বেনারসে মসজিদ থাকা সম্প্রীতির বিজ্ঞাপন নয়, এটি মুসলিম শাসনের অমুসলিমদের তীর্থস্থানের প্রতি অবজ্ঞা ও আগ্রাসন ছিলো।

ভয়ানক হয়ে উঠেছে হিন্দুত্ববাদীরা। মক্কা মদিনার মুসলিম তীর্থস্থান অমুসলিমদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা আছে। কুরআন অমুসলিমদের অপবিত্র দাবী করে হারাম শরীফে নিষিদ্ধ করেছে। 

কেউ পর্যটন হিসেবেও মক্কা শরীফ দেখতে যেতে পারে না। এটি ইসলামকে কোন উচ্চ মর্যাদা দেয়নি। বেথেলহাম ভ্রমণ করতে কোন ধর্মের বিধিনিষেধ নেই। ইহুদী খ্রিস্টানদের পবিত্র এই নগরীতে ইসলাম নিজেদের একটা দাবী প্রতিষ্ঠা করেছে। 

কিন্তু মক্কায় কোন অমুসলিম প্রবেশ করতে পারে না। হিন্দুত্ববাদীরা এই ইসলাম থেকে শিক্ষা নিচ্ছে। ভাবছে ইসলাম এসব করে নিজেদের ধর্মকে দিনকে দিন প্রসারিত করছে। তাই মুসলিমদের মত উগ্র হতে হবে এমন একটা ধারণা হিন্দুত্ববাদীরা বিগত বছরগুলিতে পোষণ করে আসছে। 

হিন্দুত্ববাদ


প্রতিনিয়ত যে এরকম অসহিষ্ণুতার কারণে মুসলিম তরুণদের মধ্যে ইসলাম ত্যাগের হিড়িক বেড়েছে সেটি হিন্দুত্ববাদীরা ধর্মের আফিম খেয়ে ভালো মত খেয়াল করেনি হয়ত। বেনারস হিন্দুদের তীর্থস্থান। সেই তীর্থস্থানে ঔরাঙ্গজেব মসজিদ বানিয়ে অন্যায় করেছে। 

এটা হাজার বার বলব। কিন্তু বেনারস থেকে অহিন্দুদের প্রবেশ নিষিদ্ধের মত সিদ্ধান্ত চরম অমানবিক যে কোন দিক বিবেচনায়। এই সিদ্ধান্ত হিন্দুদের কোন সুরক্ষা দিবে না। হিন্দুদের সমস্যা এখনো জাতপাত। এই জাতপাতের নাগপাশ থেকে মুক্তি চায় হিন্দুরা। 

বেনারসের গঙ্গার ঘাটে মুসলিম গেলে হিন্দুর কিছু ছেঁড়া যাবে না। শাহরুখ খান বেনারসে শুটিং করলে সেটা হিন্দুদের তীর্থের উদার্যতা প্রকাশ পায়। হিন্দুরা এগুলো যত বেশি বুঝতে পারবে ফাঁদ থেকে তত বাঁচবে...।

ইসলামিক স্কলার শোয়েব জামোই যিনি ছোটবেলা থেকে বেনারস বসবাস করছেন তিনি বিবিসিকে বলেছেন, এটা সেই কবীরের শহর, এটা সেই শহর যেখানকার ঘাটে উস্তাদ বিসমিল্লা খান সানাই বাজাতেন। আমি কতবার ওখান গঙ্গায় ওজু করে ঘাটে নামাজ পড়েছি, কোনও হিন্দু ভাইয়ের কখনো সমস্যা হয়নি। আসলে ওখানে স্থানীয় হিন্দু-মুসলিমরা যে সম্প্রীতির আবহে বাস করেন কিছু লোক সেটাকে হাইজ্যাক করতে চাইছে"।

শোয়েরকে বিবিসির প্রশ্ন করা উচিত ছিলো মক্কা নগরীতে ভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয় নেই কেন? বেনারসের ঘাটে উনি নামাজ পড়তে পারলে মক্কায় কেন অমুসলিমরা অপবিত্র?  অর্থাৎ সময় এসেছে ইতিহাসের স্বীকৃতির। আমাদের বলতে হবে কাশি বেনারসে মসজিদ থাকা সম্প্রীতির বিজ্ঞাপন নয়। 

এটি মুসলিম শাসনের অমুসলিমদের তীর্থস্থানের প্রতি অবজ্ঞা ও আগ্রাসন ছিলো। আমাদের বলতে হবে কাবায় পর্যটন না থাকাটা অসহিষ্ণুতা। এগুলো না বললে এই একুশ শতকে এসেও আমাদের দেখতে হবে অমুক পবিত্র জায়গায় তমুকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। উগ্ররা বলতে পারবে ওরা আমাদের ওদের পবিত্র স্থানে ঢুকতে দেয় না আমরা কেন দিবো? 

একবিংশ শতাব্দীতে এসে মানুষে মানুষে এতখানি ঘৃণার কথা শুনতে হয় এরচেয়ে দুঃখজনক আর কি আছে?

লেখা: ©সুষুপ্ত পাঠক Susupto Pathok

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted