গোমূত্র হচ্ছে গরুর খাদ্য বিপাক প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত তরল উপজাত। গোমূত্র ভারত, মায়ানমার, নেপাল ও নাইজেরিয়ায় ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। যদিও গোমূত্র ও গোবর সার হিসেবে ভালো, কিন্তু বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের মত হচ্ছে, গোমূত্রে বিভিন্ন অসুখ ও ক্যান্সার আরোগ্যের দাবির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নাই।
গোমূত্র ভারতে চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হয়। উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত নিচের ছবিতে একজন অসুস্থ ব্যক্তি গরুর পিঠে শুয়ে মলদ্বারে মুখ রেখেছে, যাতে এর মূত্র তার মুখের উপর পরে।
ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায়: ঔষধি পানীয় হিসেবে গোমূত্রের বিশেষ গুরুত্ব আছে বলে কিছু Hiন্দু দাবি করে থাকেন। বলা হয়ে থাকে গোমূত্রের ছিটের আধ্যাত্মিক পরিচ্ছন্নতা গুণও রয়েছে।
ঐতিহ্যগতভাবে গবাদিপশু ভারতবর্ষে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গৃহাস্থলি সরঞ্জাম হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এবং কিছু Hiন্দু গরুকে পবিত্র হিসেবে এবং গো হত্যাকারীকে পাপী হিসেবে বিবেচনা করে আসছে।
লোকজ ওষুধ: গোমূত্র প্রাচীন আয়ুর্বেদ ওষুধশাস্ত্রে গোমূত্র চিকিৎসার জন্য ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়েছিলো। গর্ভবতী গরুর মূত্রের বিশেষ গুরুত্ব আছে বলে মনে করা হয়; এটিতে বিশেষ হরমোন এবং খনিজ রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। আয়ুর্বেদের মতে, গোমুত্র (গরুর প্রস্রাব) কুষ্ঠরোগ, জ্বর, পেপটিক আলসার, যকৃতের অসুস্থতা, কিডনির ব্যাধি, হাঁপানি, নির্দিষ্ট অ্যালার্জি, সোরিয়াসিস, রক্তস্বল্পতা, এমনকি ক্যান্সারের মতো অসুখ ও ত্বকের সমস্যাও নিরাময় করতে পারে। ভারতের বৃহত্তম আয়ুর্বেদিক সংস্থা পাতঞ্জলি আয়ুর্বেদ প্রস্রাব ভিত্তিক পণ্য বিক্রি করে।
গোমূত্র মিয়ানমার এবং নাইজেরিয়ার লোকজ ওষুধ হিসাবেও ব্যবহৃত হয়। নাইজেরিয়ায়, তামাক , রসুন, লেবু, তুলসীর রস, খনিজ লবণ এবং গরুর প্রস্রাবের মিশ্রণ বাচ্চাদের খিঁচুনির চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়। এর ফলে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে বেশ কয়েকটি শিশু মারাও গিয়েছিল।
মেঝে পরিষ্কারক হিসাবে
সম্পাদনা: ভারতের হলি কাউ ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা গৌনাইল নামে একটি মেঝে পরিষ্কারের তরল বাজারজাত করে। মানেকা গান্ধী (ভারতের নারী ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী) সরকারী অফিসে ফিনাইলের পরিবর্তে মেঝে পরিষ্কারক হিসেবে গৌনাইল ব্যবহারের প্রস্তাব করেছিলেন। ২০১৫ এর মে -তে, রাজেন্দ্র সিং রাঠোর, রাজস্থানের মেডিকেল ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জালোরে ₹40 মিলিয়ন (US$ ৫,৪০,০২০) রূপির একটি গোমূত্র শোধনাগার উদ্বোধন করে। পার্থভীমদা গো ফার্মা প্রাইভেট লিমিটেড এটি নির্মাণ করে এবং তারা গোক্লিনার নামে একটি মেঝে পরিষ্কারকও উৎপাদন করে।
জৈব চাষে: জীবমূত্র রাখার পাত্র গোমুত্র ধান উৎপাদনের জন্য সার হিসাবে ব্যবহৃত হয়। Jeevamrutha নামে একটি সার গাভী প্রস্রাব, গোবর, গুড়, ডাল এবং আটার মিশ্রণ থেকে তৈরি করা হয়।
Rezaul Manik
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................