তালেবান আমেরিকার সৃষ্টি। ইসলাম ও মুসলমানের সঙ্গে তালেবানের কোন সম্পর্ক নাই ...।
৯০ এর দশক থেকে ইসলামপন্থি ও বামপন্থীদের কাছ থেকে এটা শুনতে শুনতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি। এখন আমেরিকা ও তালেবানের মধ্যে চুক্তি সই হওয়ার পর দুই পক্ষই বলছে আমেরিকার পরাজয় হয়েছে মুসলমানদের কাছে!
জঙ্গিবাদের প্রতি এই উচ্ছ্বাস একটি সত্য আমাদের সামনে আনে যে, জঙ্গিবাদ ইসলামী খিলাফাত আন্দোলনের সশস্ত্র একটি উপায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে উদাহরণ দিয়ে বুঝাই। জঙ্গিবাদ যদি ইসলামের অপব্যাখ্যা করে করা হত তাহলে হেফাজত ইসলাম সবার আগে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মাঠে নামত। শফি মোল্লার ভয়েতে দেশে আইন পাশ হতে পারে না। মানুষজনকে খুন খারাবি হুকুম দিয়েও ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকে। এত প্রভাবশালী শফি আর ইসলামিক দলগুলো দেশে জঙ্গিদের এত বাম্পার ফলন হতে দেখেও কিছু বলে না কেন? জঙ্গিবাদ ইসলামে নিষিদ্ধ হলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে তারা সালমান রুশদি মত মাথার দাম হাঁকে না কেন? নাস্তিকদের বিরুদ্ধে এতবড় আন্দোলন হলো তারা নাকি ইসলামের অপব্যাখ্যা করে ইসলামের ক্ষতি করছে। কাদিয়ানীদের বিরুদ্ধে যারা ইসলাম বিকৃতির অভিযোগ আনে, যারা ফাঁপরে পড়লে জঙ্গিবাদকে ইসলাম বিরোধী বলে তারা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মাথার দাম হাঁকে না কেন?
মুহাম্মদের কার্টুন আঁকলে খুন হয় ডেনমার্কের কার্টুনিস্ট। তাহলে মুহাম্মদকে ফলো করার কথা বলে আইএস যোদ্ধারা যখন যৌনদাসী বানায় ইয়াজিদি ও খ্রিস্টান নারীদের কুরআনের রেফারেন্স দিয়ে তখন কেন মুসলমানরা ডেনিশ কার্টুনিস্টের মত তাদের প্রতি ক্ষোভ দেখায় না? রুশদী একটা বই লিখে এখনো হত্যার ফতোয়া মাথায় নিয়ে বেঁচে আছে। তসলিমা নাসরিন কোনদিন তার দেশে ফিরতে পারবেন না কারণ তিনি ইসলামের সমালোচনা করে লিখেছেন। জঙ্গিবাদ যদি ইসলাম বিরোধী হত তাহলে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের প্রধান জসিমউদ্দিন রাহমানও রুশদি তসলিমার মত ফতোয়ার শিকার হত।ইসলামের অপব্যাখ্যা করে যদি জঙ্গিরা কাজ করে থাকে তাহলে ইসলামের সৈনিকরা তো সবার আগে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিত। তারা নাস্তিকদের বিরুদ্ধে কল্লা কাটার ফতোয়া দেয়, ইসলামের শত্রুদের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করে, কেউ কখনো আইএস তালেবান বোকো হারাম নিয়ে একই রকম রিয়েকশন দেখেছে? সর্বশেষ তালেবানদের সঙ্গে আমেরিকার চুক্তিকে যারা মুসলমানদের বিজয় হিসেবে দেখছে তারা জঙ্গিবাদ ও ইসলাম যে অভিন্ন সে সম্পর্ক জেনেই এই বিজয় উদযাপন করছে।
আফগানিস্তানে তালেবানদের সঙ্গে চুক্তিকে আফগান নারীরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছে এর মাধ্যমে আফগানিস্তানে তালেবানদের বৈধতা দেয়া হলো। নারী সাংবাদিক, ব্যবসা, দোকান পরিচালনাকারী নারীদের শংকা তালেবান আবার তাদের ঘরের ভেতর নিয়ে ঢোকাবে। পুরুষের অনুমতি ছাড়া ঘর থেকে বের হতে পারবে না। আফগান নারীরা যদি আবার মধ্যযুগীয় ইসলামিক শাসনে চলে যায় তাতে মুসলমান পুরুষদের কি আসে যায়? বামপন্থীদেরই বা কি আসে যায়?
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................