গজনীর সুলতান মাহমুদ : ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামী নারকীয়তার এক ঝলক ----

গজনীর সুলতান মাহমুদ : ভারতীয় উপমহাদেশে ইসলামী নারকীয়তার এক ঝলক
------------------------------------------------------------------------------------------------------
ভারতে ইসলামী আগ্রাসনেই শাসন শুরু ৭১২ সাল আর শেষ ১৯৪৭ সালে। প্রায় ১২০০ বছর।
ইরাকের শাসন কর্তা ‘হেজাজ’ এর ভাইপো ‘মুহাম্মদ বিন কাসিম থেকে শুরু করে আফগানিস্তানের ‘ঘুর’ রাজ্যে থেকে আসা ‘মোহাম্মদ ঘোরী’ কেউ ভারতে বসবাস করেনি,সকলেই ভারতীয় ধন সম্মপত্তি লুট করে স্বস্থানে ভেগেছে । সুলতানী আমল থেকে মোঘল আমলেও তুরষ্কের বিলাসবহুল প্রাসাদে বাস করা খলিফার খেদমতগারী করাই এদের কাজ ছিল । এই পরজীবী লুটেরা খলিফা প্রথা বন্ধ করে দেয় ইংরেজরা । দুঃখে ব্যাথিত গান্ধীবুড়ো মুহাম্মদ আলী নামের দুই ভাইকে নিয়ে নেমে পরে “খিলাফত আন্দোলন” এ । ১৯০ বছরে ব্রিটেন বড়লোক হয়েছে ভারতীয় সম্পদ লুটে, আর ১০০০ বছরে ইরাক,ইরান, বাগদাদ, ব্যাবিলন, সিরিয়া,দামাস্কাস, তুরষ্ক, ইস্তানবুল, কাবুল, গজনী,সমরখন্দ, তাসখন্দ ইত্যাদি শহর কাদের সম্পদ লুটে গড়ে উঠলো ? ভারতের পরাধীনতার ইতিহাস ইংরেজ আমল থেকে হিস্ট্রি বইতে জায়গা পায়,কিন্তু হিস্ট্রি বইতে যে তুর্কি,মোঘলদের গৌরবগাঁথা লেখা সেই শাসনের আমল কি ভারতের পরাধীনতার ইতিহাস নয় ?

গজনীর মাহমুদের প্রাসাদ তৈরী করতে খরচা হয়েছিল ৭০ লাখ সোনার মুদ্রা, যার এক একটার ওজন ছিলো ১২০ গ্রাম। হিসেবে কত টাকা দাঁড়ায় ? এর ১০০ ভাগের এক ভাগও ১৯০ বছরে ব্রিটিশ নিতে পারেনি,কারন এত বাকি ছিলো না ! ঐতিহাসিক কে এস লাল লিখেছেন 'ভারতে ইসলামিক আগ্রাসনের তিন অধ্যায় ( সিন্ধু বিজয়, গজনীর মাহমুদ এবং ঘোরী –পৃথ্বীরাজ)' এবং তার থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে “THe legacy Of Jihad Edited by Andrew G Bostom”.Published by Prometheus Books, New York.Page-440-446 বইয়ের পাতাতে । বলা হচ্ছে:

১) মাহমুদ ‘হিন্দু শাহী রাজ’ রাজা জয়াপাল এবং তার ১৫ জন আত্মীয়, সৈন্যাধক্ষ্য কে আটক রেখে ২৫০,০০০ (আড়াই লক্ষ দিনার ) এর মুক্তিপন আদায় করে।
২) রাজা জয়পালের গলার নেকলেস টির সেই সময়কার দাম ছিলো ২০০,০০০ (দুই লক্ষ দিনার)। সেটি মাহমুদ নিয়ে যায়।
৩) রাজা জয়পালের আত্মীয় স্বজন দের গায়ের গহনা ইত্যাদির মোট মুল্য ৪০০, ০০০ (চার লক্ষ ) দিনার
৪) ‘ভেরা’ শহর, যাকে মাহমুদের সেক্রেটারী ‘উথবী’ উল্লেখ করেছে, ‘ মানুষ যতোটা কল্পনা করতে পারে তেমনি সম্পদশালী’ ছিলো। সেই ভেরা লুট করতে প্রায় ২ বছরে ২ বার মাহমুদকে আসতে হয়। (১০০৪ সালের প্রথম থেকে ১০০৫ সালএর শেষ) সমস্ত ধন দৌলত নিয়ে যেতে কয়েক হাজার ঊঠ নিয়ে আসতে হয় ।
৫) ১০০৫ থেকে ১০০৬ সাল লেগে যায় ‘মুলতান’ লুট করতে । সেখান থেকে যে সম্পত্তি নিয়ে যায় তার মোট মুল্য ২০,০০০,০০০ (কুড়ি লক্ষ) ‘দিরহাম’ (রৌপ্য মুদ্রা)
৬) রাজা জয়পালের এক সেনাপতি যাকে মাহমুদ মুসলমান বানিয়ে নাম দিয়েছিলো ‘নওয়াশা শাহ’, সে রাজা জয়পালের আগুনে আত্মাহুতি দেবার পর পুনরায় হিন্দু হয়। মাহমুদ তাকে পরাজিত এবং আটক করে তাকে শুধু হত্যা করে তাই নয় তার সব সম্পত্তি যার মোট মুল্য ৪,০০,০০০ (চার লক্ষ) দিরহাম (রৌপ্য মুদ্রা)
৭) মাহমুদ “ভীম নগর” দুর্গ দখল করে সেখানকার ‘হিন্দু শাহী মুদ্রা’ র ৭০,০০,০০০ (সত্তর লক্ষ) লুট করে নিয়ে যায়।
8) ‘ভীম নগর’ দুর্গে ছিলো একটি পুজা মন্ডপ। সেটি ছিলো ১৫ গজ (৪৫ ফুট) চওড়া, ৩০ গজ (৯০ ফুট) লম্বা। তার দুটি খুটি ছিলো সোনার,দূটি রুপোর, ওপরের ছাঊনি (গম্বুজ) রুপোর । মন্ডপটি খুলে রাখা যেতো। সেটির নিয়ে যায়। তার মুল্য ‘উথবী’ উল্লেখ করে নি।
৯) ‘বারান’ (বুলন্দসর) থেকে মাহমুদ লুট করে ১০,০০০,০০০ (দশ লক্ষ) রৌপ্য মুদ্রা।
১০) ‘মথুরা’ মন্দির লুট করে ৫ টি সোনার ‘রাধা –কৃষ্ণ’ মুর্তি নিয়ে যায়, যার মোট ওজন ৯৮৩০০ মিসকাল (দশ মন) ।
১১) কনৌজ, মুঞ্জ,আশনি, সার্বা ইত্যাদি লুট করে অপরিমিত ঐশ্বর্য্য নিয়ে যায়।
১২) ‘সোমনাথ’ মন্দির থেকে মাহমুদ নিয়ে যায় এক বিপুল ঐশ্বর্য্য। তার পরিমান শুনলে পরম বিশ্বাসীর ও অবিশ্বাস হবে। কিন্তু ‘উথবী’ র লেখা বিশ্বাস না করে কার কথা বিশ্বাস করবো? সেই লুটের মোট অংক উথবী করেছে ২০,০০০, ০০০ স্বর্ন মুদ্রা বা ‘দিনার’।
১৩) লুটের বহর ৩০ বছরে এতো বিশাল ছিলো যে মাহমুদ, সেই অপর্য্যাপ্ত সম্পদ দেখভাল করা এবং সুষ্ঠ ভাবে গজনীতে নিয়ে যাবার জন্য দু জন হিসাব রক্ষক এবং ব্যাবস্থাপক নিযুক্ত করে। সেই দুজনের নাম ও উথবী বার বার উল্লেখ করেছে। সেই দুই মহাপুরুষ হচ্ছেন ‘আলতুন্টাস’ এবং ‘আশীক্তিন’।
১৪) অর্থনীতিবিদেরা বলেন “ মাহমুদের লুটের পর অর্থের বন্যা ভারত থেকে চলে গেলো সিন্ধুর পশ্চিম পারে। গজনীর এবং আরবী দুনিয়ার মুদ্রা (দিনার এবং দিরহাম) শক্ত পোক্ত হয়ে শুধু স্থীরতা পেলো তাই নয়,হয়ে গেলো বিশেষ দামী। ভারতীয় স্বর্ন মুদ্রার সোনার পরিমান ১২০ গ্রামের জায়গায় নেমে এলো ৬০ গ্রামে আর রৌপ্য মুদ্রার দাম আর প্রায় রইলো না ব্যাবাসার জন্য। সারা দুনিয়ার কাছে ভারতীয় মুদ্রা আর খুব বেশী আকর্ষনীয় রইলো না”।

গনিমতের মাল বলে কথা ! মাহমুদের নবীর আদর্শ অনুযায়ী সবই তো মাহমুদের প্রাপ্য !

রেফ: https://books.google.co.in/books/about/The_Legacy_of_Jihad.html?id=ju8xJ5JBXgsC&redir_esc=y

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted