সূর্যগ্রহণ নিয়ে ভারতীয় দর্শনের আশ্চর্য অবনতি

❗সূর্যগ্রহণ নিয়ে ভারতীয় দর্শনের আশ্চর্য অবনতি❗ 

 সাধারনত আমরা দেখি সময়ের সাথে সাথে  ক্রমাগত পর্যবেক্ষণের মাধ্যামে বিজ্ঞান বিষয়ক জ্ঞানের উন্নতি হয়।  কিন্তু, কেন সূর্যগ্রহণ হয়?

 এই প্রশ্নে  ভারতীয় দর্শনের ক্ষেত্রে উল্টো হয়েছে বলতে হবে। 
না, রাহুকেতু নিয়ে প্রচলিত লোককাহিনীর পুনরুক্তি করবো না। কিন্তু একটি না-জানা আশ্চর্যের বিষয় জানাবো।

কিন্তু ভারতীয় দর্শনের উৎস বেদ, নিরুক্ত, জ্যোতিষশাস্ত্রে সূর্যগ্রহন নিয়ে বেশ একটু ভিন্নরকম কথাই বলা আছে।

♦ ঋগবেদ ৫.৪০.৫
যত্ ত্বা সূর্য স্বর্ভানু স্তমসাবিধ্যদাসুরঃ।
অক্ষেত্রবিদ্যথা মুগ্ধো ভুবনান্যদীধয়ুঃ
অর্থাৎ, হে সূর্য যাকে তুমি তােমার নিজ আলাে উপহার
স্বরূপ প্রদান করেছ(চাঁদ), তাঁর দ্বারা যখন তুমি।
আচ্ছাদিত হয়ে যাও, তখন আকস্মিক অন্ধকারে পৃথিবী ভীত হয়ে যায়৷

এখানে কোনো রাহুর উল্লেখ নেই, আছে সূর্য দ্বারা আলোকিত কোনো বস্তুর কথা। হ্যাঁ, এখন এখানে প্রশ্ন উঠবে যে ঐ আলোকিত বস্তু চাঁদ কিনা?  তাহলে তার উত্তর, 

♦  ঋগবেদ ১০.৮৫.৯ নির্দেশ করে যে সূর্য চন্দ্রকে নিজ আলাে উপহার স্বরূপ প্রদান করে।

♦ জ্যোতিষশাস্ত্র গ্রহলাঘব এর চন্দ্রগ্রহণাধিকার এর ৪ নং শ্লোকে বলা হয়েছে, “সূর্য গ্রহণের সময় সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে চাদ প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ায়, যার ফলে সূর্য গ্রহণ তৈরী হয়............ সূর্য ও চন্দ্রের মাঝখানে যখন পৃথিবী প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ায় ঠিক তখনই চন্দ্র গ্রহণ সৃষ্ট হয়.....

♦ বিখ্যাত প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী আর্যভট্ট চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ নিয়ে বলেছেন -

 ছাদয়তি শশী সূর্য শশীনং মহতি চ ভুচ্ছায়া।।
(আর্যভাটিয়া,গোলপাদ,অধ্যায় ৪,শ্লোক ৩৭)
অনুবাদ- চাঁদের ছায়া ঢাকে সূর্যকে আর ধরনীর বিরাট ছায়া ঢেকে দেয় চাঁদকে!

👉 তাহলে দেখতে পাচ্ছি ঐতিহাসিকভাবেই অনেক আগে থেকেই ভারতীয় দর্শনে এটা জানা ছিল যে;  সূর্যগ্রহনের কারন চাঁদ, কোনো রাহুকেতুর মাথা নয়, এবিষয়ে আমরা নিশ্চিত হতে পারছি। 

❓ কিন্তু সবথেকে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো ভারতীয় দর্শন ক্রমোন্নতির ধারা অস্বীকার করে তাদের পূর্বাজিত পর্যবেক্ষণলব্ধ সূর্যগ্রহন সম্পর্কে জ্ঞানটি ছেড়ে রাহুকেতুর কাটা মুন্ডের লোককথা গ্রহন করলো কেন? ❓

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted