গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত চিলির প্রেসিডেন্ট আলেন্দকে হত্যা করে জেনারেল পিনোশে কে বসানো হয় ক্ষমতায়।
১৯৫৩ সালে ইরানে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মোসাদ্দেককে একইভাবে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়!
ইন্দোনেশিয়ার জাতির জনক সুকর্ণকে সরিয়ে সেখানে বসানো হয় সুহার্তোকে!
একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় তৎকালীন পাকিস্তানে। ইস্কান্দার মির্জাকে দিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীকে সরানো হয় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীত্ব থেকে, তারপর আইয়ুব খানকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে ১০ বছর ক্ষমতার মসনদ দখল করে ভারতবর্ষে ছড়ি ঘুরানো!
৭০ এর নির্বাচনে যখন বঙ্গবন্ধুর নের্তৃত্বে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে পাকিস্তান জুড়ে তখনো ক্ষমতা হস্তান্তরের নামে টালবাহানা করে বাংলাদেশে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়!
এ সব ঘটনার পেছনে মাস্টারমাইন্ড ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র!
এভাবে পৃথিবীর দেশে দেশে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে বসাতো নিজেদের পছন্দসই পুতুল সরকার! তারপর বিশ্বকে দেওয়া হত গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের ছবক!
এ মূহুর্তে তারা নিমজ্জিত হয়েছে গভীর সংকটে। নির্বাচনের ফলাফল মানেন না ট্রাম্প। তার সমর্থকদের রাজধানী অভিমুখে মার্চ করার ডাক দিয়েছেন।
সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে পার্লামেন্ট ভবন দখল করেছে ট্রাম্প সমর্থকরা। দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছে অনেক জায়গায়, এখন পর্যন্ত নিহত ৪।
২০ জানুয়ারি ট্রাম্প সমর্থকরা বিকল্প শপথ অনুষ্ঠানের ডাক দিয়েছে। জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মানে না তারা....
যারা ভাবছে ট্রাম্প বিদায় নিচ্ছে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। ০৭ কোটি ৪০ লাখ ভোট পেয়েছে ট্রাম্প। এতো সহজে ছাড় দেবে না ট্রাম্প।
আজ যেভাবে ট্রাম্প সমর্থকরা তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পার্লামেন্ট ভবনে হামলা চালিয়েছে। একইভাবে ট্রাম্প আগামী দিনে এ ধারা অব্যাহত রাখবে।
ট্রাম্পের বিদায় নয়, ট্রাম্পিজমকে বরণ করে নিলো মার্কিনীরা। আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে এ ধারা!
ট্রাম্প আমেরিকাকে যে জায়গায় রেখে যাচ্ছে পূর্বের সে স্ট্যাটাস কো বা স্থিতাবস্থায় ফিরে যেতে হলে জো বাইডেন অথবা ডেমোক্রেটদের আরও ৫ বার টানা ইলেকশান জিততে হবে!
মুচকি হাসছেন ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি সারাবিশ্বকে দেখাইতে চাইছেন আমেরিকার নগ্নরূপ আর আমেরিকান গণতন্ত্রের কদর্যরূপ! পুতিন আজ শতভাগ সফল।
আজ থেকে আমেরিকা আর চাইলে কাউকে গণতন্ত্র মানবাধিকারের ছবক দিতে পারবে না। বাইডেন কোন দেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে গেলে সবাই বলবে, চুপ থাকো!
তোমার দেশের মানুষ তোমারে মানে না! তুমি শপথ নেওয়ার আগে পার্লামেন্টে হামলা করছে তোমার জনগণ, তারপর গুলি কইরা ০৪ জন মানুষ মারছ!
কারফিউ জারি করছ রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি'তে। কারফিউ জারি কইরা সামরিক স্বৈরাচারদের মতো প্রেসিডেন্ট হইছ!
গত শতকের অন্যতম ভূ-রাজনৈতিক বিপর্যয় ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি, আর এ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিপর্যয় মার্কিন নাগরিকদের দ্বারা সে দেশের পার্লামেন্ট ভবনে হামলা!
গত শতকে মানুষ বার্লিন ওয়ালের পতন দেখেছে, এবার দেখলো আমেরিকার জনগণ দেয়াল বেয়ে উপরে উঠে তথাকথিত গণতন্ত্রের কফিনে পেরেক ঠুকে দিচ্ছে!
আজ আর তৃতীয় বিশ্ব, দ্বিতীয় বিশ্ব, ফার্স্ট ওয়ার্ল্ড বলে কিছু নেই। ট্রাম্প আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে এরাই সে আমেরিকান যারা তথাকথিত আমেরিকান ড্রিমের সন্তান।
এরাও পারে পার্লামেন্টে হামলা করতে, এরাও পারে বিক্ষোভের নামে লুটপাট করতে, এরাও পারে ভোট কারচুপি করতে, এরাও পারে দাঙ্গা লাগাতে, এরাও পারে বিক্ষোভকারীদের বুকে গুলি চালাতে!
ট্রাম্প প্রমাণ করে ছাড়লো ট্রাম্পই আগামী দিনে আমেরিকার ডি-ফেক্টো লিডার!
ট্রাম্পের উচিত নিহতদের স্মরণে আমেরিকার পার্লামেন্ট ভবনের সামনে নিহত ০৪ জনের ভাস্কর্য নির্মাণ করা...
সারা বিশ্বকে শোষণ করতে করতে আমেরিকা ভুলে গেছে, তোমার বধিবে যে গোকুলে বাড়িছে সে!
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................