কেন অরুন্ধতী রায়ের কোন লেখা বা বক্তৃতা বাংলাদেশের কাগজগুলি কাড়াকাড়ি করে ছাপে??

লিখেছেন : সুষুপ্ত পাঠক Susupto Pathok

#অরুন্ধতী রায়ের কোন লেখা বা বক্তৃতা #বাংলাদেশের #কাগজগুলি কাড়াকাড়ি করে ছাপে। কারণ বাংলাদেশের মিডিয়াগুলি ‘মননে মুসলিম লীগ’। অরুন্ধতী রায়ের লেখায় তারা মুসলিম জাতীয়তাবাদের পক্ষে বক্তব্য পায়। সেভাবেই সম্প্রতি একটি স্মরণসভায় অরুন্ধতী রায়ের বক্তব্যের অনুলিপি ছেপেছে একটি কাগজ। এক বন্ধুর কল্যাণে সেটি পড়ার সুযোগ হয়েছে। বামপন্থি পরিস্কার করে বললে #মাওবাদী অরুন্ধতী রায় আমাদের রাষ্ট্রগুলির নজরদারীর উপর খুবই সরব প্রতিবাদকারী। আদতে তাকে আমাদের মতালম্বী বলে এখানে মনে হতেই পারে। আমরাও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও ব্যক্তিস্বাধীনতার জন্য বুদ্ধিভিত্তিক লড়াই লড়ছি। কিন্তু আদৌ কি মানুষের মুক্তচিন্তায় তিনি বিশ্বাস করেন? তিনি এখন গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা, মানুষের উপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণহীনতার কথা বললেও মাওবাদী কোন রাষ্ট্রে কি মানুষের এই অবাধ বিচরণ থাকবে? তাহলে তিনি মাওবাদীদের সমর্থন করেন কেন? তাদের সঙ্গে জঙ্গলে গোপনে দেখা করতে যাওয়ার কথা তিনিই একটা লেখায় বলেছিলেন। এমন কোন কমিউনিস্ট রাষ্ট্র আজ পর্যন্ত দেখা গেছে যেখানে জনগণকে তারা সেন্সর করেনি? #মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্য স্নোডেন যিনি আমেরিকার নজরদারীকে ফাঁস করে দিয়েছিলেন, বর্তমানে তিনি রাশিয়ার আশ্রয়ে আছেন। অরুন্ধতি তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বলে নিজেই জানালেন। অরুন্ধতী বলেছেন-

“#স্নোডেন এখনও মস্কোতে নির্বাসনে আছেন। আমাদের নিত্যসঙ্গী মুঠোফোনের মাধ্যমে যে নজরদারিমূলক রাষ্ট্রের বিষয়ে স্নোডেন সতর্ক করেছিলেন, স্বেচ্ছায় তার মধ্যে প্রবেশ করেছি আমরা। আমাদের মুঠোফোন আমাদের শরীরের অন্তরঙ্গ ও অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়ে আমাদের ওপর নজর রাখছে, আমাদের সবচেয়ে ব্যক্তিগত তথ্য রেকর্ড করছে ও ছড়িয়ে দিচ্ছে যাতে আমাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা যায়, আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ করা যায় এবং পোষ মানানো যায়। এই নজরদারি শুধু রাষ্ট্রই আমাদের ওপর করছে না, বরং আমরা নিজেরাও পরস্পরের ওপর করছি”।

#অরুন্ধতী তার পুরো বক্তব্যে (কমেন্টে লিংক দিচ্ছি) এই দমনমূলক রাষ্ট্র বলতে আমেরিকা ইন্ডিয়া ছাড়া আর কাউকে দেখতে পাননি! তিনি একবারও চীনের কথা বলেননি। তিনি কাশ্মীর ফিলিস্তিনিদের জন্য চোখের জল ফেলেছেন কিন্তু একবারও উইঘুর মুসলমানদের জন্য একটি কথা বলেননি। চীনের নজরদারী নিয়ে তার কোন কথা নেই। এমনকি রুশদি হত্যাকান্ড নিয়ে ‘কি বলা যাবে আর কি বলা যাবে না’ তত্ত্ব দিয়ে হত্যাকান্ডকে ঘুরিয়ে লঘু করে দিয়েছেন। #নূপুর শর্মা ঘৃণা ছড়িয়েছে এটা বড় কথা কিন্তু তাকে হত্যার হুমকি দেয়াটা মূখ্য নয়! যারা হত্যার হুমকি দিয়েছে তারা ভারতেরই খাকে এমনকি তিনি (অরুন্ধতী) ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে খুনি বলছেন খোদ ভারতে বসেই! এটা কি রাশিয়াতে বসে পুতিনকে বলা যাবে? চীনে বসে শিনজিংকে? আমেরিকায় বসে বাইডেনকে কিন্তু গালি দেয়া যাবে। কিন্তু ইরানে বিক্ষোভ করার জন্য ১৫ জনকে ফাঁসি দেয়া হবে! ঠিকঠাক হিজাব পরেনি বলে কাউকে মেরেও ফেলা যাবে। এইসব ঘটনা বিশ্বকে অধিকারহীন করে তোলে না? অরুন্ধতীদের কাছে? এমনকি ইরানের বাধ্যতামূলক হিজাব পরার সঙ্গে #অরুন্ধতী ভারতের ব্যাঙ্গালরে স্কুলে হিজাব পরতে না দেয়ার তুলনা করতে চান। স্কুল ড্রেস অমাণ্য করে ফ্রান্সেও কাউকে হিজাব, ক্রুশসহ ধর্মীয় কোন চিহ্ন পরতে দেয় না। এটাকে ইরানে শরীয়া আইনের বাধ্যতামূলক হিজাব পরার সঙ্গে কি করে মেলানো যায়? ভারতের কোথাও বোরখা হিজাব নিষিদ্ধ নয়। শুধু শ্রেণীকক্ষে বোরখা হিজাব যদি পরতে না দেয়া হয় সেটাকে #খোমিনির শরীয়া আইনের সঙ্গে তুলনা করাটা ধান্দাবাজী ছাড়া আর কি?

#ভারতের হিজাব বিতর্কের সময় নোয়াম চমেস্কি অনেক কথা বলেছেন। কিন্তু ইরানের পুরো সময়টা তিনি নিরব থেকেছেন। বামপন্থিরা ইসলামিক বিশ্বের প্রতি দুর্বল এটি বারবার উঠে এসেছে। যেহেতু ইসলামি বিশ্ব ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে অমুসলিমদের শত্রু মনে করে (সৌদির সঙ্গে আমেরিকা বা #ইজরাইলের বন্ধুত্ব যতই থাক) তাই শত্রুর শত্রু বন্ধু মনে করে কমিউনিস্টরা মুসলিম বিশ্বের সব কিছুকে সমর্থন করে। আফগানিস্থান থেকে আমেরিকা চলে গেলে তারা খুশি হয় কিন্তু আফগানিস্থানে শরীয়া আইন চালু হলে তাদের কিছু যায় আসে না। ইরানের খোমিনি সরকারকে কমিউনিস্টরাই সবার আগে সমর্খন করেছিলো! তাদের ভুলের রাজনীতি যেন কিছুতেই শেষ হবার নয়...। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছেন কমিউনিস্ট বুদ্ধিজীবীরা। তারা ভারতবর্ষের ইতিহাস লিখতে গিয়ে ‘মুসলমান জাতি’ বলতে একটি জাতির সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। ভারতে হিন্দুত্ববাদের মত #মুসলিমবাদ একটি বাস্তব সত্য। কিন্তু হিন্দুত্ববাদ তাদের কাছে নিন্দনীয় হলেও মুসলিমবাদে কোন সমস্যা নেই!

Copyright © 2022 Susupto Pathok aka সুষুপ্ত পাঠক all rights reserved.

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted