হাঁসভবন: ভবন যখন পণ্যের বিজ্ঞাপন

হাঁসভবন: ভবন যখন পণ্যের বিজ্ঞাপন

দ্য বিগ ডাক যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের লংআইল্যান্ডের ফ্ল্যান্ডারসে অবস্থিত একটি হাঁস আকারের ভবন।  হাঁসচাষী মার্টিন মুরার ১৯৩১ সালে লং আইল্যান্ডের রিভারহেডে শহরের ব্যস্ত প্রধান সড়কের একটি আকর্ষণীয় স্থানে এটি নির্মাণ করেন। তিনি ভবনটি হাঁস ও হাঁসের ডিম বিক্রির দোকান হিসাবে ব্যবহার করতেন। ভবনটির একটি বিশেষত্ব হলো এটি একই সাথে হাঁস ও হাঁসের ডিমের বিজ্ঞাপন হিসাবেও কাজ করতো। ভবনটি স্থাপত্য শিল্পে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। পরবর্তীতে অনেকে এ আইডিয়া দ্বারা অনুপ্রাণিত হন।

১৯৯৭ সালে এটি যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক স্থানের জাতীয় রেজিস্টারে স্থান করে নেয়। এছাড়া এটি ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহাসিক স্থানের জাতীয় রেজিস্টারে স্থান করে নেয়া বিগ ডাক রাঞ্চের (হাঁসের বড় খামার) একটি মূল ভবন। 

বিগ ডাক ভবনটি ১৮ ফুট (৫.৫ মিটার) প্রশস্ত, ৩০ ফুট (৯.১ মিটার) লম্বা এবং মাথার চূড়া পর্যন্ত ২০ ফুট (৬.১ মি) উঁচু। হাঁসের ভেতরের স্থান ১৫ ফুট (৪.৬ মিটার) বাই  ১১ ফুট (৩.৪ মিটার)। একটি খুচরা পোল্ট্রি স্টোর রাখার জন্য কাঠের ফ্রেম, তারের জাল ও কংক্রিট পৃষ্ঠের ভবনটি পেকিন হাঁসের আদলে নকশা করা হয়।

১৯৩৭ সালে মার্টিন মুরার ভবনটি চার মাইল (ছয় কিলোমিটার) দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ফ্ল্যান্ডারসে তার নতুন হাঁসের খামারের কাছে সরিয়ে নেন। ফ্ল্যান্ডারস ও রিভারহেডসহ পুরো অঞ্চলটি ছিল লং আইল্যান্ডের হাঁস-চাষের সুপরিচিত কেন্দ্রস্থল। ১৯৩৯ সাল নাগাদ এখানে ৯০টি হাঁসের খামার গড়ে ওঠে।

বিগ ডাকের ভিন্ন ধাঁচের ভবন ও এর চমৎকার অবস্থান ১৯৮৪ সালে এটি বন্ধ না হয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত বিপুল গ্রাহক আকর্ষণ করতে সহায়তা করে। ১৯৮৮ সালে সাফোক কাউন্টি এটি অধিগ্রহণ করে এবং লং আইল্যান্ডের পূর্ব অংশে ফ্ল্যান্ডার ও হ্যাম্পটন বেসের মধ্যবর্তীস্থানে সিয়ার্স-বেলোস পন্ড কাউন্টি পার্কের প্রান্তে ২৪ নম্বর রুটে স্থানান্তর করে। ভবনে একটি উপহারের দোকান রয়েছে ফ্রেন্ডস ফর লন্ড আইল্যান্ড হেরিটেজ এটি পরিচালনা করে।

২০০৪ সালে হাঁসটিকে লং আইল্যান্ড ম্যাকআর্থার বিমানবন্দরে স্থানান্তর করার আন্দোলন হয়। , তবে ২০০৭ সালের ৬ অক্টোবর হাঁসটিকে তার ফ্লেডাসের্র অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। সাফোক কাউন্টি এর মালিকানা অব্যাহত রেখেছে। তারা এর অভ্যন্তর রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং কর্মীদের বেতন দেয়। সাউদাম্পটন টাউন বহির্ভাগ রক্ষণাবেক্ষণ করে। ২০০৬ সালে সাউদাম্পটন টাউন মূল ২৭ একর হাঁসের খামারটি শহরটি কিনে নেয়। 

গত ত্রিশ বছরের বেশি সময় ধরে ক্রিসমাসের সময় হাঁসটিতে আলোকসজ্জা করা হয়। ক্রিসমাস লাইটের একটি বিশাল মালা ঝোলানো হয় হাঁসটির গলায়। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিবছর এ ক্রিসমাস আলোকসজ্জা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম এ সংবাদ প্রচার করে থাকে।

© হারুন আল নাসিফ

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted