নবী অবমাননা

নবী অবমাননা বিরোধী আন্দোলনকারীদের কুয়েত সরকার শুধু দেশে ফেরতই পাঠাবে না, বাকি জীবনের জন্য এদের নিষিদ্ধও করবে তার দেশে। এখন কথা হচ্ছে কুয়েত সরকার তো এইসব জাতগান্ডুদের ফেরত পাঠিয়ে তার দেশকে সাফসুতরা করবে, কিন্তু এই বিরাট পঙ্গপাল নিয়ে আমরা বঙ্গবাসীরা কী করবো!

ভারতে যে পরিমান মানুষ নুপুর শর্মার বক্তব্যের বিরোধিতা করেছে, সেটা কম করে হলেও বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার তিনগুণ। এবং ধর্মভিত্তিক জনসংখ্যার হিসেবে নুপুর শর্মা বিরোধিতাকারীদের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ স্বয়ং হিন্দু ধর্মাবলম্বী। বিজেপি কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিক দল হওয়া সত্বেও নুপুর শর্মার মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। এমনকি নুপুর শর্মার বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত হয়েছে। কিন্তু এতদাসত্বেও নবীপ্রেমের নামে এরা বিদেশের মাটিতে দেশকে উগ্রবাদী মানুষের দেশ প্রমাণ করতে মাঠে নেমেছে, আন্দোলনের নামে রাস্তা-ঘাটে যানজট তৈরি করে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে। 

নুপুর শর্মার বক্তব্যের পর থেকে প্রতিদিন বাংলাদেশের কোথাও না কোথাও আন্দোলন, মিছিল, মানববন্ধন হচ্ছে। গতকাল সারাদিন চট্টগ্রাম শহর একপ্রকার অচলাবস্থা হয়ে গিয়েছিল। অফিসগামী কর্মজীবী, হসপিটালগামী রোগী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী কেউ যথাসময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি। চট্টগ্রামের দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে আন্দোলন করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে তিনজন। একজন মারা গেছে, বাকি দুইজন হসপিটালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। 

এই যে এত আন্দোলন, মানববন্ধন, জ্বালাওপোড়াও। এই যে দিনরাত ভারত বয়কট বয়কট করে মুখে ফেনা তোলা, নুপুর শর্মাকে এত গালাগালি; এসব করে নবীর কী উপকারটা হচ্ছে? কিংবা নুপুর শর্মার কটুক্তিতেই বা নবীর কী ক্ষতি হয়েছিল? কিছুই হয়নি। কিছুই হবেও না। এবং ভারতের কেশাগ্রও ছেঁড়বে না আরব রাষ্ট্রপুঞ্জ। মাঝখান থেকে বাপের ভিটেমাটি বিক্রি করা টাকায় মধ্যপ্রচ্যে গিয়ে এখন শুন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে এইসব গোঁয়ার গোবিন্দদের।

নুপুর শর্মার এটাতো কেবল একটা মন্তব্যের পিঠে মন্তব্য। ভারতে এর আগে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাও ভাইরাল হয়েছিল। মিয়ানমারে লক্ষ লক্ষ মুসলিম নির্যাতন হয়েছে বৌদ্ধবাদী সরকার দ্বারা। মানবাধিকারের ছুতোয় ইরাক, আফগান, লিবিয়াসহ পৃথিবীর বহু অঞ্চলে লক্ষ লক্ষ মুসলমান হত্যা করেছে আমেরিকা। কিন্তু সৌদি বা আরব রাষ্ট্রপুঞ্জের কেউ কখনোই এসব নিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তাহলে এবার কেন?

হিসাবটা ব্যবসায়িক। আরব জাতিসমুহের কেউই এখন আর সেই অর্থে ইসলামে নেই। কিন্তু তারা চায় সারা পৃথিবী ইসলামের ওপর অটুট থাকুক। তাতে করে ইসলাম বিকিয়ে হজ্জের নামে তারা ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন টাকা কামাতে পারবে। যখন এত এত মুসলিম নির্যাতনের ঘটনায়ও ওরা কখনোই প্রতিক্রিয়া দেখায় না, সেখানে নবীকে নিয়ে একটা খুব তুচ্ছ কথায় তাদের এই প্রতিক্রিয়ার কারণ; সমগ্র বিশ্বের মুসলমানের জন্য নবী পথপ্রদর্শক হলেও আরবদের কাছে তিনি কেবলই অর্থ উপার্জনের মাধ্যম। তাই তারা নবী এবং তার ইসলাম দিয়ে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন টাকা কামায় আর মাথামোটা বাঙালি নবীর জন্য আন্দোলন করে নবীর স্বজাতির হাতে হয় চাকরিচ্যুত। এদের জন্য এটাই উপযুক্ত। 

রহমান বর্ণিল।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted