পশুবলি নিয়ে আমার যুক্তি।

“পশুবলি নিয়ে আমার  যুক্তি”
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ 

আমি কোনো শাস্ত্রজ্ঞ পন্ডিত ব্যাক্তি নই। বিধি মতো পড়াশুনা আমার চিকিৎষা বিষয়ে। বিদেশে থাকার জন্য গুরুদেবের কাছেও বিশেষ কোনো শাস্ত্র জ্ঞান লাভ করতে পারি নি। আমার শাস্ত্রজ্ঞান আমার নিজষ্ব পড়াশুনা ছাড়া আর কিছু নয়। 

কিন্তু আমার একটি নিজষ্ব ভাবনা চিন্তা আছে। সেই ভাবনা চিন্তা দিয়ে আমি যা বুঝি তাই লিখি। সবাইকে সেটা গ্রহন করতে হবে তা হতেই পারে না।

পশুবলি নিয়ে  একজন শাস্ত্রজ্ঞ পাঠক ‘মহানির্বান তন্ত্র’ এর শ্লোক উল্লেখ করেছেন।
পশুবলি

“একারণেই মহানির্বাণতন্ত্রে বলা হয়েছে -

দেবোদ্দেশং বিনা ভদ্রে হিংসা সর্বত্র বর্জয়েৎ।(১১.১৪৩)
দেবোদ্দেশে বলিদান উৎসর্গ ব্যতীত সর্বত্রই হিংসা বর্জন করতে হবে।

এবং এ বিষয়ে আরো বলা হয়েছে-

কৃতায়াং বৈধহিংসায়াং নরঃ পাপৈর্ন লিপ্যতে। (১১.১৪৩)
দেবোদ্দেশে বলিদানে যে হিংসা থাকে, শাস্ত্রে তাকে বৈধহিংসা বলা হয়েছে। হিংসা পাপ, কিন্তু বৈধহিংসায় পাপ স্পর্শ করে না"।। 

“দেবতার উদ্দেশ্যে পশুবলি বৈধ, এটা বৈধ হিংসা এবং বৈধ  হিংসায় পাপ স্পর্শ করে না”------

 এটা আমার কাছে ‘সোনার পাথর বাটি’ ছাড়া আর কিছু নয়। দেবতাদের নিয়ে আমার কোনো মাথা ব্যাথা নেই। আমি বিশেষ ভাবে জানি, দেবতা এবং ঈশ্বরের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত। ঈশ্বর যেমন মানুষ এবং অন্যান্য প্রানী সৃষ্টি করেছেন ,ঠিক তেমনি দেবতারাও ঈশ্বরের সৃষ্ট। সেই দেবতাদের খুশী করার জন্য অন্য প্রানী কে হত্যা করা কোনো মতেই বৈধ হতে পারে না। দেশ রক্ষা, আত্মরক্ষা এবং ধর্ম রক্ষা ছাড়া আর সব হিংসা অনুচিত বলেই আমার নিজষ্ব মত।

“শাস্ত্রে আছে বলিকৃত পশু সকল বন্ধন মুক্ত হয়ে মুক্তিলাভ করে"। 

আমাদের ষড়রিপুর নাশের প্রতীক হিসেবেই পশুবলি দেওয়া হয়। যেমন পাঠা হলো অনিষ্টকর কামের প্রতীক, মহিষ হলো ক্রোধের প্রতীক। তবে পশুবলি হয়তো প্রতিকী, কিন্তু সত্যিকারের পশুবলি দেবতার উদ্দেশ্যে আমরা তখনই দিতে পারবো যখন সত্যিসত্যি আমরা আমাদের দেহ থেকে কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ,মদ ও মাৎসর্য রূপ শরীরস্থ এই ষড়রিপুকেই বিনাশ করে পশুত্ব থেকে প্রথমে মনুষ্যত্ব এবং অন্তে দেবত্বে পৌছতে পারবো।“ 

সত্যই যদি কোনো শাস্ত্রে এই হাস্যকর বিধান দেওয়া থাকে তবে সেই বিধান গ্রহন করতে আমি রাজি নই। “অনিষ্টকর কামের প্রতীক পাঁঠা তাই সেই প্রতীক কে বলি দাও, ক্রোধের প্রতীক মোষ তাই মোষ বলি দাও” – 

বাঃ বাঃ বেশ। এবারে সেই পাঁঠা বলি দিয়ে যারা তার মাংস টা খায় এবং সেই সংগে “কারন বারি” পান করে উন্মত্ত নৃত্য করে, তাহলে তাদেরই আগে বলি দেওয়া উচিত, কারন সেই মানুষগুলো ই অনিষ্টকর কাম এবং ক্রোধের প্রতীক। তাই নয় কি ??????

দেবত্বে পৌছতে হলে আগে ভালো মানুষ হতে হয়। ভালো মানুষ হতে হলে নিজের মধ্যে যে “আদিম প্রবৃত্তি’ আছে তাকে জয় করতে হয়। সেই জয় পেতে হলে দরকার ঐকান্তিক সাধনা এবং ঈশ্বর ভক্তি সেই সাধনার প্রধান এবং প্রথম সোপান। বাকি সব বুজরুকি।

 হিন্দুদের নানা সম্প্রদায়ের মধ্যে, বিশেষ করে তান্ত্রিকদের মধ্যেও নানা বুজরুকি আছে। তারা তো নরবলিও দেয়। তাহলে সেটা কি ঠিক ????? তারা মৃত শরীরের সঙ্গে সেক্স ও করে। সেটা কে কি বলবো??? অঘোরী দের আস্তানা ঘুরে আসুন। দেখবেন কি বিকৃত মানুষ ওরা।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted