ইরানে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে।কোন বিধানই ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।

ইরানে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে।কোন বিধানই ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️✍️

ইসলাম মতাদর্শগত কারনে সারা পৃথিবীতে বিতর্কিত।ইসলামে একটি মাত্র ধর্মগ্রন্থ যারমধ্যে ৬৬৬৬টি আয়াত বা আল্লাহর বানী রয়েছে।কোরান ও হাদিস হল ইসলাম ধর্মের মূল উৎস আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত দিব্য বানীর সংকলিত রূপ।কিন্তু সারা পৃথিবীর মুসলিম দেশগুলো কোরানের ব্যাখ্যা নিয়ে বিভ্রান্ত  দ্বিধাবিভক্ত।যারজন্য প্রতিনিয়ত এক মুসলিম দেশ অন্য মুসলিম দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, আত্মঘাতী হামলা করছে, মসজিদে বিস্ফোরণ,গুপ্ত হত্যা আবার দেশের মধ্যেও শরিয়তি আইন ভঙ্গের অজুহাতে হাজার হাজার নিরিহ নির্দোষ মুসলিম নরনারী হত্যা নির্যাতন নিপীড়নের স্বীকার হচ্ছে।পৃথিবীতে দ্বিতীয় কোন ধর্ম নেই যারা ধর্ম অবমাননা বা দ্বিমত প্রকাশ করলে তাদের মরতে হয়।



একমাত্র ধর্ম ইসলাম যার বিধানে ধর্মের নিয়ম অমান্য কারীর বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান হল মৃত্যুদণ্ড।এ এক নিষ্ঠুরতম ইতিহাসের অমর কাহিনি। পৃথিবীর অতীত ইতিহাস সম্পর্কে আমরা কতটুকুই জানি।তবে বর্তমান যুগে হিংসা সন্ত্রাস ও বর্বরতার এমন লোমহর্ষক ইতিহাস শিক্ষিত অশিক্ষিত নির্বিশেষে বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের মধ্যে যেমনটি দেখা যাচ্ছে তা নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর ও বিরলতম।পোশাকের নামে ইরানে যে বর্বরতা ধর্মের নামে সংগঠিত হচ্ছে তা অতীতে আমরা অন্য কোথাও দেখিনি।অথচ এই পোশাক বিধি মুসলিম দুনিয়ায় সবাই এক নিয়মে পালন করেনা।আল্লাহর বিধান যদি সর্বত্র অলঙ্ঘনীয় হয়ে থাকে তাহলে ইরানে এক রকম সৌদি আরবে অন্য রকম কেন অথবা বাংলাদেশে এক রকম ইন্দোনেশিয়া মালয়েশিয়ায় ভারতে অন্য রকম হবে কেন।তাহলে আল্লাহর বানী যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে পৃথিবীর সর্বত্র মুসলিম দেশেগুলোতে পোশাক বিধি এক ও অভিন্ন হবে।তা কিন্তু হচ্ছে না।অর্থাৎ সভ্যতার বিবর্তনে মানুষ পরিবর্তিত হয়ে বুঝতে শিখেছে কোনটা ভাল আর কোনটা মন্দ।যুক্তি ও মানবতাবাদী মানুষের নিকট গ্রন্থে নির্ধারিত বিধান বিভীষিকাময় প্রহেলিকা ছাড়া আর কিছু নয়।

১৯৭৯ সালে ইরান বিপ্লবের পর পৃথিবীব্যাপী ইসলামিক ফ্যাসিবাদ এবং লোমহর্ষক সন্ত্রাসের ঘটনা সীমা অতিক্রম করে চলেছে।কমিউনিজমের অভিশাপ ও আতঙ্কের স্থান দখল করেছে ইসলামিক সন্ত্রাস।বেঁচে থাকার চেয়ে ধর্মের জন্য প্রান দেয়া ও নেয়া অধিক শ্রেয় এই বিশ্বাসে অনুপ্রাণিত হয়ে কট্টরপন্থী মুসলিমরা কায়েম করেছে এক আতঙ্কের পৃথিবী।মাহসা আমিনি(২২)নামে এক কুর্দি তরুনী ঠিকঠাক হিজাব পরেনি চুল বেরিয়েছিল।পুলিশি হেফাজতে আমিনির মৃত্যুর পরই ইরানের মহিলারা গর্জে উঠে এবং বিক্ষোভে সামিল হয়।বিক্ষোভের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে ৮৩ জনের প্রাণ গিয়েছে এরমধ্যে শিশুও রয়েছে।যারা মরতে শিখেছে পৃথিবীর কোন শক্তি তাদের দমিয়ে রাখতে পারেনি ইতিহাস তার সাক্ষী। 

ধর্মের প্রতি আনুগত্যের কারনে নারীদের চুল ঢেকে রাখা লিঙ্গ বৈষম্য।নারীর কেশকে যৌনাবেদনময় হিসাবে মনে করে  পুরুষরা।তাই পুরুষরাই ঠিক করে দিয়েছে নারীদের চুল লুকিয়ে রাখতে হবে যাতে কেউ উত্তেজিত না হয়ে পড়ে।অথচ সারা পৃথিবীতে মুসলমানদের একটি ক্ষুদ্রাংশের নারীরা ছাড়া এ নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই। সুরা আবুদাউদঃ৪০৩১ এ উল্লেখ রয়েছে নবীজি বলেছেন,যে ব্যক্তি কোন জাতির অনুকরণ অনুসরণ ও সামঞ্জস্য বিধান করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত বলে গন্য হবে।
অথচ সারা পৃথিবীতে অনুসরণ বা অনুকরণ হচ্ছে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া যা ছাড়া পৃথিবী অচল।
এছাড়া কোরানের কোথাও সুনির্দিষ্টভাবে কোন বিধানের কথা উল্লেখ নেই।এমনকি কোরানে কোথাও হিজাব বা বোরকা নামে কোন পোশাকের কথাও বলা নেই।যা বলা আছে তাহল,"মহান আল্লাহ বলেছেন হে নবী,তুমি তোমার স্ত্রীদের কন্যাদের ও মুমিন নারীদের বলো তারা যেন তাদের চাঁদরের কিয়দংশ নিজের শরীরের উপর টেনে দেয়।এতে তাদের চেনা সহজ হবে( সুরা আহজাব আয়াত-৫৯)

এখন আর কোরানের আয়াত সারা পৃথিবীর কোথাও যথাযথ ভাবে পালিত হয় না হওয়া সম্ভবও নয়।কিন্তু আপনি এই কথাটি বলতে পারবেন না বললে ধর্ম অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হবেন।ধর্মে বলা আছে "তোমরা ইহুদি কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করতে পারবেনা"। সারা পৃথিবীতে কি কোথাও এই বিধান পালিত হচ্ছে? না হচ্ছেনা।এই মিথ্যাচারের ফলে এই ধর্মের প্রতি মানুষ বিরক্ত হয়ে পড়ছে।ইসলাম সম্পর্কে মানুষের মধ্যে যে বিদ্বেষ বাড়ছে তা ইরান বুঝতে না পারলেও ইসলামের গোড়াপত্তন যে দেশে হয়েছে সেই সৌদি আরবের বোধোদয় হয়েছে।তারা নারীর মর্যাদা এবং ক্ষমতায়নে অনেকদূর এগিয়েছে। সেখানে এখন পুরুষ অবিভাবকের অনুমতি ছাড়াই মহিলারা বাড়ির বাইরে কিংবা বেড়াতে যেতে পারছে।এছাড়া মহিলারা স্বতন্ত্রভাবে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন।বিয়ে নথিভুক্ত করা,বিবাহবিচ্ছেদ,
শিশুর জন্মের এমনকি পারিবারিক নথির জন্যও প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাতে পারবেন।এর কোনটির জন্যই কোনও পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি নিতে হবেনা।পরিবর্তিত আইন অনুযায়ী এখন থেকে মা-ও সন্তানের আইনী অভিভাবক হতে পারবেন।মহিলাদের গাড়ি চালানোর অধিকার দেয়া হয়েছে।নারীদের খেলার মাঠে বসে খেলা দেখার অধিকার দেয়া হয়েছে।সৌদিতে এখন নিয়মিত গানের জলসা বসে সিনেমা হল চালু হয়েছে।সৌদি মেয়েরা এখন খোলামেলা অবস্থায় বাইরে বেরুতে পারে হিজাব বা বোরকা বাধ্যতামূলক নয়,মেয়েরা বিমান চালায় ফুটবল খেলে।অবগুণ্ঠন থেকে সৌদি মেয়েরা এখন অনেকটাই মুক্ত।অথচ এই বিধানগুলো ইসলাম অনুমোদন করে না।কিন্তু সৌদি আরব করতে বাধ্য হয়েছে ।নইলে মুসলিম ধর্মের সূতিকাগার হিসাবে চিহ্নিত মক্কা-মদিনা রক্ষা করা যাবেনা। তাই ধর্মের এই অচলায়তন ভাঙতে না পারলে ইসলাম মুছে যাবে এই চরম সত্যি কথাটি মুসলিম দুনিয়া বুঝতে যত দেরি করবে তত হত্যা সন্ত্রাস বর্বরতা সারা পৃথিবীকে অশান্ত করে তুলবে।

এরা সবাই মুসলিম দেশের নারী।খেলাধুলা বিমান চালনায় পারদর্শী আবার জীবন বাজি রেখে প্রতিবাদ করতেও পিছিয়ে নেই।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted