‘হিযরত’ থেকে ফিরে এসে এক ছেলে মিডিয়ার সামনে দাবী করেছে সে বুঝতে পেরেছে এটা ভুল পথ, তাই সে পালিয়ে এসেছে। কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পঞ্চাশ জনের বেশি তরুণ ‘হিযরত’ করে ঘর ছেড়েছিলো কখিত ইমাম মাহদির দলের বায়াত নিতে। হিযরত করে আসার পর যে ছেলেটির মনে হলো ‘এটি ভুল পথ’ সে কি ইসলামকেই ভুল পথ মনে করছে? ‘হিযরত’ শব্দটি পুরোপুরি ইসলামিক। ইমাম মাহদি আসবে কাফেরদের কাটতে এটাও খাঁটি ইসলামিক বিশ্বাস ও এই বিশ্বাস নিয়ে শিয়া সুন্নী লা মাযহাবী আহলে হাদিস সুফি মারফতি... কোন গ্রুপেরই দ্বিমত নেই। তাহলে ‘এটি ভুল পথ’ মানে কি বুঝানো হয়েছে?
এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্র সমাজের জন্য। কোটি কোটি মুসলমান তরুণ ইমাম মাহদি আসবে কাফেরদের কাটতে আর ইসলাম কায়েম করতে এটি বিশ্বাস করেও জঙ্গিবাদে জড়ায় না। এরাই শরীয়া শাসন চাওয়া ৮০% পাবলিক। এরাই ইউরোপের ফুটপাথে ‘আল্লা আকবর’ বলে গাড়ি তুলে দিয়ে নিরহ মানুষ মেরে ফেললে মৌন সমর্থন জানায়। ফেইসবুকে হা হা রিয়েক্ট দেয়। হিযরতে গিয়ে নরম বিছানা না পেয়ে, ভালো খাবার না পেয়ে, জিহাদীদের কঠোর মনোভাব দেখে ভরকে গিয়ে কারোর কারোর মনে হতে পারে ‘এটা ভুল পখ’! কিন্তু মাহদীকে বিশ্বাস করা, গজওয়াতুল হিন্দকে বিশ্বাস করা, ইহুদীদের বাইতুল মোকাদ্দেস দখল করায় বিশ্বাস করা, ইসলামিক খিলাফতে বিশ্বাস করা, কাফেরদের রক্তে মাহদীর ঘোড়ার সিনা পর্যন্ত ডুবে যাওয়ায় বিশ্বাস করা থেকে কি সে বা তারা সরে এসেছে?
আসেনি! তাহলে তো তাকে বা তাদের ইসলামকেই ত্যাগ করতে হবে! ইসলামে সাম্রাজ্যবাদ ও অমুসলিমদের পরাজিত করে সাম্রাজ্য স্থাপন, তাদেরকে দাস বানানো, তাদের থেকে জিজিয়া কর আদায় করা, তাদের মেয়েদের যৌনদাসী করা- এগুলি ছাড়া আধ্যাত্মিক ধর্মাচারণ বলতে কিছু নেই। ইসলামে নামাজ রোজা হজ যাকাতের চেয়ে জিহাদকে সবার উপরে স্থান দেয়া হয়েছে। কুরআনের সুরা আত তওবা আয়াত ১৯-এ বলা হয়েছে “হাজীদেরকে পানি পান করানো আর মাসজিদে হারামের আবাদ করাকে কি তোমরা তাদের কাজের সমান মনে কর যারা আল্লাহ ও শেষ দিনে বিশ্বাস করে আর আল্লাহর পথে জিহাদ করে? আল্লাহর দৃষ্টিতে এরা সমান নয়। (যারা ভ্রান্তপথে আল্লাহও সন্তুষ্টি খুঁজে এমন) যালিম সম্প্রদায়কে আল্লাহ সৎপথে পরিচালিত করেন না”
এই আয়াতে পরিস্কার করে বলে দেয়া হয়েছে হজ পরিচালনা করা, হাজীদের সেবা করার মত কাজও জিহাদের তুলনায় নগন্য! এই আয়াতটি তৈরি করা হয়েছিলো তখন যখন মক্কার কুরাইশরা বলেছিলো তারাও আল্লাকে কত ভালোবাসেন। হজের সময় তারা দূর দুরান্ত থেকে আসা হাজিদের পানি পান করান, সেবা করেন, কাবাঘরের যত্ন নেন, এখানে প্রার্থনা করেন তাহলে মুহাম্মদের নতুন ধর্মের তুলনায় আমরা আল্লাকে কম ভালোবাসী কিভাবে? এগুলি তো পূণ্যের কাজ। তখন মুহাম্মদ আবৃত্তি করেন এই লাইনগুলি। বলেন জিহাদে দাও কুড়াল তরোয়াল নিয়ে আল্লার রাস্তায় ফাইট করাই বেশি সোয়াব!
‘হিযরত’ মুসলিমদের কাছে অপরিচিত কিছু নয়। বাংলাদেশের ঘরে ঘরে জিহাদী তৈরি হচ্ছে আর কিছুদিন পর পর তারা ঘর ছেড়ে পালাচ্ছে। আলালের ঘরে দুলালদের কেউ কেউ কষ্ট সহ্য করতে না পেরে এসে বলছে এটা ভুল পথ! কিন্তু ঘরে ফিরে এসে মনে মনে বলছে, সত্যিকারের মাহদীর দল যেদিন ডাক দিবে সেদিন আমিও তরোয়াল হাতে ঝাঁপিয়ে পড়ব!
রাষ্ট্র ও সমাজকে এই আইডলোজির বিরুদ্ধে ফাইট করতে হবে। ‘জঙ্গিবাদ’ নাম দিয়ে কোন মিথ্যে ছায়ার বিরুদ্ধে নয়।
Written by : সুষুপ্ত পাঠক
#copyrightfree
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................