ধর্মীয় উগ্রতায় হিন্দুরা প্যাসিভ, মুসলমানরা এক্টিভ!

ধর্মীয় উগ্রতায় হিন্দুরা প্যাসিভ, মুসলমানরা এক্টিভ! কথাটা নিরোদ চৌধুরীর। কথায় সত্য দুইশোত ভাগ। উগ্রতা করে হিন্দুরা মারা খায় আর মুসলমানরা মারা দেয়! সেই কথাই হিন্দুদের বলেছিলাম। শুনল না। এরা আমাকে রেফারেন্স দেখায়! এরা জানেই না হিন্দু পুরানের একেক জায়গায় একেক রকম বয়ান। বাল্মিকি রামায়নে রাম সূর্য পুজা করে। কৃত্তিবাস ওঝার রামায়নে সেটাই হয়ে গেলো দুর্গা পুজা! কেন? রাজশাহীতে শুরু হওয়া এই পুজাকে জাতে উঠাতে এটার দরকার ছিলো। এখন হিন্দুরা কোনটাকে রেফারেন্স মানবে? আদতে দুটোই মিথলজি- ইতিহাস নয়!

পুজার দিনে কেন বেছে বেছে গরুর মাংস খাওয়া প্রসঙ্গ আসবে- এই হচ্ছে লিবারাল হিন্দুদের অভিযোগ। ওয়াও, এটা তো মুসলমানদের থিউরী। রোজার দিন খাবারের দোকান বন্ধ রাখতে হবে নতুবা কালো কাপড়ে ঢেকে চোরের মত সেখানে ঢুকতে হবে! কারণ রোজার সময় দিনের বেলা খাওয়া বারণ ইসলামী শাস্ত্র অনুসারে। সেই শাস্ত্রকে মানতে বাধ্য করা হবে যারা সে শাস্ত্র মানে না বা রোজা রাখেনি তাদেরকেও। এটাকেই যদি আদর্শ মনে করে বা ধর্মকে টিকিয়ে রাখার ফর্মূলা মনে করে হিন্দুরাও তাহলে সামনে একাদশির দিন তো এরা মাংসের রেসিপি ফেইসবুকে দেখলে মুমিনদের মত হামলে পড়বে! কোথায় যাচ্ছে সমাজ? হিন্দুরা যত উগ্রতা দেখাবে ততই ধরা খাবে কারণ ধর্মগতভাবে তারা প্যাসিভ! কারণ হিন্দু ধর্মান্তর বিশ্বাস করে না। হিন্দু বরং নানা অজুহাতে হিন্দুকে ধর্মত্যাগের রাস্তা দেখিয়ে দেয়। তার উগ্রতা তাই তাকেই মারা খাওয়ায়। ছোট্ট একটা ইতিহাসের তথ্য দেই দেখুন-

হিন্দু ধর্মে জাতিচ্যুতি কী মহামারির আকার নিয়েছিল খুলনার খান জাহান আলীর শাসন আমল খানিকটা দেখা যায়। খান জাহান আলী ছল-চাতুরী করে ব্রাহ্মণ কর্মচারীকে গরুর মাংসের ঘ্রাণ শুখিয়ে জাত মেরে তাকে হিন্দু সমাজ থেকে পতিত করে। হিন্দু সমাজে গরুর মাংসের ঘ্রাণ গ্রহণ করার খবর রটে গেলে ভুক্তভোগীকে একঘরে করা হয়। অবস্থা এতটাই খারাপ করা হয় যে অত্যাতা তাকে ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান না হলে বাঁচাই দায় হয়ে পড়ে। হিন্দুরা সেই ব্যাটাকে মুসলমান করার পরই যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচে! এই ধর্মান্তরিত ব্রাহ্মণকে ইতিহাসে ‘পিরালী ব্রাহ্মণ’ বলা হয়। খান জাহান আলী তার নব দীক্ষিত শিষ্য গোবিন্দুলালকে নতুন নাম দেন ‘তাহের আলী’ যাকে আদর করে ‘পীর আলী’ বলে ডাকতেন যা পরে লোকমুখে ‘পিরালী’ হয়ে পড়ে। বর্বর ব্রাহ্মণ সমাজ এইসব ধর্মান্তরিত ব্রাহ্মণদের আত্মীয়স্বজনকেও একঘরে করে তাদেরকে ‘পিরালী বামুন’ নাম দিয়ে সমাজচ্যুত করে। কোলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার, সিঙ্গিয়ার মুস্তফী পরিবার, দক্ষিণ ডিহির রায়চৌধুরী পরিবার, খুলনার পিঠাভোগের ঠাকুর পরিবার ব্রাহ্মণদের দেওয়া অভিশপ্ত ‘পিরালী বামুন’ হিসেবে সমাজচ্যুত হয়েছিল। এসব পরিবারের পুত্রকন্যাদের বিয়ে দেওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছিল। হিন্দুরা এসবের জন্য মোটেই অনুতপ্ত ছিল না কারণ তাদের কাছে শাস্ত্রের বিধি অলঙ্ঘনীয়। খেয়াল করুন, হিন্দুদের এই ধর্মীয় উগ্রতায় মারা খেলো কে?

মুসলমানদের উগ্রতায় যে তারা মারা দেয় তার প্রমাণ গণিমতের মাল লুট! মুসলমানরা মুশরিক কাফেরদের ধন সম্পদ লুট করলে তার জন্য কখনো তাদের আল্লার কাছে জবাবদেহী করতে হবে না। ৭১-এ সাঈদী নিযামীদের হিন্দু সম্পত্তি লুট ছিলো গণিমতের মাল লুট করা। এ জন্যই তারা এসবের জন্য জীবনেও অনুশোচনা করেনি। মুসলমানের জিহাদ হচ্ছে তার ধর্মের চুড়ান্ত উগ্রতার বিন্দু। এটা করে সে কাফের নারীদের ভাগে পাবে। জিজিয়া কর পাবে। ধর্মান্তরিত করে নিজের দল ভারী করতে পারবে। এ কারণেই সে উগ্রতায় প্যাসিভ।

ধর্মের সমালোচনায় আমিও প্যাসিভ। মানে মারা দিবো! যে যখন ব্যথা পাবে তখন আমি শাস্ত্র বুঝি না, আমি মিথ্যা বলি, আমি ভুল বলি, আমি দালাল, আমি অসৎ…। আর যখন প্রতিপক্ষের জ্বলে তখন দাঁত বের করে এসে বলবেন ঠিক লিখেছেন, দারুণ লিখেছেন…। উগ্রতায় হিন্দুর যেমন ক্ষতি তেমনি উগ্রতায় মুসলমানেরও বিপদ। আজকের পৃথিবীতে মুসলমানরা কখনোই কোনদিনই সপ্তম শতাব্দীর খিলাফত আনতে পারবে না। এই বৈজ্ঞানিক বাস্তবতা যারা মানতে চায় না তারা সেই প্রচেষ্টা করে কেবল বিশৃঙ্খলাই বাড়ায়। মাঝখান থেকে মুসলমানদের সন্ত্রাসী, জিহাদী এইসব অভিযোগ আর ঘৃণার মধ্যে বাস করতে হয়। কাজেই নিজের ভাল এই বেলা নিজেই ভেবে রাখুন।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted