তুর্কি তরুণদের ধর্মে এখন আর পেট ভরছে না!

তুরস্কের ৭৬ শতাংশ তরুণ নিজ দেশ ছেড়ে ইউরোপে চলে যাবার জন্য মড়িয়া হয়ে উঠেছে। বিবিসিতে প্রকাশিত এই নিউজে বলা হয়েছে, বিপর্যস্ত অর্থনীতি, নিরাপত্তাহীনতাসহ আরো বেশ কিছু কারণে তুরস্ক এখন আর তরুণদের টানছে না। 

তারা যেতে চাচ্ছে ইউরোপে যেখানকার বেশিরভাগ দেশই সেক্যুলার গণতান্ত্রিক ধর্মহীন রাষ্ট্র কাঠামো গঠন করেছে। অথচ তুরস্কে বছরের পর বছর ক্ষমতায় রয়েছে ইসলামী নবচেতনার সেনানী রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান। 

সারাবিশ্বে মুসলিম জাতীয়তাবাদ ছড়িয়ে দিতে ও আধুনিক রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে ইসলামী খিলাফতের ঐতিহ্য ধরে রেখে যে নব ইসলামী শাসনের ডাক এরদোয়ান দিয়েছিলো সেই তুরস্ক হয়ে উঠল তুর্কিদের জন্য নরক! ইসলামে এখন পেট ভরছে না? এরদোয়ান জনপ্রিয় হয়েছে এইসব তুর্কি তরুণদের কারণেই। 
হাইয়া সোফিয়া গির্জাকে যখন জাদুঘর থেকে ফের মসজিদে রূপান্তরিত করা হলো তখন তুর্কি নোবেল জয়ী লেখক ওরহান পামুক আক্ষেপ করে বলেছিলেন, তুরস্কের ধর্মনিরপেক্ষতার শেষ চিহ্নটুকু ধ্বংস হয়ে গেলো...। 



হাইয়া সোফিয়াকে মসজিদ বানানোর পর প্রথম জুম্মার সামাজে লক্ষ লক্ষ তুর্কি জমায়েত হয়েছিলো তাদের বেশির ভাগই তরুণ। সেই তরুণরা এখন ইউরোপ স্থায়ী হতে চায়। কেন ইসলামে পেট ভরছে না?


মনে রাখা উচিত বেলজিয়ামে এখন যে সংকট, ইসলামিক পার্টির হুংকার বেলজিয়ামকে ইউরোপের প্রথম মুসলিম দেশ বানানোর, পার্লামেন্টে ইসলামিক পার্টি নিষিদ্ধের যে বিতর্ক, মসজিদগুলির উপর নজরদারীর যে আইন, ‘ইসলাম বিদ্বেষ’ বলে যে ভিকটিম দাবী সব কিছুর মূলেই কিন্তু তুর্কিরা। বেলজিয়ামে তুরস্ক থেকে শ্রমিক হয়ে যারা এসেছিলো তাদের বংশধররাই এখন সংখ্যায় বেড়ে বেলজিয়ামকে ইউরোপের প্রথম মুসলিম দেশ ও শাসন করার অঙ্গিকার করেছে। 

কাজেই ইউরোপ তুর্কিদের ভালো চোখে দেখবে তেমন আশা করা যায় না। এরদোয়ান ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি থেকে দৃষ্টি সরাতে সামনে হয়ত আরো বেশি করে ইসলাম বেচবে। তুর্কি টেলিভিশন জুড়ে অটোম্যান খিলাফত যুগের শাসনের বীরত্ব তুলে ধরে ইসলামিক চেতনা জাগ্রত করার কর্মসূচী নিয়েছিলো এরদোয়ান। 

সেখান থেকে পাকিস্তান বাংলাদেশ সেই সিরিয়ালগুলি আমদানী করে ডাবিং করে সম্প্রচার করেছে। তুর্কিরা কিন্তু এখন মুসলিম জাতীয়তাবাদী চেতনা দিয়ে তাদের চিড়ে ভিজাতে পারছে না। তারা এখন সেক্যুলার ইউরোপে যেতে চায়। সেখানে গিয়ে হয়ত ‘সুলতান সুলেমান’ শাসনের স্বপ্ন দেখবে। বাংলাদেশী কিংবা পাকিস্তানীদেরও একই অবস্থা। 

এখানকার অপদার্থ শাসকরা তাদের ব্যর্থতা ঢাকতে ইসলামকে বারবার ব্যবহার করে বোকা বানায়। মতিঝিলে ইসলাম বিরোধী নাস্তিকদের শাস্তি ও শরীয়া শাসনের দাবীতে সাধারণ বাংলাদেশী মুসলমানদের সমর্থন তো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। 

তারপর অনেকদিন কেটে গেছে। সেই জনতারই একটা বড় অংশ কাজের সন্ধানে শ্রমবাজার তৈরি করতে মহাসাগর পারি দিতে গিয়ে সলিল সমাধিতে পরিণত হয়েছে। ইসলাম তাদের নিজ দেশে থাকার জন্য কিছু দিতে পারেনি। আলেম ওলামারাও কোন জীবিকার বাতলে দিতে পারেনি। 


ধর্ম মানুষকে কিছুই দিতে পারে না। ধর্মীয় শাসনও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে না। ইসলামী রীতিতে নারীদের ঘরে বন্দি করে তালেবান তাই বিশ্বের কাছে সাহায্য কামনা করছে। খেয়ে পড়ে বাঁচার জন্য এখন কাফেরদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতেও তাদের আপত্তি নেই!

লেখা: ©সুষুপ্ত পাঠক Susupto Pathok

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted