কে কাকে কপি বা নকল করেছে??
বুঝলে বুঝপাতা না বুঝলে তেজপাতা.।
ইসলাম ও ইহুদি ধর্মের কিছু সাদৃশ্য।
১.
ইহুদি ও মুসলমানরা উভয়ই একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী। তারা মনে করে সৃষ্টিকর্তা এক এবং তাঁর কোন শরীক নেই।
২.
ইহুদি ও মুসলমানদের মতে, তাদের জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আঃ) / আব্রাহাম। সমগ্র মানব জাতির পিতা হযরত আদম (আঃ) / অ্যাডাম।
৩.
ইহুদিরা প্রতিদিন তিন বার (ভোরে, দুপুরে ও রাতে) প্রার্থনা করে(যা প্রায় নামাজের মতো)। ইসলামের দ্বিতীয় বৃহত্তর গোত্র শিয়ারা ইহুদিদের অনুকরণ করে দিনে তিন বার নামাজ পড়েন। এই বিধানটা রাসূলের জামাতা স্বয়ং আলী (রা:) থেকে এসেছে তার মতে রাসূলও নাকি তিন বার নামাজ পড়তেন।
মুসলমান সুন্নিরা তিনের যায়গায় প্রতিদিন পাঁচ বার (ভোরে , দুপুরে , বিকেলে , সন্ধ্যায় ও রাতে) নামাজ আদায় করে।
৪.
এই দুই ধর্মেই প্রার্থনার জন্য কিবলা (দিক) আছে। মুসলমানদের কিবলা মক্কার কাবা ও ইহুদিদের কিবলা (দিক) জেরুজালেমের প্রার্থনা স্থান।
৫.
মুসলমানদের জীবনে একবার হজ্জ্ব করতে হয় মক্কায়। ইহুদিদের বছরে তিনবার তীর্থ যাত্রা করতে হয় জেরুজালেমে।
৬.
মুসলমান ও ইহুদি পুরুষদের খতনা (circumcision) করতে হয়।
৭.
দুই ধর্মেই দাড়ি রাখতে বলা হয়েছে। দাড়ি কাটা দুই ধর্মের দৃষ্টিতে গুনাহ / পাপ।
৮.
সম্পদ দান করা দুই ধর্মেই অবশ্যপালনীয় বিষয়। ইহুদিরা নিজের সম্পদের একটি অংশ চ্যারিটি হিসেবে দেয়। আর মুসলমানরা তাদের সম্পদের একটি অংশ প্রতি বছর যাকাত হিসেবে দেয়।
৯.
ইহুদিরা কোনো ব্যাক্তিকে দেখলে সালোম / শালোম বলে। আর মুসলমানরা কোনো ব্যাক্তিকে দেখলে সালাম দেয়। দুই শব্দের অর্থই - শান্তি।
১০.
দুই ধর্মেই বিশেষ আইন রয়েছে। ইহুদীদের জন্য হালাখা আইন। মুসলমানদের জন্য শরীয়াহ আইন। এই দুই আইনেরই শাস্তির বিধান কঠোর। জেনা (বিয়ে বহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক) করা এই আইন অনুসারে মারাত্মক অপরাধ। জেনা করলে ইহুদীদের হালাখা আইন মোতাবেক পাথর ছুড়ে মারা(মৃত্যুর আগ পর্যন্ত)। আর মুসলমানদের শরীয়াহ আইন মোতাবেক ১০০ বেত্রাঘাত বা পাথর ছুড়ে মারা(মৃত্যুর আগ পর্যন্ত) ।
১১.
ইহুদি ধর্ম মতে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সপ্তাহের পবিত্র সময় ও বিশেষ প্রার্থনার সময়। আর ইসলাম ধর্ম মতে, শুক্রবার সপ্তাহের পবিত্র দিন ও বিশেষ ইবাদতের দিন - জুম্মা।
১২.
দুই ধর্মেই নির্দিষ্ট খাবারের অনুমতি আছে। মুসলমানদের জন্য হালাল খাবার। ইহুদিদের জন্য
কোশার খাবার। দুই ধর্ম মতেই পশুর রক্ত ও শুকরের মাংস কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। একজন মুসলমান ইহুদিদের কোশার খাবার খেতে পারবে। একজন ইহুদী মুসলমানদের হালাল খাবার খেতে পারবে।
১৩.
পশু জবাইয়ের নিয়ম দুই ধর্মেই প্রায় এক ধরনের।
ইহুদিরা প্রতিটি পশু জবাইয়ের আগে একবার প্রভুর নাম স্মরণ করে। আর মুসলমানেরা প্রতিটি পশু জবাইয়ের আগে আল্লাহর নাম স্মরণ করে।
১৪.
মেয়েদের ক্ষেত্রে দুই ধর্মেই মাথায় কাপড় দেয়ার বিধান আছে, তবে ইসলাম ধর্মে মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হলেই মাথায় কাপড় দেয়ার বিধান আছে। আর ইহুদি ধর্মে মেয়ে বিয়ে করলে মাথায় কাপড় বাধার বিধান আছে। নারী ও পুরুষের জন্য শালীন কাপড় পরার বিধান দুই ধর্মে আছে।
১৫.
পুরুষের টুপি পড়ার বিধান দুই ধর্মেই আছে।
১৬.
ইবাদত/প্রার্থনার অংশ হিসেবে সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকার বিধান দুই ধর্মেই আছে। মুসলমানদের রমজান মাসের প্রতিদিন রোযা রাখা ফরজ আর ইহুদিদের বছরে পাঁচটি বিশেষ দিনে পানাহার থেকে বিরত থাকা অবশ্য পালনীয়।
১৭.
সন্তান জন্ম নিলে মুসলমানদের অনেকে বাচ্চার কানের কাছে আযান দেয়া হয়। ইহুদিরা অনেকে বাচ্চার কানের কাছে শিমা দেয়।
১৮.
দুই ধর্মেই সুদ নিষিদ্ধ।
১৯.
ধর্মীয় দিনপঞ্জিকায় মাস নতুন চাঁদ দেখে ঠিক করা হয় দুই ধর্মেই।
২০.
সন্তানের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে রাখার সময় ছাগল বা ভেড়া জবাই দেয়া দুই ধর্মেরই বিধান।
২১.
দুই ধর্ম মতেই জেরুজালেম হচ্ছে পবিত্র নগরী।
ইহুদিদের জন্য জেরুজালেম সবচেয়ে পবিত্র নগরী। আর মুসলিমদের জন্য মক্কা হচ্ছে সবচেয়ে পবিত্র নগরী তারপর মদীনা তারপর জেরুজালেম। আগে মুসলিমদের কিবলা জেরুজালেমে ছিলো। পরে আল্লাহর নির্দেশে মক্কা নগরীর কাবা হয় মুসলিমদের কিবলা।
২২.
কোরআন অনুসারে, অমুসলিমদের মধ্যে একমাত্র ইহুদি-নাছারা জাতির নারীর সাথে মুসলিম পুরুষের বিয়ের অনুমতি আছে। আলেম ওলামাদের মতে এই বিয়ে জায়েজ হবে তবে তা মাকরুহ/পছন্দনীয় কাজ না। এই ধরনের বিয়ে করলে শর্ত হলো সন্তান মুসলিম হতে হবে।
২৩.
ইহুদি পুরুষরা প্রার্থনা করার সময় মাথায় টুপি পরে। ইহুদিদের টুপির সাথে মুসলমানদের টুপির মিল আছে।
24.
ইহুদি বিবাহিত মহিলাদের মাথায় কাপড় দিয়ে চুল ঢেকে রাখা ও লম্বা কাপড় পরা বাধ্যতামূলক। মুসলমান যে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের (বিবাহিত , অবিবাহিত) মাথায় কাপড় দেয়া বাধ্যতামূলক ও শরীর ঢেকে রাখতে লম্বা কাপড় পড়ার বিধান।
25.
উভয় ধর্মেই প্রার্থনার পূর্বে আজান দেয়। তবে মুসলমানদের আজানের সম্পূর্ণ ইহুদিদের আজান কে নকল করা।
26.
উভয় ধর্মেই গনিমতের মাল হালাল ও দাসীদের সেক্স করাকে বৈধ মনে করা হয়।
27.
ইহুদিদের মতো মুসলমানও মনে করে নারীদের কে পুরুষের বাম পাঁজরের হাড় থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে।
28.
ইহুদিদের আইনের সঙ্গে মুসলমানদের আইনের সম্পূর্ণ মিল আছে। যেমন- খুনের বদলে খুন; চোরের সাজা হাত কেটে দেয়া; নারীরা পাবে পুরুষের অর্ধেক সম্পত্তি..........।
29.
ইহুদিদের মতো মুসলমানও পশু কোরবানি দেয়।
30.
ইহুদিরা মুসা(আঃ)/মোশিকে শেষ নবী বলে মনে করে আর মুসলমানরা হযরত মুহাম্মদ(সাঃ)শেষ নবী মনে করে।
30.
ইহুদিরা মুসা(আঃ)/মোশিকে শেষ নবী বলে মনে করে আর মুসলমানরা হযরত মুহাম্মদ(সাঃ)শেষ নবী মনে করে।
31.
ইহুদিদের মতো মুসলমানও বিশ্বাস করে আদম হাওয়া স্বর্গ থেকে নিজেদের পাপের কারনে পৃথিবীতে এসেছে।
32.
উভয় ধর্ম রূহ, জ্বীন ও ফেরেস্তায় বিশ্বাস করে।
33.
উভয় ধর্মে কিয়ামত, হাশর, মিজান ও জান্নাত-জাহান্নামের বর্ণনা প্রায় একই।
34.
উভয় ধর্ম মতে জান্নাতী পুরুষদের কে স্বর্গে হূর দেয়া হবে।
35.
কোরানের ঐতিহাসিক সব ঘঠনাই তোরাহ(ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থ) বাইবেলর ঘঠনার সঙ্গে মিল আছে।
36.
ইসলাম ও ইহুদি ধর্মের বিবাহ রীতি ও মোহরানা প্রথায় একই নিয়ম অনুসরণ করা হয়।
37.
ইহুদি ধর্ম 1200 খ্রিস্টপূর্বে যা আজ থেকে 3200 বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয় আর ইসলাম ধর্ম 610 খ্রিষ্টাব্দে যা আজ থেকে 1400 বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়।
তাই তো বলি মুসলমান ও ইহুদিদের মতো এতো দ্বন্দ্ব কেন.!!
(এখানে আমার ব্যক্তিগত কোন কথা নেই সবটাই বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ করে সাজিয়েছি। বছর দেড়েক আগে এই একবার এই পোস্টটি দিয়েছিলা..তখন পয়েন্ট কম ছিল। তাই নতুন করে আরও কিছু তথ্য যোগ করে দিলাম।)
আপনার জানা মতে কিছু বাদ পড়লে বলতে পারেন এ্যাড করা হবে।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................