কে বলেছে “লাভ জিহাদ” নেই? অবশ্যই আছে। এটি স্বীকার না করলে একটি সত্যকে অস্বীকার করা হবে।

মেয়েটির ঝুলন্ত নিথর দেহের ছবি ফেইসবুকে ভেসে বেড়াচ্ছে। তার সেই ছবি আমি ইচ্ছে করেই পোস্ট করিনি। তার নোটারী করা ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম গ্রহণের জবানবন্দীর ছবি দিলাম। পৃথিবীর একমাত্র সত্য ধর্ম গ্রহণ করার সৌভাগ্য যে মেয়েটির হলো তাকে কেন এরকম নির্মম কদর্য মৃত্যুকে বেছে নিতে হলো? 

পথেঘাটে অনেক লোক দেখবেন ভিক্ষা করে হিন্দু থেকে মুসলমান হয়েছে সাহায্য করুন। হিন্দু থেকে মুসলমান হওয়া যদি সৌভাগ্যের হয় তাহলে তাকে ভিক্ষা করতে হচ্ছে কেন? এগুলো হচ্ছে ধর্মান্তরকে মার্কেটিং করার ভাষা। নোটারীর কথাগুলিও যিনি বা যারা লিখে দিয়েছে সেটেও একটি সুনির্দিষ্ট মুসলিম মিশনারীর বহুল চর্চিত ভাষা। আদিবাসী হিন্দু নিবেদিতা একটি মুসলিম ছেলেকে ভালোবেসে তার সঙ্গে সংসার করতে চেয়েছিলো। এতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ইসলাম। তবে ধর্মান্তিত হয়ে মুসলিম হলে সে বাধা কোন বাধাই নয়। নিবেদিতা মুসলমান হয়েছিলো। তার ধর্মান্তিত হওয়ার নোটারীতে লেখা, সে হিন্দু ধর্ম যে মিথ্যা বুঝতে পেরেছিলো। মুসলমান ছেলেমেয়েদের সঙ্গে মিশে, ইসলাম সম্পর্কে জেনে, হযরত মহাম্মদ সম্পর্কে শুনে সে নিশ্চিত হয়েছে ইসলামই একমাত্র সত্য ধর্ম।...

সেই নিবেদিতার লাশ এখন ঝুলছে! ভালোবাসার মানুষের ধর্ম গ্রহণ করেও সে বাঁচতে পারেনি। এটাকে হিন্দুরা বলে “লাভ জিহাদ”। শুধু হিন্দু না, বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবাই এখন বলছে। চেলসির ফুটবলার হামজার স্ত্রী ব্রিটিশ একজন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়ে যাকে ইসলাম গ্রহণ করে হামজাকে বিয়ে করতে হয়েছে এবং সে এখন কঠরভাবে হিজাব পরে। “লাভ জিহাদ” ভারতীয় বামপন্থী ও সেক্যুলারদের কাছে চরম নিকৃষ্ট হিন্দুত্ববাদী প্রপাগন্ডা। ভূভারতে এরকম কিছুর কোন অস্তিত্ব নেই। সবটাই মুসলমানদের বিরুদ্ধে নিকৃষ্ট অপপ্রচার। হিন্দু ছেলেরাও মুসলমান মেয়েদের বিয়ে করে হিন্দু বানায়। খিস্টান ছেলেরাও মুসলমান মেয়েদের খিস্টান বানায়... ইত্যাদি। আমিও বামপন্থীদের এই প্রচারণায় প্রভাবিত হয়েছি এবং ভুলে গেছি প্রতিটি মুসলিম পরিবারে আমরা ছোটবেলা থেকে এটা শিখতে শিখতে বড় হই যদি একজন কাফের হিন্দুকে মুসলমান বানানো যায় তাহলে সাত পুরুষ পর্যন্ত জান্নাতে চলে যাবে। এই মিশনারি টার্গেটে নিশ্চয় ঐ হিন্দু খিস্টানরা বিয়ে করেনি। তারাও প্রেমিক বা প্রেমিকাকে ধর্ম পরিবর্তন করতে প্ররোচিত করেছে, কিন্তু পারিবারিক মিশনারী ট্রেনিং কি তাদের ছিলো? দ্বিতীয়ত বেশিরভাগ এইরকম কেসে দেখা যায় অমুসলিম থেকে মুসলিম হওয়া মেয়েটির লাশই ঝুলছে! ইসলামের সুমহান বহুবিবাহের জ্বালা সইতে না পেরে গলায় দড়ি দেয়া অমুসলিম নারীদের সংখ্যাটা অনেক। কারণ পিতৃগৃহে ফেরার সব রাস্তা তার জন্য বন্ধ। হিন্দুদের ধর্মান্তর নেই, তবে নিজ ধর্ম থেকে নানা ছুতোয় গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়ার নিয়ম আছে। অগত্যা এইসব মেয়েদের হয় নরকের জীবন মেনে নিতে হবে নয়ত গলায় দড়ি দিতে হবে।...

কিসের ভালোবাসা যদি ভালোবাসার মানুষটির ধর্মটিকে ভালোবাসা গেলো না? কেন ভালোবাসার বিয়ের জন্য ধর্ম পরিবর্তন করতে হবে? যদি দুই ধর্মের মানুষের প্রেম হয় আর তাদের বিয়ে করতে হয় তাহলে অবশ্যই ধর্ম পরিবর্তন না করে স্পেশাল এক্ট অনুযায়ী বিয়ে করতে হবে। এত ধার্মিক হলে আপনি কেন অমুসলিম কিংবা অহিন্দু, অখ্রিস্টান, অবৌদ্ধ, অইহুদীর প্রেমে পড়তে গেলেন? যাকে ভালোবাসবেন তার ধর্ম সংস্কৃতি ভাষা পোশাক জীবনচারণকেও ভালোবাসুন। ‘আমাকে পেতে হলে তোমাকে তোমার ধর্ম পরিবর্তন করতে হবে’ ‘তুমি আমাকে বেশি ভালোবাসো নাকি সিগারেটকে তার প্রমাণ দাও’ এগুলি ইতর টাইপ প্রেম পরীক্ষা। কে বলেছে “লাভ জিহাদ” নেই? অবশ্যই আছে। এটি স্বীকার না করলে একটি সত্যকে অস্বীকার করা হবে। একদম ভেবেচিন্তে ব্যাপক সোয়াবের কথা মাথায় রেখে একটি হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করে মুসলমান বানানো মুসলিমদের পারিবারিক বা কমিউনিটিতে খুবই প্রশংসনীয় কাজ। নিবেদিতার জন্য দু:খ করা ছাড়া আর কিছু করার নেই...।

...এই লেখার জন্য বিজেপির কাছ থেকে মোটা পেমেন্ট পেয়েছি। সেটা দিয়ে এখন চাল ডাল কিনে বাড়ি যাচ্ছি! 

#সুষুপ্তপাঠক
#susuptopathok

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted