‘কেরেলা স্টোরি’ সিনেমার কাহিনী ছিলো তিন মেয়ের জঙ্গি হয়ে উঠা নিয়ে। এবার নতুন ‘কেরেলা স্টোরি’ তৈরি হয়েছে সাত মেয়েকে নিয়ে। না, এটা কোন সিনেমা নয়। এটা খবর। কেরেলা মেডিক্যাল কলেজের সাত মুসলিম ছাত্রী অপারেশন থিয়েটারে মাথায় হিজাব পরতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে কারণ এটি তাদের ধর্মীয় নির্দেশ যা অবশ্য পালনীয়!
এই হিজাব-বোরখা কখনো তাদের কাছে ‘মাই চয়েজ’ আবার কখনো ‘ধর্মীয় নির্দেশ’! যখন যে তাস খেললে সুবিধা হয় আর কী! কেরেলা যে রাজ্য হিসেবে বিভক্তির দিকে চলে যাচ্ছে সেটি দিনকে দিন স্পষ্ট হচ্ছে। দীর্ঘকাল কমিউনিস্ট শাসনে থাকা একটি রাজ্য, শিক্ষার হার সর্বোচ্চ একটি রাজ্য কেন জিহাদী গোঁড়া মুসলিম প্রজন্মের উত্থান ঘটল? সেখানে তো যোগী আদিত্যনাথ ছিলো না। ছিলো মাও-লেনিনদের ভাব শিষ্যরা। তাহলে কি এমন ঘটল যে মুসলমানরা ‘অভিমানে’ জিহাদ করতে ব্যস্ত হয়ে গেলো? কারণ কমরেডরাই বলেন মুসলমানদের কাতুকুতু দিয়ে যদি তুমি তাদের বিরক্ত করো তাহলেই তারা চাপাতি নিয়ে দ্বিনইসলাম কায়েম করতে তোমার কল্লা মোবারক ফেলে দিবে... কাজেই তোমার কল্লা ফেলার জন্য তুমিই দায়ী...। তাহলে কেরেলার মত শিক্ষিত একটা রাজ্য থেকে আইএসের যোগদান আর এরকম গোঁড়া ধার্মিক ডাক্তার মেয়ে কি করে জন্ম নিলো?
কেরেলা মেডিক্যাল কেলেজের অধ্যক্ষ জানিয়েছেন তারা বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন বিবেচনা করতে। এটি একটি বাজে উদাহরণ হয়ে থাকবে যদি মুসলিম মেয়েদের মাথায় ধর্মীয় কারণে হিজাব পরতে অনুমতি দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে এইসব মেয়েরা যদি পুরুষ রোগী দেখতে অস্বীকার করে বা পর্দার আড়ালে থেকে চিকিত্সা করার আবদার করে? কিংবা বিধর্মীদের জন্য যেহেতু কল্যান চাওয়া ইসলামে হারাম তাহলে এরকম গোঁড়া মুসলিম কি করে একজন অমুসলিম রোগীর আরোগ্য কামনা করে তার চিকিত্সা করবে? মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন করা উচিত এই সাত ছাত্রীকে, হিজাব তাদের ধর্মীয় নির্দেশনা হলে তারা মাহরাম ছাড়া কেন মেডিক্যালে পড়তে আসছে? ইসলামে কোথায় লেখা আছে মেয়েরা চিকিত্সক হতে পারবে? ইসলামের কোথায় বলা আছে মেয়েরা ডাক্তারের চাকরি করতে পারবে? এতগুলো ইসলাম অবমাননা করে যারা ডাক্তারী পড়তে এসেছে তারা হিজাব পরার ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা নিয়ে এতখানি পাগল হলো কেন?
কারণ প্রদর্শনী! ভারতে ‘মুসলিম লীগের’ চিহৃরেখা এঁকে রাখা। ভারতকে ‘মুসলিম ভারত’ হিসেবে আলাদা রঙে দেখানো। ভারতে ‘মুসলিম জাতি’ নামের একটি রাজনৈতিক পেক্ষাপট তৈরি করা। দেশভাগের পর ভারতে মুসলিম লীগের অস্তিত্ব বিলিন হয়ে যায় কারণ মুসলিম লীগ তাদের ‘মুসলমানদের জন্য নিজস্ব দেশ’ পেয়ে যায়। ফলে ভারতে মুসলিম লীগের দাবী আর থাকে না। কিন্তু মুসলিম লীগ তো কোন দলের নাম নয় আক্ষরিকভাবে। এটি ইসলামের রাজনৈতিক দর্শন। যখনই সংখ্যায় বাড়তে থাকবে তখনই নিজেদের রাজনৈতিকভাবে জানান দিবে। তারপর একদিন ভাগ করার দাবী তুলবে। একদিকে সশস্ত্র হুমকি, অন্যদিকে ‘নিপীড়িতদের নিয়মান্ত্রিক আন্দোলন’ চলবে! ভারতে বামপন্থী, কংগ্রেস ও আঞ্চলিক কথিত সেক্যুলার দলগুলো ভোট এইসব ‘মুসলিম লীগ’ ভোটাররা। ফলে মুসলিম ধর্মীয় গোঁড়ামীকে বারবার ভারতে জয়ী হতে দেখি! এবারো কি সেটাই দেখবো?
©সুষুপ্ত পাঠক
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................