এই বঙ্গবীরও এখন প্রতিনিয়ত লাঞ্চনার শিকার হয়।

অথচ এই বঙ্গবীরও এখন প্রতিনিয়ত লাঞ্চনার শিকার হয়😒

কাদেরিয়া বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম যুদ্ধ...............
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ১৯৭৫ সালে কাদের সিদ্দিকির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে । যুদ্ধে নিহত হয় শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা,  আর এই অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন মেজর জেনারেল আ,ল,ম, ফজলুর রহমান ।  


এবার বিস্তারিত ঘটনায় আসা যাক, 
১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কিছু সদস্যের  হাতে বঙ্গবন্ধু নিহত হলে সবাই যখন প্রান ভয়ে নতুন সরকারের বশ্যতা স্বীকার করে নিল, ঠিক তখনই দুঃসাহসিক কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর-উত্তম তাঁর মুক্তিযোদ্ধা সহকর্মীদের নিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার প্রতিবাদে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াইয়ে নামেন। ২২ আগস্ট ছয়জন সঙ্গী নিয়ে জামালপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে ঢোকেন তিনি টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিপুলসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা ভারতে গিয়ে যোগ দেন কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকেও অনেকে যান ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ পর্যন্ত চলমান ওই প্রতিরোধ-সংগ্রামে শাহাদাতবরণ করেন ১০৪ জন বীর যোদ্ধা। 
.
ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা জেলা সীমান্তের বিশাল এলাকাজুড়ে নিজেদের একচ্ছত্র আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় সমর্থ হন প্রতিরোধ যোদ্ধারা। সশস্ত্র আক্রমণের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী পাঁচটি বিডিআর ক্যাম্প ও দুটি থানা দখল করে তা নিজেরাই পরিচালনা করতে থাকেন তারা। সম্মুখযুদ্ধে তারা অবতীর্ণ হন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও। যুদ্ধকালে শুধু দুর্গাপুর-কলমাকান্দা সীমান্তবর্তী জনপদে অন্তত নয়জন প্রতিরোধ যোদ্ধা এবং পাঁচজন বিডিআর-পুলিশ সদস্য নিহত হন। ক্রসফায়ারে মারা যান তিন সাধারণ গ্রামবাসী। পাবনার নিশ্চিন্তপুরে যমুনার দুর্গম চরাঞ্চলে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর প্রথম  যুদ্ধ সংঘটিত হয়। 

১৯৭৫ সালের ১২ অক্টোবর প্রতিরোধ যোদ্ধারা ওই চরে অবস্থান করছেন এমন খবর পেয়ে সেনাসদস্যরা হেলিকপ্টার ও জলপথ ঘিরে ব্যাপক গোলাগুলি শুরু করে। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের পাল্টা প্রতিরোধে বেশ কিছু সেনাসদস্য নিহত হলে হেলিকপ্টার দল পিছু হটে। দুই দিনের এ তাণ্ডবে শহীদ হন প্রতিরোধ যুদ্ধের কমান্ডার বগুড়ার আবদুল খালেক খসরুসহ চারজন। এ সময় মৃতদেহ দাফন করা সম্ভব হয়নি বলে খসরুসহ শহীদ যোদ্ধাদের মৃতদেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয় যমুনার স্রোতে। এভাবে প্রায় ২২ মাস যুদ্ধ চালিয়ে প্রতিরোধ যোদ্ধারা টিকে থাকেন বীরত্বের সঙ্গে। একদিকে আন্তর্জাতিক সাহায্য ও সমর্থনের অভাব, অন্যদিকে জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের নিষ্ক্রিয়তায় প্রতিরোধ যুদ্ধ থেমে যায় অসমাপ্ত অবস্থায়। প্রতিরোধ যুদ্ধ ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে শুরু হয়ে স্থায়ী হয় ১৯৭৭ সালের জুলাই পর্যন্ত। 
.
১৯৭৭ সালে ভারতের নির্বাচনে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস হেরে যায়। ক্ষমতায় আসেন মোরারজি দেশাই। নতুন সরকার জাতীয় মুক্তিবাহিনীকে তাদের দেশের মাটি ব্যবহার করতে দিতে অস্বীকৃতি জানায়। জাতীয় মুক্তিবাহিনীর প্রধান কাদের সিদ্দিকীকে আলোচনার কথা বলে মেঘালয়ের তুরায় নিয়ে গিয়ে নজরবন্দি করা হয়। বাহিনীর অন্য সদস্যদের চান্দুভূই হেডকোয়ার্টারে বিএসএফ সদস্যরা ঘিরে রাখে। একপর্যায়ে সাতাত্তরের মে মাসে প্রতিরোধযোদ্ধাদের বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বাহিনীপ্রধান কাদের সিদ্দিকীসহ নেতৃস্থানীয় কয়েকজন নেতাকে আশ্রয় দেয় ভারত সরকার। আর এর মধ্য দিয়েই সমাপ্তি ঘটে এ লড়াইয়ের । 
.
সুত্র-কাদের সিদ্দিকির সাক্ষাৎকার।

ছবিঃ- মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর কাছে কাদের সিদ্দিকীর অস্ত্র সমর্পণ।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted