মুসলমানরা পঞ্চাশটিরও অধিক রাষ্ট্র চালাচ্ছে, খ্রিস্টানদের একশোটিরও অধিক রাষ্ট্র খুব সুন্দর ভাবে চলছে। যেতে যেতে হিন্দুদের মাত্র দু'টি রাষ্ট্র অবশিষ্ট আছে, সে দু'টি রাষ্ট্রও হিন্দুরা নিজের মতো করে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারছে না। হিন্দু অধ্যুসিত ভারতের মতো একটি সুবিশাল রাষ্ট্রের উপর, একজন ইতালিয়ান এসে ছড়ি ঘুরায় - ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠার নামে হিন্দুজাতির পশ্চাদ্দেশে বংশদণ্ড ঢুকিয়ে দেয়, হিন্দুদের আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগে না।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের যাবতীয় কিছু, চোখের চশমা থেকে হাতের স্মার্ট ফোন, ঘরের রেফ্রিজারেটর-টেলিভিশন, বিজলী বাতি-বৈদ্যুতিক পাখা; পরিবহনের ট্রেন-বাস-বিমান, জীবন রক্ষার বহুবিধ ঔষধ, এমনকি আমাদের পরিধানের বস্ত্র সমূহ তৈরি করার মেশিন সহ, সমস্ত কিছুরই আবিষ্কারক-উদ্ভাবক ইউরোপীয়রা। কেবল তা-ই নয়, প্রশাসন-বিচার বিভাগ-শিক্ষাব্যবস্থা-হাসপাতাল প্রভৃতি পরিচালনার নিয়ম-রীতি, প্রথা-পদ্ধতি ইউরোপীয়দের উদ্ভাবিত। আর আমরা এখনও সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগে রচিত মহাকাব্য সমুহে কি কাহিনী লিখেছে, কোন জীবন-দর্শনের কথা বলেছে- সেই সমস্ত ব্যাকডেটেড আবর্জনার চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে ব্যস্ত।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় যে সুবিশাল সমৃদ্ধ হিন্দু সাম্রাজ্যের বিলুপ্তি ঘটেছে, তার আয়তন সমগ্র ইউরোপের থেকেও বড়। ভারত রাষ্ট্রটিও এত দিনে পঞ্চাশ থেকে একশোটি ক্ষুদ্র-মাঝারি ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে যেত, যদি ব্রিটিশরা না আসতো। ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর, পাকিস্তান থেকে হিন্দুরা প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে; বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা থেকেও হিন্দুরা নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে।
ব্রিটিশ পরবর্তী ভারতের হিন্দু জনসংখ্যা হার ক্রমাগত কমেই চলেছে। দেখতে দেখতে উত্তর-পূর্ব ভারতের পাঁচটি রাজ্য থেকে হিন্দুরা মুছে যাওয়ার পথে। ধর্মনিরপেক্ষতার ডামাডোলে কাশ্মীর ভ্যালি থেকে হিন্দুদের একেবারে নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হয়েছে। পাঞ্জাবে হিন্দুরা সংখ্যালঘু। শীঘ্রই কেরলে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে। পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে হিন্দুরা গভীর সঙ্কটে। মানুষ যেভাবে একটি রুটি ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়, হিন্দুজাতির আবাসভূমি নিয়েও তদ্রুপ ছিনিমিনি খেলছে শত্রুরা, যুগের পর যুগ।
হিন্দুজাতির চিন্তা-চেতনা আটকে আছে সেই প্রাচীন যুগে। আরণ্যক যুগে রচিত কিতাব সমূহে কি লিপিবদ্ধ রয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা-তর্কবিতর্কে হিন্দুদের দম ফেলার সুযোগ নেই। কিভাবে হিন্দুজাতির ক্ষয়রোধ করা যায়, জাতীর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা যায়, সে বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা করার ফুরসত কোথায়! সেকেলে হ্যারিকেন দিয়ে যেরকম এযুগের অন্ধকার দূর করা যাবে না; তেমনি কুসংস্কারাচ্ছন্ন-অন্ধবিশ্বাসী হিন্দুজাতি, 'গো-মূত্র তত্ত্ব' দিয়ে জ্ঞান-বিজ্ঞানের এই চরম উৎকর্ষতার যুগে টিকে থাকতে পারবে না। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে নতুন চিন্তা মাথায় আনতে হবে।
ইসলাম ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা বলতে গেলে বিশ্ব জয় করে ফেলেছে। হিন্দুরা অর্ধেক পৃথিবীর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। এই চরম সত্য হৃদয়াঙ্গম করে, অগণিত সৃষ্টিকর্তা ও তথাকথিত ত্রাণকর্তাদের ক্ষমতা যাচাই করে দেখতে হবে এজন্য যে, কি কারণে তারা ইসলামের তরবারির নিকট নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেছিল।
এমন উপায় উদ্ভাবন করতে হবে, যার দ্বারা হিন্দু সমাজ থেকে লোক চলে যাওয়া বন্ধ করা যায়। পাশাপাশি বাইরে থেকে হিন্দু সমাজে লোক আনার চেষ্টা করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ভূমি বৃদ্ধি ও সমমর্যাদায় জাতীয় ঐক্য - ইসলাম ধর্মের অভাবনীয় সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে একজন মুসলমান যদি আক্রান্ত হয়, পৃথিবীর সমস্ত মুসলমান সেই আঘাতকে নিজের উপর আঘাত মনে করে- প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে, জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে দেয়। নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে, একজন হিন্দুর সর্বনাশ দেখলে,আরেকজন হিন্দু খুশি হয়।
কৃত্তিবাস ওঝা
০২/১১/২০২০খ্রিঃ
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................