বিমানবালা হলে কি সে ধর্মে অবিশ্বাসী হবে নাকি? ডাক্তার মোক্তার ইঞ্জিনিয়ার তারাও ধার্মিক হয়। রামকৃষ্ণ মিশন থেকে লেখাপড়া করে ইঞ্জিনিয়ার হওয়া একনিষ্ঠ হিন্দু কত দেখেছি। দেখবেন কত আধুনিকা এয়ারহোস্ট মন্দিরে ভোগ নিয়ে যাচ্ছে। এক মিনিট ধরে মাথা দিয়ে রেখেছে মূর্তির সামনে। তেমন করেই বাংলাদেশের এক বিমান ক্রু তার ছেলেকে জঙ্গি দলে জিহাদ করতে পাঠিয়েছে। এতে অবাক হওয়ার কি আছে? এটাই তার ধর্ম। তার ধর্ম বলছে জিহাদ করে ইসলাম কায়েম করো। খিলাফত বানাতে আমি তোমাদের জান ক্রয় করে নিয়েছি জান্নাতের বিনিময়ে- এ কথা কুরআনেই বলা আছে। র্যাবের সংবাদ সম্মেলনে দেখেছি সেই মা বলছে তার বাসার গৃহশিক্ষকই তাকে কুরআন-হাদিসের শিক্ষা দিয়েছিলেন। তারপর তিনি নিজের ছেলেকে জিহাদে পাঠান। পুলিশ গোয়েন্দারা ধরার পর এখন তিনি বলছেন তিনি ব্রেনওয়াশের শিকার। ছেলেকে বলছেন তুমি ভুল পথ থেকে ফিরে আসো...।
ফান্দে পড়ে ওয়াজী হুজুররাও এখন সরকারের কাছে নাকে খত দিয়ে জামিনে মুক্তি চাচ্ছে। এই মা যে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে সেই কথা সে বলছে কালো বোরখায় মাথা-মুখ ঢেকে সহি ইসলামী তরিড়ায়। তাহলে কি করে তিনি বুঝলেন তিনি ব্রেনওয়াশের শিকার হয়েছিলেন? তিনি শিক্ষিত। হাদিসগুলি যে সহি সেটা তিনি বুখারী থেকেই দেখেছেন। কাফেরদের কল্লা কাটতে হবে সেটা তিনি জেনেছিলেন। খিলাফত কায়েম করতে হবে জিহাদ করে এটাও তিনি জেনেছিলেন। কতখানি মান্য করেছিলেন যে নিজের ছেলেকে অজানা উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছিলেন। এখন পুলিশের ভয়ে ভোল পাল্টে ফেলছে।
মুসলমানদের ঘরে ঘরে জঙ্গি উত্পাদন হবে। ধর্মের যে চাষ হচ্ছে তার জন্য খালি শুনবেন ওমুকের ছেলে নিরুদ্দেশ। পরে শুনবেন সে হিযরত করেছে। পুলিশ ধরলে বাপ-মা প্রতিবেশী বলবে সে তো খুব নম্র-ভদ্র ছেলে, তাকে মনে হয় ব্রেনওয়াশ করা হয়েছিলো...। ধরা না পড়লে যদি কোথাও বোমা ফুটায় তখন এরাই বলবে আলহামদুরিল্লাহ...। আফগানিস্থানের কওমীদের কিন্তু এখন কেউ জঙ্গি বলে না। জাফরুল্লাহ চৌধুরীও তাদের নাম দিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা। আসলে কোন বাপমাই সন্তান নিয়ে অনিশ্চয়তা চায় না। যেমন ধরেন আপনি গর্ব ভরে বলেন ‘সাকিবাল হাসান বাংলাদেশের প্রাণ’, কিন্তু নিজে কখনোই নিজের ছেলেকে সাকিব বানাতে ক্রিকেট খেলতে পাঠাবেন না। কারণ কাজটা রিস্ক। লেখাপড়া নষ্ট হবে। ভালো খেলোয়াড় হতে না পারলে সব কূলই শেষ। তেমনি জঙ্গি হয়ে জিহাদ করতে যাওয়া অনেক রিস্ক। গুলি খেয়ে মরতে পারে। জেলে ঢুকতে পারে। সরকারী ঝামেলা নেমে আসতে পারে। অন্যের ছেলে জিহাদ করতে যাক। তাকে নিয়ে মনে মনে গর্ব করব সমর্থন করব...। এটাই ‘সব মুসলমান জঙ্গি না’ থিউরীর ভেতরের আলাপ। কোন মানুষ ইসলাম সম্পর্কে যদি মনে করে তিনি ভুল পথে ছিলেন, তার ব্রেনওয়াশ করা হয়েছিলো তার মানে হবে তিনি ইসলামের প্রতি বিশ্বাস আস্থা উঠিয়ে নিয়েছেন। কিন্তু আমরা দেখতে পাই জঙ্গি হয়ে গ্রেফতার হওয়া জঙ্গিরা পুরোপুরি ইসলামিক থেকেই বলছে সে ব্রেনওয়াশের শিকার। এটা আসলে পাবলিককে হাইকোর্ট দেখানোর মত ঢপ! ইসলাম থাকলে জঙ্গিবাদও থাকবে। কুরআনের সাড়ে চারশো জিহাদের আয়াত কি হাওয়া হয়ে যাবে?
Written by : Md Amin
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................