আমার মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয়, মহম্মদ এর মত চিৎকার করে বলি, আমি গড়তে আসিনি, আমি ভাঙতে এসেছি। সমাজে প্রচলিত বহু ধ্যান ধারণা, শ্রদ্ধা ভক্তি, রীতি নীতি, পরম্পরা, ভেঙে চুরমার করে দিই। নাহলে এই সমাজকে বাঁচানো যাবে না।
মূষলমানদের কিছু কীর্তিকলাপ নিয়ে
আমার একটা লেখা পড়ে এক ব্যক্তি, জনৈক 'মহাজ্ঞানী' চক্রবর্তী মহাশয় লিখেছেন - "বেকার, ফালতু কথা! মূষলিমরা কেন করবে এই কাজ? ইসলাম তো এটা বলে না"।
এর উত্তরটা আমি সকলের জন্য দিচ্ছি।
এই রোগেই তো ঘোড়া মরেছে। আপনি লিখেছেন - "ইষলাম তো এটা বলে না"! আপনার দোষ নেই। আমাদের পূর্বপুরুষরা ঠিক এই ভুল, এই অন্যায়টাই করেছিলেন। ইষলাম কী বলে, আর কী বলে না - আপনি কিভাবে জানলেন? আপনি ইষলামের কোন্ বই-টা পড়েছেন ? কোরান ক'পাতা পড়েছেন? হাদিস ক'পাতা পড়েছেন? কোরান কাকে বলে, আর হাদিস কাকে বলে আপনি জানেন? কোরান আর হাদিসের মধ্যে তফাৎ কী, আপনি জানেন? কোরান কতগুলি আছে, আর হাদিস কতগুলি আছে আপনি জানেন? কোরানের লেখক কে, আর হাদিসের লেখক কে বা কারা আপনি জানেন? কোরানের এক একটা অধ্যায় (chapter) কে কী বলে, উপ-অধ্যায় (sub-chapter) কে কী বলে আপনি জানেন? এক-একটা বাক্যকে (verse / শ্লোক) কী বলে জানেন? আয়াত বলে। কোরানের আয়াত দুই রকমের হয় জানেন? মাক্কী ও মাদানী। মাক্কী মানে কী, আর মাদানী মানে কী - জানেন? কোরানের দুটি আয়াতের মধ্যে যদি আপাত-বিরোধ দেখা যায়, তাহলে কোন্ টা অনুসরণ করতে হবে জানেন?
মোমিন, কুফ্র/কুফর, কাফের, নাসারা, আবাম, ঈমান, দোয়া, রহম, হিফাজত, নবী, ফরিস্তা, মুনাফিক, মুরতাদ, শিরক, মুশরিক, বুত, বুত্পরস্ত, রব, দ্বীন, মিল্লত, হালাল, হারাম, দলিল, ধিম্মি, জিহাদ, জিহাদ-বিল-মাল, গনিমত, জেনা, রিয়াসত, দারুল ইসলাম, দারুল হার্ব, দারুল দাওয়া, ("দারুল আমন" হয় না) ফর্জ, পর্দা, জন্নত, জাহান্নাম, মোহর বা দেনমোহর, নিকাহনামা, ইদ্দত, হালালা, হিজরা, হিজরত, মুহাজির, মুজাহিদ, সাহাবা, যাকাত, সেহরি, ইফতার, রামাদান, সাহাদাত, গাজী, গজব, এতিম, নাজিল, রিজিগ, খুতবা, তাকিয়া, উমরাহ হজ, গজবা এ হিন্দ, - এই শব্দগুলোর অর্থ জানেন কি? এগুলো না জেনেই আপনি ইসলাম জেনে গেলেন? ইসলাম কী বলে আর কী বলে না - জেনে গেলেন?
ঠিক এই ভুল শুধু আপনি নয়, আমাদের পূর্বপুরুষরাও করেছেন। তাইতো আমাদের বাংলা ভাগ হয়েছে। কোটি কোটি বাঙালি হিন্দু বাড়ির মহিলাদের সম্ভ্রম, ভিটে মাটি ও সর্বস্ব হারিয়ে রিফিউজি হয়েছেন। চট্টগ্রামের অঙ্কের শিক্ষক সূর্য সেন ৮০০০ কিলোমিটার দূরে লন্ডনে বসে থাকা মহারানী ভিক্টোরিয়া আমাদের কতবড় শত্রু চিনতে পারলেন। কিন্তু ঘরের পাশের মানুষটিকে (যারা সেখানকার জনসংখ্যার আশি শতাংশ) চিনতে পারলেন না। কারণ? কারণ মাস্টারদা কোরান পড়েননি, হাদিস পড়েননি, ইসলামের ইতিহাস পড়েননি, হজরত মহম্মদের জীবনী পড়েননি। তাই তাঁরা রক্ত দিয়ে, প্রাণ দিয়ে ব্রিটিশকে তাড়ালেন। দেশকে স্বাধীন করলেন। কিন্তু তাঁরই স্বজন ও বংশধররা সেই স্বাধীন দেশ থেকে সর্বস্ব হারিয়ে বিতাড়িত হয়ে হলেন লাথখোর রিফিউজি। কারণ? কারণ মাষ্টারদা সুদূর বিলেতের মহারানী ভিক্টোরিয়া কে চিনেছিলেন, কিন্তু প্রতিবেশিকে চেনেননি। চেনার চেষ্টা করেননি। এটা মূর্খতা ও কান্ডজ্ঞানহীনতা নয়? এই মূর্খতা এই নির্বুদ্ধিতা পাপ নয়? এর কোন ক্ষমা আছে? নেই। তারই শাস্তি আজ বাঙালি হিন্দু ভোগ করছে। সেই ভুলই আজ আবার করে চলেছে শিক্ষিত বাঙালি হিন্দু। তাই আবার আমাদের এই ভাঙ্গা বাংলা, পশ্চিমবঙ্গ বিপজ্জনকভাবে আবার ইষলামীকরণের খপ্পরে পড়ে গিয়েছে। এর অনিবার্য্য পরিণাম - আবার দেশভাগ, আবার পলায়ন, আবার রিফিউজি ।
বন্ধু, প্রস্তুত হোন সেই পরিণামের জন্য। অথবা কোরান পড়ুন, হাদিস পড়ুন, ইসলামকে জানুন।
অন্ততঃ আম্বেদকরের লেখা "Thoughts On Pakistan" বইটি পড়ুন।
এই বইটি "Dr. Babasaheb Ambedkar : Writings And Speeches" -এর Volume- 8 এ আছে। মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকার দ্বারা বইটি প্রকাশিত। বিজেপি সরকার নয়, কংগ্রেস রাজ্য সরকার দ্বারা প্রকাশিত। তার থেকেও সহজ বই
শিবপ্রসাদ রায় এর লেখা "আমরা ও তোমরা" এবং "সময়ের আহ্বান" বই দুটো পড়েছেন? তসলিমা নাসরিনের লেখা "ফেরা" বইটা পড়েছেন? পড়েননি। আর অবশ্য পড়ুন কোরান। গীতা পড়ার আগে কোরান পড়ুন। গীতা আপনাদের জন্য নয়। গীতা অর্জুনের মত বীরের জন্য। গীতা আত্মরক্ষার জন্য নয়। গীতা আক্রমণের জন্য, ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য। আপনি আক্রমণ করতে পারবেন না, ঝাঁপিয়ে পড়তে পারবেন না। তাই গীতা আপনার জন্য নয়। তবু যদি কোরান পড়েন তো আত্মরক্ষা করতে পারবেন। তাই গীতা পড়ার আগে শিবপ্রসাদ রায় পড়ুন, তসলিমা নাসরিন পড়ুন, সুহাস মজুমদার, রাধেশ্যাম ব্রহ্মচারী, নিত্যরঞ্জন দাস পড়ুন। আর কোরান কে অবশ্যপাঠ্য করুন।
কলমেঃ - শ্রী তপন ঘোষ।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................