সারা পৃথিবীতে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ বেড়ে যাবার কারণ কি?

সারা পৃথিবীতে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা বিদ্বেষ বেড়ে যাবার কারণ কি?

মুসলিমরা তো জ্ঞান বিজ্ঞান শিক্ষায় যোগ্যতায় এগিয়ে নেই। তারা কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলেনি। হিন্দু বৌদ্ধ শিখ জৈনরা অভিবাসী হলেও তাদের নিয়ে কেন ইউরোপ আমেরিকায় কোন ঘৃণা বিদ্বেষ নেই? গুগল এ্যাপেলসহ বিশ্বখ্যাত দশটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের প্রধান এখন ভারতীয়রা হলেও তাদের অবস্থান নিয়ে কোন বিদ্বেষ নেই। তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলছে সাদাদের। মূল সমস্যা তাহলে কোথায়?

সমস্যাটা এখানে। বাংলাদেশী পাকিস্তানী আফগানী মিশরীয় আফ্রিকানসহ বিশ্বের যত মানুষ অভিবাসী হয় তাদের পরিচয় একটাই, তারা মুসলমান! কিন্তু হিন্দু শিখ জৈন বৌদ্ধ ভারতীয় হলে কেবলি তারা ইন্ডিয়ান। একজন জাপানি চাইনিজ সারাবিশ্বে বৌদ্ধ খ্রিস্টান না, তারা কেবলি জাপানি চাইনিজ। তারমানে ধর্মীয় জাতীয়তা কেবলমাত্র মুসলিমরা বহন করে। প্রশ্ন উঠতে পারে এতে ঘৃণা বিদ্বেষ ঘটার কি আছে? তারা যদি মুসলিম পরিচয়ে সন্তুষ্ট থাকতে চায় বাকীদের সমস্যা কি?

সমস্যা হচ্ছে যদি ইংল্যান্ড ৯৫ ভাগ মুসলমানের দেশ হয়ে যায় তাহলে মুসলিমরা ওআইসিতে যোগদান করতে চাইবে। ৫৭টা মুসলিম দেশের সঙ্গে যোগ হবে আরো একটি। আপনি আমি জানি পৃথিবীর কোন মুসলিম দেশেই রোজার দিনে প্রকাশ্যে দিনের বেলা খাওয়া যায় না। এটাকে আপনার কাছে ছোট ঘটনা মনে হলেও কালকে একাদশীর দিনে মাছ মাংস বিক্রি বন্ধ করার ঘোষণা এলেই আপনার চেহারা বদলে যাবে!

পৃথিবীতে খ্রিস্টান রিপাবলিক রাষ্ট্র গঠিত হলে সেটা কি প্রকারে পরিচালিত হবে এটা খ্রিস্টান ধর্মে কোন ধারণা নেই।  ইসলামে কিন্তু সেই সমস্যা নেই। তাদের খিলাফত হচ্ছে আল্লাহ নির্ধারিত শাসন ব্যবস্থা। ইসলামে নবী থেকে শুরু করে আবু বকর ওমর ওসমানের মত সাহাবীদের খিলাফতের উদাহরণ আছে যা তুরস্কে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত ইসলামিক হুকুমতের অনুসারে চলছে। তাদের আছে শরীয়া আইন। এগুলো কুরআন হাদিসের দলিলের ভিত্তিতে চলে।  ভারত হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা হলে তারা কোন ভগবানের শাসনে দেশ চালাবে?  তামিলরা রাবনকে ভগবান মানলে তারা কি কথিত রামরাজ্য মেনে নিবে?  পৃথিবীতে খ্রিস্টান উম্মাহ বলতে কিছু নেই। বৌদ্ধ উম্মাহ বলতেও কিছু হয় না। ইসলাম যে একটা রাজনৈতিক মতবাদ এটা আপনার মাথায় না ঢুকলে "মুসলিম বিদ্বেষ" আপনার বোঝার কথা নয়। 

ইসলাম পৃথিবীকে মুসলমান আর অমুসলমানে বিভক্ত করেছে। অমুসলিমরা ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। মুসলমানরা সারা পৃথিবীকে শাসন করবে। ইমাম মাহদী এসে কাফেরদের কাছ থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে ইসলামী শাসন কায়েম করবে। এগুলো একটা মুসলিম বাচ্চারাও জানে।

সারাবিশ্বের মুসলমান মনে করে তারা আরবের ইসলামিক ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী। যে কারণে একজন মিশরীয় শাসক হযরত ওমরের শাসনকে উদাহরণ টানেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে হযরত ওমরের সঙ্গে তুলনা আরব উত্তরাধিকার থেকেই আসে। না হলে তাকে কোন হিন্দু কিংবা বৌদ্ধ শাসককে টেনে আনতে হবে যদি সে স্বজাতির চেতনা থেকে উদাহরণ দিতে চায়। বিষয়টা সহজ নয়। একজন পাকিস্তানী নোবেল পেলে সেটা মুসলমান নোবেল পান। নোবেলের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত কোন খ্রিস্টান বৌদ্ধ ইহুদি পুরস্কার পায়নি। তারা সবাই মার্কিন বৃটিশ ভারতীয় জাপানি চাইনিজ আফ্রিকান...।

জিহাদ চালিয়ে অমুসলিম দেশগুলিতে ইসলাম কায়েমের ঐশ্বরিক নির্দেশ যে ধর্ম তার অনুসারীদের দেয় তাদের ঘৃণা বিদ্বেষের শিকার হতেই হবে। যদি দ্বিমত থাকে তাহলে লাইন বাই লাইন ধরে ভুল প্রমাণ করেন। নোয়াম চমস্কি এডওয়ার্ড সাঈদ অরুন্ধতীর লেখার লিংক শেয়ার করে পিছলাবেন না। ইসলাম ও মুসলমান সম্পর্কে বামপন্থীদের লেখাগুলো একচোখা বকপাখির চোখে দেখে লেখা। আর বাংলাদেশী বামাতীদের লেখাগুলো স্রেফ আবর্জনা! তারা মুসলিম জাতীয়তাবাদ থেকে বের হতে পারেননি। 

আশা করি মুসলমানদের এই বিদ্বেষ ঘৃণার হাত থেকে বাঁচার উপায় আমার লেখা থেকেই পেয়ে গেছেন।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted