আপনি কি মুসলিমদের মধ্যে কামাল আতার্তুক পাশার কোন জনপ্রিয়তা দেখাতে পারবেন? পারবেন না। কারণ তিনি তুরস্কের ইসলামিক খিলাফতের অবসান ঘটিয়ে সেক্যুলার তুরস্ক নির্মাণ করেছিলেন। তুরস্ক ছিলো আধুনিক মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশ। ঠিক এ কারণেই তিনি সাধারণ মুসলমানদের কাছে ঘৃণিত। অথচ রাজা রামমহন রায়ের মৃত্যুর প্রায় দুইশ বছর পর তার জন্মদিনে ফেইসবুকে আমাদের ভারতীয় বন্ধুদের রামমোহন বন্দনায় মুখরিত হতে দেখেছি। এরা সকলেই হিন্দু ধর্ম ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা লোকজন। হিন্দু ধর্মে হাত দেয়া কীর্তিমান পুরুষদের উপমহাদেশে মনীষী হিসেবে দেখা হলেও মুসলিমদের মধ্যে যারা আধুনিক উদার কথা বলার চেষ্টা করেছেন তারা সকলেই হয়েছেন ঘৃণার পাত্র। বিষয়টা আজো চলমান। ইসলামের নারী বৈষম্যের কথা বলাটা ভারতীয় হিন্দু ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকজনের কাছেই স্পষ্টত “ইসলাম বিদ্বেষ”।
উনারা বলেন, এসব অযথা না তুলে মানুষের কল্যাণের জন্য, তাদের খাদ্য বস্ত্র বাসস্থানের দাবীর কথা বলা উচিত। এই সমস্ত কুতর্ক শাসকদের কুকর্ম থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়। কাজেই ইসলামের সমালোচনা করাটা ঠিক নয়। এতে মুসলমানরা আহত হয়। কারোর ধর্ম নিয়ে অহেতুক প্রশ্ন তোলা ঠিক নয়...।
বাহরে! রামমোহনকে সতীদাহের মত “বর্বর প্রথা” বিলুপ্তকারী বলে উচ্ছ্বসিত লোকটিই বলছে ইসলামের সমালোচনা মুসলমানদের আহত করবে তাতে বিপ্লব বিঘ্নিত হবে! মুসলিম নারীরা সম্পত্তিতে সমান ভাগ পাবে না। স্বামীর একাধিক বিয়েকে অপরাধ হিসেবে দেখা হবে না, নারী তার সন্তানের অভিভাবকত্ব পাবে না, রাষ্ট্রে যে আইনই থাকুক তাকে ১৪০০ বছর আগের ইসলামিক শরীয়া আদলে মুসলিম পার্সোনাল ল দিয়ে শোষিত হতে হবে। এটা চলতেই থাকবে কারণ এগুলো নিয়ে কথা বলাটা চরম “ইসলাম বিদ্বেষ”!
আমার প্রশ্নটা খুবই সরল, বুঝার চেষ্টা করুন, আমরা ব্রাহ্মণ্যবাদের বিরুদ্ধে, ব্রাহ্মণ্যবাদকে ফাসিজম বলছি, বলছি “ফাক হিন্দুনিজম”, মানে সরাসরি একটা ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলছি। তাহলে ইসলামের বিরুদ্ধে বললে সেটাই আপনাদের কাছে “ইসলাম বিদ্বেষী” হবে কেন? কেন “মুসলিমবাদের” বিরুদ্ধে বললে সেটা “মুসলিমফোবিয়া” হবে? প্রশ্নটা আমার ভারতীয় হিন্দু ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা বাম, লিবারাল, সেক্যুলারদের কাছে। আমরা যারা মুসলিম ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে এসে ইসলাম ও মুসলিম মানসিকতার সমালোচনা করি- তাদের সঙ্গে আপনাদের এত দুরত্ব বাড়ছে কেন?
#সুষুপ্তপাঠক
#susuptopathok
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................