বড় বড় বুলিগুলো মিথ্যে প্রমান করে লক্ষ লক্ষ নিরীহ নর, নারী, শিশুর মৃতদেহের উপর দিয়ে দেশ ভাগ হয়ে গেল!

গান্ধী জিন্নাহর ফাঁকা বুলি
--------------------------------------
গান্ধী:”আমার মৃতদেহের উপর দিয়ে দেশভাগ হবে”
জিন্নাহ:’আমি পোকায় কাটা পাকিস্তান চাই না।”

বড় বড় বুলিগুলো মিথ্যে প্রমান করে লক্ষ লক্ষ নিরীহ নর, নারী, শিশুর মৃতদেহের উপর দিয়ে দেশ ভাগ হয়ে গেল! আর জিন্নাহ সাহেবের কপালে জুটলো সেই পোকায় কাটা পাকিস্তান!

দেশভাগের একবছরের মধ্যেই দুজনেই পৃথিবী থেকে টপকালো! হিন্দু শিখ নেতাদের বৃহদাংশ জিন্নার দাবির আদলে দেশভাগের দাবিতে সোচ্চার হয়েছিল,তারা জিন্নার দাবির আদলে প্রদেশ ভাগের পক্ষেও দাড়ালো| লাল মুখো দের সরকার এই দাবি খন্ডন করতে পারল না,জিন্নাহ ও কোনো যুক্তি দেখাতে পারল না|

অতঃএব জিন্নার কপালে পোকায় কাটা পাকিস্তান ই জুটলো!! দ্বিজাতিতত্ত্বের প্রবক্তা জিন্নাহ ও তার অনুসারী মুসলিম লীগ এর টাউট গণ জেল ও খাটলো না, দিপান্তরেও গেল না, গুলি লাঠিও খেল না! স্রেফ হিন্দু নিধনের মাধ্যমে আর ‘ মু মে বিড়ি হাত মে পান. লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান’ এর মাধ্যমে একটি মোটা মুটি বিশাল রাজত্ব পেয়ে গেল!(এখন অবশ্য দুটো!!- ইতিহাসের ব্যঙ্গ!)

    পাকিস্তান পেয়েও মুসলিম লীগ এর টাউট দের রক্ত পিপাসা মিটল না| তারা পাকিস্তানের ভৌগলিক আঙ্গিনায় হিন্দু শিখ দের উপর , তাদের ধন সম্পত্তির উপর এবং বিশেষত তাদের নারীদের উপর ঝাঁপিয়ে পরলো!!–Leonard Mosley- The Last Days Of British Raj।

পুরুষের প্রাণ গেল, নারীর ইজ্জত গেল, বালিকা ধর্ষণের পর স্তন কেটে ফেলা হলো, শিশুকে দেওয়ালের সাথে আছড়ে খুন করা হলো আর গর্ভবতীর পেট চিঁড়ে দেওয়া হলো!

বাঙালি হিন্দুর জীবনে এই স্বাধীনতা এক অভিশাপ হয়ে দাড়ালো! পশ্চিম পাকিস্তানের নিধন যজ্ঞের পর পাকিস্তানি শাসকদের দৃষ্টি পরলো পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দুদের উপর|

‘হাসি হাসি-পরব ফাঁসি, দেখবে জগতবাসী’ — বুমেরাং হয়ে গেল! জেল, জরিমানা, দেশান্তর, গুলি, লাঠি….. ইত্যাদি কান্নায় পরিবর্তিত হয়ে গেল!! ১৯৪৬ সালের ১৬ই অগাস্ট থেকে রক্তপাত শুরু আর টানা চলতেই থাকলো ১৫ ই অগাস্ট ১৯৪৭|

সৃষ্টি হলো আরেক ‘ইহুদি’ সম্প্রদায়: পূর্বপাকিস্তান বা পূর্ববঙ্গের ‘হিন্দু’!!

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদ দের উদ্দেশ্যে গাওয়া হয়:’ আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কি ভুলিতে পারি’| ভাষা আন্দোলনের ঠিক দু বছর আগের ঘটনা, ১০ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৫০ সাল, ঢাকা, বরিশাল মূলত, এছাড়াও সার্বিক পূর্ব পাকিস্তান বা পূর্ব বাংলায় কাটারি, দা, ছুরি, বল্লমের আঘাতে হাজার হাজার হিন্দু ধর্মালম্বী প্রাণ হারালো! না না! আঁতকে উঠবেন না| শান্তিপূর্ণ ইসলামের আদর্শে শান্তিপ্রিয় মুসলমান রা সাময়িক অশান্তির আশ্রয় নিয়েছিল! তাই এই পরিনতি!

কেউ গাইলো না : আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ১০ই ফেব্রুয়ারী’!! ইতিহাসের কি পরিহাস!!

প্রগতিশীল, সহনশীল ও তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ সাহিত্যিক কুল বাঙালি হিন্দুর এই বিপর্যয়ের কথা দারুন চালাকির সাথে এড়িয়ে গেছে, বরং দাঙ্গার দায় মুসলমানের দারিদ্রের উপর বর্তেছে!! ধরে নিলাম বাঙালি মুসলমান দরিদ্র তুলনামূলকভাবে, তাহলে দরিদ্র মুসলমান বাঙালি তার প্রতিবেশী ধনী হিন্দুকে হত্যা করবে, স্ত্রী, মা ও বোনকে ধর্ষণ করবে, গোমাংস বলপূর্বক খাইয়ে ইসলামে ধর্মান্তরিত করবে…. ইত্যাদি, ইত্যাদি! এতে কোনো দোষের কিছুই নেই! এটাই স্বাভাবিক!! তাই তো? এটা বাঙালি মুসলমানের জন্মগত হক!

পূর্ব বঙ্গ বা পূর্ব পাকিস্তানের তথাকথিত সেকুলার ও প্রগতিশীল সাহিত্যিকদের হাত থেকে ‘আপিলা চাপিলা’ বা ‘বাঙালনামা’ বেরিয়েছে, কিন্তু এই ধর্মীয় সহিংসতার বিরুদ্ধে তারা এক কলম ও লেখেনি!!

কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, ভারতীয় উপমহাদেশের রাজনীতি ধর্মীয় বিষের ঘৃণিত পথেই এগিয়েছে……….

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted