ধর্মের পরিচয়ে বেঁচে থাকা জনগোষ্ঠীকে তিলে, তিলে নির্মূল করে দেওয়া হবে, যে দেশের স্বাধীনতা কায়েমে ভারতের একটা বৃহৎ ভূমিকা ছিল?

মাইরের উপর ওষুধ নাই
------------------------------------
নবী অবমাননার দায়ে, ইসলামকে কটূক্তি করার দায়ে সংখ্যালঘুকে মেরে ফেলা, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, সংখ্যালঘু এলাকা জ্বালানো-পোড়ানো এইগুলো যে বাংলাদেশে অনেক বছর আগে থেকেই চলছে এটা আমাদের আর বলার অপেক্ষা রাখেনা, কিন্তু ভাবুন সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্রান্সকে সমর্থন করে পোস্ট দেওয়ায় আজ বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর ঘরবাড়ি জ্বলছে, তাদেরকে চরম নিপীড়িত হতে হচ্ছে।  আপনারা এইগুলো সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট দেখে অবাক হন, আমি কিন্তু হইনা। চিহ্নিত মাদারচোদদের চারণভূমি অধুনা বাংলাদেশে যে মতামত প্রদর্শনের স্বাধীনতা একেবারেই নেই, এটা আজকাল কাউকে বুঝিয়ে বলতে হয়না। না, না এটা হঠাৎ করে উবে যায় নি।  এই প্রক্রিয়া বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েক বছরের মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছিলো। তারপরে এই প্রক্রিয়া, গদিতে আসীন সরকার নির্বিশেষে সুচারু পদ্ধতিতে চলনশীল। প্রিয়া সাহা যখন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে, অধুনা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বাস্তবিক চিত্রটা তুলে ধরেছিল, তখন দেখেছিলাম চুতিয়া মডারেট এবং সেকুলাঙ্গারদের প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেঁটে পরতে।  আমার অবস্থান কিন্তু প্রিয়া সাহার পক্ষেই ছিল, কারণ আমি জানি যে, শাঁক দিয়ে মাছ ঢাকা যায়না ! এবারে আপনাদের কিছু কটূ সত্য কথা বলি। মানলে মানবেন, নয়তো আমাকে চাড্ডি বা অন্য কোনো তকমা সেঁটে দেবেন:

সময় পরিবর্তনশীল।  সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে, দেশে-দেশে বন্ধুত্বেরও তারতম্য ঘটে। ১৯৭১ এ বিশ্বের সার্বিক পরিস্থিতি আর আজকের দুনিয়ার সার্বিক পরিস্থিতি অনেক পাল্টেছে।  ১৯৭১ এ ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতার সমর্থনে এগিয়ে এসেছিলো বলেই আজকের দিনে বন্ধু রাষ্ট্রের ভূমিকা পালন করে যেতে হবে, এটা কে দাসখৎ লিখে দিয়েছে ? ১৯৭১ পরবর্তীতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর সার্বিক পরিস্থিতি উন্নত না অবনত হয়েছে ? ১৯৭২ এর প্রণীত সংবিধানের বাংলাদেশে আজ স্থান কই ? প্রিয়া সাহার দম আছে, তাই আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুর প্রকৃত চিত্রটা তুলে ধরেছে। ভারতের দায়িত্ব এখানে কেবল অধুনা বাংলাদেশের বন্ধু রাষ্ট্রের ভূমিকাতে সীমাবদ্ধ, এটা আমি মানতে নারাজ।  ভারতের বর্তমান সরকার পাকিস্তান, বাংলাদেশের নিপীড়ত সংখ্যালঘুর প্রতি সংবেদনশীল এবং তাই তারা CAA, NRC এনেছে, আমি রাজি। কিন্তু এখানেই ভারতের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ, এটা মানতে আমি রাজি নই, কারণ ভারত একদা অবিভক্ত পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মাথা গলিয়েছিল মানবিকতার স্বার্থে, এটা যদি মেনে নিই তাহলে, আজকে মানবিকতার স্বার্থে ভারতের আবার উচিৎ অধুনা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মাথা গলানো।  এবারে আমাকে প্রশ্ন করবেন, কি বলছেন এটা ? এটা কেন করবে ভারত ? করবে, করা উচিৎ। যদি না করে তাহলে অমানবিক হবে।  একটা গা-লাগোয়া দেশে একটা ধর্মের পরিচয়ে বেঁচে থাকা জনগোষ্ঠীকে তিলে, তিলে নির্মূল করে দেওয়া হবে, যে দেশের স্বাধীনতা কায়েমে ভারতের একটা বৃহৎ ভূমিকা ছিল, সেটা দেখেও ভারত সরকার চুপ থাকবে কেন? ১৯৭১ এ এই দেশের শরণার্থীদের আমরা জায়গা দিই নি? মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র দিই নি ? শেষে ডাইরেক্ট সৈন্য একশন করিনি ? কোন আশায় করেছিলাম ? এইজন্য সে এই স্বাধীন বাংলাদেশে তিলে, তিলে সংখ্যালঘুদের নির্মূল করা হবে ? শুধু CAA, NRC তাই সীমাবদ্ধ থাকলে ভারতের চলবেনা। আন্তর্জাতিক মহলে কূটনীতির মাধ্যমে ভারত যেমন পাকিস্তানকে একঘরে করে দিয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিক মহলে প্রিয়া সাহার মত ভারতকে বাংলাদেশের ভোলা, রামু, লংগদু, নাসিরনগর, আজকের কুমিল্লা সব সংখ্যালঘু নিপীড়নকে হাইলাইট করে বাংলাদেশকে কোনঠাসা করে দিতে হবে। আন্তর্জাতিক মহলে এইটা করতে থাকলে, একদিন বাংলাদেশও পরবে অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধে।  অবস্থা ঢিলে হতে থাকবে। 

এরপর রাষ্ট্র যদি সংখ্যালঘু নিপীড়ন বন্ধে এখনের ভূমিকা পালন করে, তখন ভারতের সামনে একটাই রাস্তা আর সেইটা হলো :
 'মাইর'

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted