বাঙালী মুসলমানের ‘নিজস্বতা’ হচ্ছে পরের বাপকে নিজের বাপ মনে করা। আরবী উর্দু শব্দগুলো জোর করে বাংলা ভাষায় চাপিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ কেন্দ্রিক একটা মুসলমান বাংলা ভাষা তৈরির চেষ্টা কোন মাদ্রাসার হুজুর করেননি। উনারা সরাসরি উর্দু আরবী ভাষার অনুরাগী।
এগুলো করেছেন অবিভক্ত ভারত থেকে পূর্ব পাকিস্তান হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত মূল ধারার কবি সাহিত্যিকরা। এদেরেকে আপনি আল মাহমুদের মত জামাতী কবি বলে বাতিল করতে পারবেন না। বাঙালী মুসলমানের সতন্ত্র ভাষা সাহিত্য তুলে ধরতে ঢাকা কেন্দ্রিক যে বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা শুরু হয়েছিলো সেখান থেকেই এর সূচনা। চিন্তা করুন, মীর মোশাররফ হোসেন বিষাদসিন্ধু লিখলেন সেখানে নামাজের জায়গায় প্রার্থনা, রোজার জায়গায় উপোস লিখলেন। সলিমুল্লাহ খান বলছেন মীর মোশাররফ হোসেন নাকি বিষাদ সিন্ধুতে মুসলমানদের নিজস্ব ভাষা প্রয়োগ করতে ভয় পেয়েছিলেন! নজরুল ইসলামের আগে কেউ নামাজ রোজার মত মুসলমানী শব্দগুলো ব্যবহার করতে সাহস করেননি।...
এগুলো করেছেন অবিভক্ত ভারত থেকে পূর্ব পাকিস্তান হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত মূল ধারার কবি সাহিত্যিকরা। এদেরেকে আপনি আল মাহমুদের মত জামাতী কবি বলে বাতিল করতে পারবেন না। বাঙালী মুসলমানের সতন্ত্র ভাষা সাহিত্য তুলে ধরতে ঢাকা কেন্দ্রিক যে বুদ্ধিভিত্তিক চর্চা শুরু হয়েছিলো সেখান থেকেই এর সূচনা। চিন্তা করুন, মীর মোশাররফ হোসেন বিষাদসিন্ধু লিখলেন সেখানে নামাজের জায়গায় প্রার্থনা, রোজার জায়গায় উপোস লিখলেন। সলিমুল্লাহ খান বলছেন মীর মোশাররফ হোসেন নাকি বিষাদ সিন্ধুতে মুসলমানদের নিজস্ব ভাষা প্রয়োগ করতে ভয় পেয়েছিলেন! নজরুল ইসলামের আগে কেউ নামাজ রোজার মত মুসলমানী শব্দগুলো ব্যবহার করতে সাহস করেননি।...
এখানেই বাঙালী মুসলমানের পরের বাপকে নিজের বাপ ডাকাটা পরিস্কার হয়ে যায়। বাঙালী মুসলমানের কিন্তু নিজস্বতা ঐ প্রার্থনা আর উপোষের মধ্যেই। যেমনটা পারস্যবাসী তাদের নিজস্বতা ধরে রেখেছিলো। পার্সিরা মুসলমান হবার পরও আরবী ‘সালাত’ ‘সওম’ শব্দগুলোকে গ্রহণ করেনি। সালাতকে ‘নামাজ’ সওমকে ‘রোজা’ করে নিয়েছে। 'আল্লাহ'কে খোদা করে নিয়েছে। ইসলাম গ্রহণের পূর্ব থেকেই আজকের ইরানীরা এই শব্দগুলো ব্যবহার করত তাদের অগ্নি উপাসনার ধর্ম পালনে। কিন্তু বাঙালী মুসলমান তার নিজস্ব ভাষার শব্দগুলোকে ‘হিন্দুয়ানী’ অভিযোগ করে মুসলমান শব্দ আচার আচরণের নাম দিয়ে অন্য একটি আত্মমর্যাদা সম্পন্ন জাতির পৌত্তলিক যুগের ঐতিহ্যমন্ডিত শব্দগুলোকে গ্রহণ করেছে। সালাফি হুজুররা কিন্তু এখন সচেতনভাবে নামাজকে সালাত বলেন, রোজাকে সওম বলার চর্চা শুরু করছেন। খোদা হাফেজ যেমন ‘আল্লাহ হাফেজ’ হয়ে গেছে তেমনি নামাজ রোজাও জাদুঘরে যাবে। রমজান যেমন হয়ে গেছে সহি আরবী উচ্চারণে ‘রামাদান’! এই হচ্ছে সলিমুল্লাহ খানদের নিজস্বতা! হঠাৎ বাক স্বাধীনতার আন্দোলনে যেভাবে আরবী উর্দু শব্দ জোর করে বসিয়ে একটা চেহারা দেয়ার চেষ্টা হলো এগুলো হচ্ছে যে কোন আন্দোলনে তেলাপোকা ঢুকে যাওয়ার মত ব্যাপার! এদের কাজই হচ্ছে সব কিছু নোংরা করে ফেলা! বাক স্বাধীনতার আন্দোলন এখন হয়ে যাবে মুসলমানী আর হিন্দুয়ানী বাংলার বিতর্ক। লীগের সহমত ভাইরা এরকম কিছুই চাইছিলো! পেয়ে গেছে।
#সুষুপ্ত_পাঠক
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................