালিবরা এ্ কূপের পানিকে পবিত্র জ্ঞানে পান করত। হজ করতে এসে পৌত্তলিক তীর্থযাত্রীরা এই কূপের পানি পান করে নিজেকে পবিত্র মনে করত। এইসব ঐতিহ্য আর বিশ্বাসকে ইসলাম হাইজ্যাক করে নেয়াতে পূর্বাপর ইতিহাস আর ইসলামী কাফের বিদ্বেষ মিলে এক বিরাট গোজামিলের সৃষ্টি হয়ে গেছে। এমনিতেই হজ, কাবাঘর, হজরে আসওয়াদ, জমজমের কূপ ইসলামে পৌত্তলিকতার এক বিরাট নিদর্শন হয়ে আছে…

তবে রে নাস্তেক, ইসলাম বিদ্বেষী কাফের… আমার শান্তির ধর্মরে নিয়া আকথা কইতে আইছত…!

হুজুর আপনের শান্তি চাই না… ইসলাম সামলান… আমি গেলাম…!


0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted