কোথায় আলো ? জয়তু বোরখা !

কোথায় আলো ? জয়তু বোরখা !

আমার জীবন অকতরে উৎসর্গ করলাম একটু আলোর আশায়, কিন্তু আশায় কেবল বালুচর ! আমি সুযোগ-সুবিধা অর্থ-স্বাচ্ছন্দ পরিত্যাগ করে যার মোহে পড়ে আছি, সে একটু আলো। কিন্তু সেখানে কুয়াশা।

কুয়াশা কাটাতে পারে জ্ঞান, যার অপার নাম আলো। সমাজের পণ্ডিতজনেরা, বরেণ্য মানুষেরা এই আলো আনেন। কিন্তু আমাদের সমাজের বরেণ্যরা অবর্ণনীয় আঁধারের চাষ করছেন, তাদের ভাবনায় চিন্তায় কর্মে।

আমার সম্প্রদায়ের বরেণ্য জ্ঞানী হচ্ছেন আলেম উলামারা। এদের কথা শুনতে হাজারে হজারে মানুষ জড়ো হন, মোটা এনামি দিয়ে হেলিকপ্টারে করে এঁদেরকে নিয়ে কথা শোনেন দেশবাসী। কোনো বিশ্ববিদ্যায়ে এমন কোনো অধ্যাপক নেই, যাঁকে হেলিকপ্টারতো দূরের কথা সামন্য গাড়ি ভাড়া দিয়ে তাঁর লেকচার শুনতে দেশবাসী আগ্রহ আছে।

আলেমরা কী বলেন, কী ছড়ান ? কাল এক আলেম বললেন, কী বলব দুঃখের কথা ! মুসলমান পূজায় যায়, মন্দিরকে সম্মান করে; অথচ নবি করিম বলেছেন, ইসলাম যেখানে পা রাখে সেখানে চলবে শরিয়া আইন, মন্দির মূর্তি মুসলমানের নয়।

কাল এক পোস্টে কায়সার আহমেদ স্পষ্ট রেফারেন্স দিয়ে বললেন, ইসলামি দুনিয়ার সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলেম ‘ফতোয়াই  খানে’ গ্রন্থের ‘কিতাবুন নিকা’ অধ্যায়ে ফতোয়া দিয়েছেন, “কোনো পুরুষ লোকের যদি দুই স্ত্রী থাকে, এবং ছোটো স্ত্রী দুধ পানের বয়সী শিশু হয়,  তবে বড়ো স্ত্রী কখনো ছোটো স্ত্রীকে বুকের দুধ পান করাতে পারবে না। যদি পান করায়, দুজনাই তালাক হয়ে যাবে।’—(পৃষ্ঠা ৩৬৪) 

বুকের দুধ পান করলে দুই স্ত্রীর মধ্যে মা-মেয়ের সম্পর্ক জারি হয়, তাই এ সমস্যা। কোনো পুরুষ এক সাথে মা মেয়েকে স্ত্রী করে রাখতে পারে না। তবে তালাকের পরে ওই ছোটো স্ত্রীকে মুমিন ব্যক্তি বিবাহ করতে পারবেন, তার আগে অন্য কারো সঙ্গে হিল্লা বিবাহ সম্পাদনের মাধ্যমে।–এটাই মহান ইসলামের বিধান। এই ফতোয়া সৌদি ফতোয়া বোর্ড গ্রহণ করায় এটা মুসলিম জীবনে ভিত্তি পেয়েছে।

আমাদের সম্মানীত জ্ঞানীকূলচূড়ামনিরা কাফেরের ওক্সফোর্ড হারবার্ড থেকে জাত নন, তাঁর বিশ্বসেরা জ্ঞানপীঠ মদিনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আল আজহারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসেন। আর আসেন ভারতের দেওবন্দ থেকে। দেশের জ্ঞানবিতরণের বিশাল আয়োজন এঁদের দখলে। এদের মনোহর নিতম্বের ঘসায় দেশের হেলিকপ্টারগুলো ধন্য হয়।

আজ মুজিব রহমানের পোস্টে পড়লাম, এই হেলিকপ্টারীয় নিম্বের মোহে পড়েছেন এক মুমিন পরিবারের মা ও মেয়ে। মেয়েটি ইউনিভার্সিটির মেধাবী ছাত্রী। বিজ্ঞানের একটি শাখায় অনার্স শেষ করে মাস্টার্স পড়ছেন। মা সম্মানিতা গৃহবধূ। মা-মেয়ে আমুণ্ডু কালো বোরখা, এমন কি হাতেও হাতমুজা বরণ করেছেন। তাঁরা আলেমদের সত্য জ্ঞানে মুগ্ধ হয়ে এই বিশ্বাস লালন করেন, নারীর চুল থেকে পায়ের নখ ঢেকে রাখতে হয়। ঢাকার ত্রুটি হলে দুষ্ট পুরুষ এসব অঙ্গে কামাতুর চোখে চাইবে। আর এতেই ঘটে যাবে সর্বনাশ, পরকালে আর জান্নাত মিলবে না।

পরিবার-কর্তা ভাবিত, যদিও তিনি নিজে মুমিন। 

মেয়েটি মেধাবী, তাঁর ভবিষ্যতের ভরসা, কিন্তু এমনভাবে চললে চাকরি-বাকরি করবে কী করে ?—এই পিতার শঙ্কা। এই শঙ্কা দূর করতে তিনি মা-ও মেয়েকে ঘনিষ্ট পরিচিত মুজিব রহমানের নিকট নিয়ে আসেন। তিনি মনে করলেন এই মা-মেয়েকে মাদানি-আজহারীদের আলিশান দাড়ির মোহ থেকে বাঁচাতে প্রাজ্ঞ মেধাবী মুজিব রহমান সাহায্য করতে পারবেন। তারপরের কথা মুজিব রহমানের কাছে শুনুন :

’আমি জানি হঠাৎ করে কিছু বললে তারা কিছু বুঝবে না। উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখাবে। আমি বলি, কে কী ভাবে জীবন যাপন করবে এটা তার ব্যাপার। ওনাদের স্বাধীনতা রয়েছে ধর্মীয় জীবনযাপনের।’ এরপর যেই বললেন, ‘কেউ ধর্মীয় জীবনযাপন করবে, কেউ কবরে না, এ তাদের স্বাধীনতা।’

কিন্তু এতে বোরখা-ঢাকা রমনীর ক্রোধী কণ্ঠ, আবৃত অবগুণ্ঠনের মধ্য হতে অগ্নিশিখার মতো গনগন করে উঠল। বললেন, ”তাই বলে-সত্য-অসত্য থাকবে না ? ইসলাম সত্য ধর্ম, এর অনেক প্রমাণ রয়েছে। মানুষ মিথ্যার সাথে থাকবে কেন?” 

মুজিবের যুক্তি হল অরণ্য রোদন। তিনি খাইলেন কেবল বোরখার চোদন।

মুজিবের মতো এমন চোদন আমি কত যে খেয়েছি ! আমার মাঠের চাকরি হতে বঙ্গভবন পর্যন্ত। আজও অকাতরে চুদে যাচ্ছে কতজনে, অবসরের এই পড়ন্ত বেলায় !

মেয়েটি অবশ্য কোনো কথা বলেননি মুজিবের সাথে। একজন বেনামাজি দাড়িহীন নাস্তিক-মুরতাদের সাথে মেধাবী ভার্সিটি মেয়ে কী কথা বলবেন? ভিতরে ভিতরে তিনি হয়তো কালনাগিণীর মতো ফুঁসতে ছিলেন, ‘বাবার কাণ্ডজ্ঞান দেখো, হালারপুতে এক দাড়িহীন মুরতাদের কাছে আপন মেয়েরে নিয়ে আইছে ! এ মুরতাদের সাথে কতা কলি আমার কণ্টের জিনা হবে।’

ধর্ম মাথায় একটা অন্ধ আবরণ তৈরি করে দেয়। এক্ষেত্রে ইসলামের জুড়ি নেই।

এই যে বষষ্কা স্ত্রীর দুধ শিশু স্ত্রীর পান—এই সব উদ্ভট তথ্য এ যুগেও আমাদের জ্ঞানীরা কেমন করে বহন করছেন ! এসব মানুষ কেমনে ভাবতে পারেন এই নোংরা আবর্জনা, বুঝতে সত্যি বেগ পেতে হয়।

দুধপানের এই উৎকট ব্যাপারটি এসেছিল নবি মোহাম্মদেরই পালকপুত্রের স্ত্রী হালাল করার ওহির সহযোগ থেকে। অসংবৃতাবসনে পালকপুত্রের স্ত্রী জয়নবকে দেখে নবি করিমের মনে একদিন যখন নেক খায়েশ হল, জয়নবকে আপন অঙ্কমোবারকে বরণ করতে, তিনি যা লজ্জায় লুকাতে চাইলেন, তাঁর আল্লা তা প্রকাশ করে দিলেন। আল্লা বললেন, ও নবি আপনি যা মনে লুকান আমি তা প্রকাশ করে দেই। আমি অন্তরের কথা জানি। জয়নবকে আপনি বিয়ে করেন; পালকপুত্রের স্ত্রী কি আর নিজ ঔরশজাত পুত্রের স্ত্রীর মতো নাকি ? আজ থেকে পালকপুত্রের নিজপুত্রবৎ অধিকার রোহিত করা হল। 

আল্লার কথার পরে আর কথা থাকে না। তিনি ‘অনিচ্ছুক’ নবিকে পালকপুত্রের স্ত্রী সাথে বিয়ে দিয়ে দিলেন।

তো এতে যে মারত্মক সামাজিক বিপর্যয় শুরু গেল ? পালকপুত্র এখন পালক মায়ের কাছে কেমনে যাবে ? তারও তো লিঙ্গ আছে, এতদিনের পালকমাতাকে এবার বিবাহ করার খায়েশ তারও জাগতে পারে ।

কিন্তু এতদিন যারা মায়ের কাছে সহজে গেছে, নিজ ঘরের সন্তানের মতো ঘরে কর্মাদি করেছে, সাহবিরা তাদের এখন কি করে? কোন সাহসে অন্দরে রাখবেন? এতে তো নিজের বৌ-মেয়ের পালকপুত্রের হাতে ধর্ষিতা হওয়ার সম্ভবনা।

দয়াল নজিবি তখন তখন এই সিদ্ধান্ত দিলেন, সকল পালকপুত্রকে তাদের মাতাদের দুধ পান করতে হবে। এতে আপন ছেলের মতো হয়ে যাবে। তখন মায়ের সাথে তার সেক্সের সমন্ধ আর তৈরি হতে পারবে না।

আলহামদুলিল্লাহ, বয়ষ্ক বয়ষ্ক পালক ছেলেরা পালকবাবার যুবতী বউদের দুধ পান করা শুরু করলেন। মিটে গেল সামজিক সমস্যা !

তো কায়সার আহমেদ যে মহাজ্ঞানী আলেমের ফতোয়ার কথা বললেন, কোনো লোকের ছোটো বিবিকে (দৃগ্ধপোষ্য, ইসলামে দুধের শিশুকেও বিয়ে করা যায়েজ) স্নেহবশে বড়ো বিবি দুধ খাওয়ালে দুই বিবিই কেন তালাক হবে, তা আসলে নবি মোহাম্মদের দুধ-দর্শন, বা দুধকেন্দ্রিক সমাধান সূত্রের উপজাত হিসেবে এসেছে। আমাকে যদি কোনো মুমিনের গৃহের অন্দরে চাকর রাখা হয়, মুমিনের স্ত্রীর প্রথম কাজ হবে আমাকে তাঁর দুধ পান করানো। এই দুধ পান করানোর জন্য, ওই গৃহে ঘোরাফেরা করলে আমার লিঙ্গ আর খাড়াবে না। মহিলারও যোনিমণ্ডলে কোনো সুরসুরি তৈরি হবে না আমাকে দেখে। 

এমন আশ্চর্য দুধপানদর্শন একবিংশ শতাব্দীর মানুষ যদি না শেখেন, তা হলে পৃথিবী গুমরা হয়ে যাবে।

মুজিব রহমানের লেখায় উঠে আসা বোরখা-শোভিতা মাতাকন্যা এ-সব কাহিণী জানেন। জয়তু বোরখাওয়ালী রমনীগণ !
১০.০১.২০২৪

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted