করাচী রামকৃষ্ণ মিশনের বেদনাবিধুর ইতিহাস
শ্রী রবীন্দ্রনাথ দত্তের লেখায় করাচি রামকৃষ্ণ মিশন ধ্বংসের কথা জানা যায়। করাচি রামকৃষ্ণ মিশনের সভাপতি তখন রঙ্গনাথানন্দজী মহারাজ। পরবর্তীকালে তিনি রামকৃষ্ণ মিশনের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন।
পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার হওয়ার একদিন আগে থেকেই অর্থাৎ ১৩ই আগষ্ট ১৯৪৭ থেকেই করাচীতে হিন্দু ও শিখদের উপর অত্যাচার আরম্ভ হয়। করাচী রামকৃষ্ণ মিশনের মঠে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে হিন্দু নিধনের সময় করাচী মঠের গ্রন্থাগারের প্রায় ৬০,০০০ দুর্লভ বই পুড়িয়ে দেয় জেহাদীরা। তার মধ্য বিভিন্ন ব্যক্তির সংগ্রহে থাকা সিন্ধু সভ্যতার অনেক নিদর্শন ছিল যা তারা রক্ষাকল্পে মিশনে জমা দিয়েছিলেন।এরপর করাচী মঠ বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া তার সুদ থেকে ভরতুকী দিয়ে মিশন বইপত্রগুলি সস্তাদরে বিক্রি করে।
রঙ্গনাথনন্দজী ছিলেন দক্ষিন ভারতের কেরালা প্রদেশের নাম্বুদ্রী ব্রাহ্মণ পরিবার ভুক্ত। করাচী শহর এবং পাকিস্তানে সব শহরগুলিতে ছিল খাটা পায়খানা, যার মল পরিষ্কার করে হিন্দু মেথররা বাইরে ফেলে দিত। এরা ছিল মাদ্রাজী তথা দক্ষিন ভারতীয়। ঐ সময় হিন্দুহত্যা আরম্ভ হলে ঐ মেথররা টাকা তুলে দুটো জাহাজ ভাড়া করে করাচী থেকে মাদ্রাজ যাবার জন্য প্রস্তুত হয়।
পাক সরকার দেখলো স্বপরিবারে সব মেথর চলে গেলে মল ফেলবে কে? তখন বলপূর্বক জাহাজ দুটো পাক সরকার আটকে রাখে এবং তাদের মাদ্রাজ যাত্রা বন্ধ করে দেয় এবং রটিয়ে দেয়া হয় স্বামী রঙ্গনাথানন্দজীর পরামর্শে এই মেথররা পাকিস্তান ত্যাগ করছে। ফল স্বরূপ মঠ ধ্বংস এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঐসময় করাচী থেকে প্রচুর সিন্ধিরা বিমানযোগে ঢাকা এসে ঘোড়ার গাড়ী ভাড়া করে মিশনে উঠতো, তাছাড়া রাত্রে মঠে মহিলাদের থাকা নিষিদ্ধ বলে, অনেক সিন্ধি পরিবারকে ঢাকার মিশনের ভক্তদের বাড়ীতে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। ২/৩ দিন থাকার পর তারা ট্রেন যোগে ঢাকা থেকে কলকাতা হয়ে ভারতে ঢুকেছে। এদের মধ্যে অধিকাংশ বিগত যৌবনা ও প্রৌঢ়, অর্থাৎ যুবতীরা অপহৃত হয়েছে এবং যুবকরা নিহত হয়েছে।
এই সব ইতিহাস হিন্দুরা কোথাও লিপিবদ্ধ করেনি বরং ইতিহাস বিকৃত করেছে অথবা মিথ্যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নামে ইতিহাস ধ্বংস করেছে।
সর্বধর্ম সমন্বয় হিন্দুদের কোন দিন বাঁচাতে পারে নাই, পারবেও না।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................