ভারতের বুকে “মোঘল শাসনের সুচনা।

ভারতের বুকে “মোঘল শাসনের সুচনা*
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ

দিল্লীর সুলতানী রাজত্ব শেষ হয় বাবুরের হাতে ইব্রাহিম লোদীর পতনে। ১৫২৬ সাল থেকে ভারতের শাসন ক্ষমতা হাত বদল হয়ে গেলো আফগানিস্তান , গজনী ,ঘুর থেকে ফারগানার আর এক বর্বরীয় বংশের হাতে।

বাবুর পিতার দিক দিয়ে তৈমুর লং ( খোড়া তৈমুর) এবং মার দিক দিয়ে চেঙ্গিজ খানের বংশ ধর। দুই স্বনাম ধন্য নরপিশাচের রক্ত বইছিলো এই নতুন ভারত শাসকের। চেঙ্গিজ খান ছিলো মঙ্গোলিয়ার লোক আর তৈমুর উজবেকিস্তানের, সমরখন্দের। এই দুই নরপিশাচের কথা যতো কম লেখা ততো ভাল। শধু এই টুকু মনে করিয়ে দেওয়া উচিত, তৈমুর দিল্লী আক্রমন করে শুধু মাত্র লূট করার জন্য। কিন্তু সেই সঙ্গে আর একটা মহান কর্তব্য স করেছিলো। সেটা হলো ‘শান্তির ধর্মের নামে দিল্লীর প্রায় এক লক্ষ হিন্দুকে হত্যা করেছিলো। আর লুটের মাল নিয়ে সমরখন্দে প্রাচীন এক শিব মন্দির রুপান্তর করে তার বৌ এর নামে বিবি খানুম মসজিদ তৈরী করেছিলো। 

চেঙ্গিজ খান ভারতে আসেনি। কিন্তু তার সময় পৃথিবীর এক পঞ্চমাংশ সে নিজের দখলে আনে। এই কাজ করতে গিয়ে সে তার সমস্ত বিজিত রাজ্যের সেই সময়কার লোক সংখ্যা মোট তিন কোটি সত্তর লক্ষ থেকে কমিয়ে নিয়ে আসে এক কোটি তিরিশ লক্ষে। আরো অনেক গুন তার ছিলো। কিন্তু সেই কথা বলার রুচি নেই। 

তা এই দুই গুনধর বর্বরের রক্ত শিরায় নিয়ে বাবুর শুরু করলো ভারতে মোঘল বংশ। ইতিহাস বলে, বাবুর তার নিজের রাজ্য ফারগানা এবং সমরখন্ড থেকে বিতাড়িত হয় এবং তার রাজ্য অন্যের দখলে যায়। সে তখন এক উপযুক্ত বাসস্থান খূজে পায় ভারতে। সেই পুরানো জেহাদী যুদ্ধ পদ্ধতি অনুসরন করে সে পাঞ্জাব এলাকার ছোট ছোট রাজ্য গুলি দখলে আনে। পরিশেষে দিল্লী দখল করে ইব্রহিম লোধীর থেকে।

বাবুর এর পর ভারতের অন্যান্য অঞ্চল দখল করতে শুরু করে বিশেষ করে রাজস্থান। মেবারের রানা সঙ্গ তার সঙ্গে সংগ্রামে লিপ্ত হন। রানা সঙ্গের পক্ষে যুদ্ধ করেন মালওয়ার রাজা ‘মেদিনী রাও”। এখানেও সেই রাতের অন্ধকারে আক্রমন যার সঙ্গে হিন্দুরা পরিচিত ছিলো না। 

পরাজিত মেদিনী রাও চান্দেরী দুর্গের সব মহিলাদের “জহর ব্রত’ নেবার আদেশ দেন। তারপর অল্প কিছু সৈন্যকে নিয়ে পরস্পর পরস্পরকে ছুরিকা ঘাত করে সবাই আত্ম্যহত্যা করেন। মেদিনী রাওয়ের পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে রানা সঙ্গের সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। বাবুর এতো মহান ছিলো যে, হিন্দু সৈন্যদের মাথার খুলি দিয়ে মিনার তৈরী করে। ( যারা বিশ্বাস করবেন না, তাদের বলি দুট বই পড়তে , বাবুর নামা, যা বাবুরের নিজে লেখা, আর ‘The Legacy of Jehad, Edited by Andrew G Bostom. কোথায় পাবেন জিজ্ঞাষা করবেন না। ইংলিশ টা আমার কাছে আছে আমেরিকা থেকে কিনেছি। অন্যটা অন লাইন পড়েছি। দেখে নিন)।

বাবুর শেষ জীবনে মদ এবং আফিং এর নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। যাই হোক, যারা বাবুরের ভক্ত তাদের জন্য বলি, বাবুর নামা পড়ে দেখবেন, কি লেখা আছে। বাবুর দিল্লীতে তার বংশের রাজত্ব স্থাপন করেছিলো কিন্তু এই দেশটিকে সে কোনোদিন ভালোবাসেনি। তাই তার ইচ্ছা সে লিখেছিলো বাবুর নামায়। কি সেই ইচ্ছা? “আমার মৃত্যুর পর আমাকে যেন কাবুলে কবর দেওয়া হয়”।

*****(আমার মনে হয় শুধু বাবুর কেনো, তার বংশের কেউ এমনকি ‘জেহাদী’ দের সন্তানেরা কোনোদিন ভারত কে তাদের নিজের দেশ বলে মনে করেনি আর করবেও না।) ****

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted