ব্র্যাকের শিক্ষকটাকে আফগানিস্থানের কোন মহামাদ্রাসায় পাঠিয়ে দেয়া হোক।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মুমিন শিক্ষকটির বিদেশের সহপাঠী বা বান্ধবী সাদা চামড়ার শিক্ষিত লিবারাল মানুষগুলি এই রকম একজন প্রাচ্যের মুসলমানের সঙ্গে পরিচিত হয়ে নিশ্চিতভাবেই তারা জেনে ছিল, মুসলমানদের সম্পর্কে আমরা মিডিয়াতে যা জানি তা কতখানি অতিরঞ্জিত! আমরা খালি আফগানিস্থানে মুল্লাদেরকে মেয়েদের পেটাতেই দেখি। এটাকেই মুসলমান হিসেবে জানি। কিন্তু আসিফ সাহেব কত স্বাভাবিকভাবে পশ্চিমা মেয়েদের সঙ্গে মেশেন, মদ নিয়ে কোন সংস্কার নেই... আসলে মিডিয়া মুসলমানদের ভুলভাবে উপস্থাপন করে...।

বিদেশে আসফি স্যার আর দেশে ফিরে আসিফ স্যাররা যে চেহারা বদল করে ফেলেন এটা বুঝতে অমুসলিমদের আরো একশো বছর লাগবে। এই লোক সমকামী বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের কথা পাঠ্য বইতে আছে আন্দাজ করে সেই পাতাগুলি প্রকাশ্যে সভায় ছিঁড়ে ফেলেছে। তার পশ্চিমা বান্ধবীদের এই চেহারা সে দেখায়নি।

মুসলমানদের চেনা আসলে এত সহজ নয়। মদ, শূকর ও বিধর্মী নারীকে ভালোবেসে বিয়ে করা জিন্না হলেন মুসলমানদের নিজেদের দেশ ‘পাকিস্তানের জাতির পিতা’! মুসলমানদের নিজের দেশ জন্ম জিন্নার নেতৃত্বেই হয়েছিল যে এক ওয়াক্ত নামাজ পড়ত না। পশ্চিমা সমাজে যে ছিল সাবলীল। বেনজির ভূট্টোর কথাই ধরেন। মাথা খেকে ঘোমটা সরতো না। মুসলিম নারীর আইকন তিনি। পাকিস্তানের মডারেট ইসলামের আইকন। লন্ডন ও আমেরিকাতে ছাত্র জীবনে বেনজির রীতিমত সেক্স পার্টি দিতেন! গ্রুপ সেক্সে সে অভ্যস্থ ছিল। তাকে নিয়ে লেখা বই ‘ইনডিসেন্ট করেসপেন্ডন্স: সিক্রেট সেক্স লাইফ অফ বেনজির ভূট্রো’-তে বিস্তারিত দেয়া আছে। বেনজিরের বাবা জুলফিকার আলী ভূট্টো আরেক মডারেট মুসলমান। মদের নদীতে যে ভাসত। পাকিস্তানে মদ নিষিদ্ধ করে ইসলামের একজন সেবক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন।

কাজেই মুসলমানকে তার রবীন্দ্র সংগীত প্রীতি দেখে ঠাস করে একটা সার্টিফিকেট দিয়ে দিবে না। মুসলমান গিটার বাজালেও বসে জল খায় কারণ বসে জল খাওয়া সুন্নত। এদিকে তার গিটার বাজানোই যে হারাম! যে মুসলমান মেয়ে নাচে তার কথা শুনলে মনে হবে কোন মুফতি কথা বলছে। বলে নেক আমল সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে...। কিভাবে এদেরকে জাজমেন্ট করবেন?

যে ধর্মের প্রতিটি অনুসারী বিশ্বাস করে সিনেমা দেখলে পরকালে তাদেরকে চোখের জেনার জন্য শাস্তি পেতে হবে- সেটা জেনেও কি মুসলমানরা সিনেমা দেখা ছেড়েছে? ছাড়েনি। সেটা বড় কিছু নয়, বড় হচ্ছে এই বিশ্বাস রাখা যে সিনেমা হচ্ছে পাপ! পশ্চিমে সমকামীদের অধিকারকে সমর্থন করা হয়। সেখানে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে কোন রকম বর্ণবাদী আচড়ণ অপরাধ হিসেবে গোণ্য। সেসব দেশে থাকা লোকজন নারী পুরুষ ব্র্যাকের মুমিন শিক্ষকের সমর্থন ভিডিও ছাড়ছেন তাদের জ্ঞতার্থে জানাতে চাই, ইসলাম মতে কাফের দেশে বসবাস সম্পূর্ণরূপে কুফরি! মুসলমানদের নবী বলছেন, তোমরা কাফের মুশরিকদের সঙ্গে বসবাস করো না। তাদের দেশে থেকো না। হিযরত করে চলে এসো। যারা তা করবে না তারা কবীরা গুনাহ করবে। এমনকি কোন মুসলমান ব্যবসায়ের কাজে যদি কাফের দেশে যায় তাহলে কাজ ব্যতিত বিনা কাজে সে দেশে অবস্থান করা তার জন্য মাকরুহ (হারামের কাছাকাছি)। 

আমি বানিয়ে লিখছি না। আবু দাউদ, জামে আত-তিরমিজি, মা’আলিমুস সুনান লিল খাত্তাবী, ফাতহুল মাজিদ, অমুসলিম দেশে বসবাস- মুফতি তাকী উসমানী... বইগুলো পড়ে সিদ্ধান্ত নিন, ইউরোপ আমেরিকা থাকবেন নাকি হিযরত করে আফগানিস্থান পাকিস্তান সৌদি আরব কোথায় যাবেন?

ব্র্যাকের শিক্ষকটাকে আফগানিস্থানের কোন মহামাদ্রাসায় পাঠিয়ে দেয়া হোক।

©সুষুপ্ত পাঠক

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted