‘মাহরাম’ ছাড়া যে মুসলিম নারীদের একাকী বাইরে যাওয়ার জায়েজ নেই

আফগানিস্থানে ৭২ কিলোমিটারের বাইরে পুরুষ ‘মাহরাম’ ছাড়া নারীদের ভ্রমণ করা নিষেধ তা যত জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ কাজ হোক না কেন। শিক্ষা চিকিত্সা এমনকি হজ করতেও নিষেধ। আফগানিস্থানে কওমি মাদ্রাসার মুল্লারা দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে আবারো এই আইন জারি করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই আইনটি কি ইসলামিক?

প্রথমে ‘মাহরাম’ যারা বুঝেন না তাদের জন্য বলি, মাহরাম হচ্ছে সেই পুরুষদের বুঝায় যাদের সঙ্গে বিয়ে হারাম নারীদের। যেমন আপন বাবা, স্বামী, ভাই, সন্তান। এরাই হচ্ছে একজন সাবালিকা নাবালিক নারীর সমস্ত কিছু সিদ্ধান্ত নেবার মালিক। ইসলাম ধর্ম কোন নারীকে তার জীবন নিয়ে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেবার সুযোগ দেয় না। কোন মুসলিম নারী ইসলামী শরীয়া মতে ৪৮ মাইল (৭৭ কিলোমিটার) থেকে বেশি দূরে যেতে অবশ্যই সঙ্গে একজন ‘মাহরাম’ নিবে। হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মাহরামকে সঙ্গে না নিয়ে কোনো নারী তিন দিন দূরত্বের পথে সফর করবে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস ১০৮৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস ১৩৩৮)।

অন্য আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে নারী আল্লাহ এবং আখেরাতের প্রতি বিশ্বাস রাখে, তার জন্য নিজের বাবা, ছেলে, স্বামী, ভাই বা অন্য কোনো মাহরামকে সঙ্গে না নিয়ে তিন দিন বা ততোধিক দূরত্বের পথ সফর করা বৈধ নয়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস ১৩৪০; সুনানে কুবরা, বাইহাকি ৩/১৩৮)।


‘মাহরাম’ ছাড়া যে মুসলিম নারীদের একাকী কোথাও অবস্থান জায়েজ নেই সেটি নিয়ে ইসলামের ৭২ ফিকরার কোন পক্ষই দ্বিমত প্রকাশ করে না। কাজেই যেসব বোরখা পড়ুয়া ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলে থেকে নামাজের স্থানের জন্য আন্দোলন করে, মেডিকেলে পড়া হিজাবীনী, সরকারী চাকরি করা ইসলামিক মাইন্ডের মহিলা কর্মকর্তা যিনি ‘মাহরাম’ ছাড়াই সরকারী সফরে যান কাজেই জেনে রাখুন ইসলাম আপনাদের এই সুযোগ গুলোকে স্বীকার করে না। বরং বলে এগুলোর জন্য মুসলিম নারীদের পরকালে কঠিন শাস্তি পেতে হবে এবং ইসলামী রাষ্ট্র হলে এগুলো চিরতরে বন্ধ করে দেওয়ার অঙ্গিকার করে। তাই যেসকল পর্দানশীল মুসলিম মেয়ে দেশে ইসলামী শাসনের জন্য ফেইসবুকে সরব হোন, ইসলামের জয়গান গান, নবীর প্রেমে দিয়ানা হোন, তারা জেনে রাখুন আফগানিস্থানের মুল্লারা নিজেরা বানিয়ে কোন আইন কারোর উপর চাপিয়ে দেয়নি। আফগান কওমিদের অভিভাবক ভারতের দেওবন্ধ মাদ্রাসা, বাংলাদেশের হেফাজত চরমোনাই সকলেই দেওবন্দের মুরিদ- কাজেই তারা ক্ষমতায় এসে ‘মাহরাম আইন’ পাশ করলে আর হোস্টেলে কষ্ট করে পড়া লাগবে না, নামাজের ঘরের জন্য আন্দোলনও দরকার হবে না। কি ভালো হবে না?

-সুষুপ্ত পাঠক
#সুষুপ্তপাঠক
17 June 2022

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted