অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতিতে দুগ্ধপোষ্য শিশু। দুধেল গাইদের ক্ষেপিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে রাজনীতিতে টিকে থাকা সম্ভব হবে না।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার কথিত ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর মধ্যে ক্ষমতা কেন্দ্রীক ঠাণ্ডা লড়াই শুরু হয়ে গেছে। আমার মনে পড়ে যাচ্ছে, ২০০৩-৪ সালে বাংলাদেশে যখন বিএনপি সরকার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে, তখন খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেক রহমানের মধ‍্যকার সেই নীরব লড়াইয়ের কথা। একদিকে খালেদা জিয়া ও বহুল আলোচিত মোসাদ্দেক হোসেন ফালু, অন্যদিকে তারেক রহমান ও যুব নেতৃবৃন্দ। বিএনপি'র মধ্যে ফালু অতিরিক্ত প্রভাবশালী হয়ে ওঠায়, সিনিয়র নেতারা সেটা মেনে নিতে পারছিলেন না; ফলশ্রুতিতে বিপুল জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও বিএনপি ক্ষমতার বলয় থেকে বহু দূরে ছিটকে গেছে।



পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন 'বন্দ্যোপাধ্যায়' পরিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে ফিরহাদ হাকিমকে ঘিরে। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বেসর্বা হয়ে ওঠা মুখ্যমন্ত্রীর কথিত ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছে ছিল- কলকাতা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হওয়ার। কিন্তু প্রবল পরাক্রান্ত দুধেল গাই লবি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে - মিনি পাকিস্তান-এর প্রবক্তা ফিরহাদ হাকিমকে মেয়র করা না হলে, তৃণমূল কংগ্রেসকে বামফ্রন্টের পরিণতি বরণ করে নিতে হবে।

মিনি পাকিস্তান-এর প্রবক্তা হিসেবে ফিরহাদ হাকিম আজ একজন পরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হলেও, এই ফিরহাদ হাকিমকে ফুটপাত থেকে তুলে এনে নেতা বানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলে এতো বড় বড় নেতা থাকতে এই ফিরহাদ হাকিমের স্কুটির পিছনে বসে ঘুরে বেড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতিতে দুগ্ধপোষ্য শিশু। দুধেল গাইদের ক্ষেপিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে রাজনীতিতে টিকে থাকা সম্ভব হবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঝানু রাজনীতিবিদ; তিনি বিজেপির সঙ্গে একটি গোপন কোয়ালিশন করে তুলেছেন; কেন্দ্রে বিজেপি থাকবে আর পশ্চিমবঙ্গে থাকবে তৃণমূল কংগ্রেস। মোদি-মমতা জুটির সাঁড়াশি আক্রমণে কংগ্রেসের নাভিশ্বাস উঠে গেছে।

বিগত বিধানসভা নির্বাচনে দিলীপ ঘোষ সহ বিজেপির কতিপয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সঙ্গে চরম বেইমানি করেছে। বিজেপির বহু নেতা প্রশান্ত কিশোরের টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়ায়, তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় ফিরে আসতে পেরেছে। দুধেল গাইদের হাতে নির্যাতিত বিজেপির ভোটাররা বিশ্বাসঘাতকতার দাঁতভাঙ্গা জবাব দিয়েছে - কলকাতা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে, বিজেপিকে তিন নম্বরে নামিয়ে দিয়ে। নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে একথা সত্য, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মানুষ এখন বিজেপির উপর বীতশ্রদ্ধ।

সুভাষচন্দ্র বসু হিন্দু মহাসভাকে ঠেকাতে কলকাতা সিটি কর্পোরেশনে দুধেল গাইদের এনে বসিয়েছিলেন। যারা গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং-এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করেছিল। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বসানো কলকাতা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ফিরহাদ হাকিম - তার মিনি পাকিস্তানের স্বপ্ন কতদিনে বাস্তবায়ন করতে পারবেন, এই প্রশ্নের উত্তর পেতে শুধু অপেক্ষা।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted