আজকে আমার ক্লাস নাইন পড়ুয়া ভাগ্নে আমাকে প্রশ্ন করলো, "মামা বলতো এক খন্ড লোহা পানিতে ডুবে যায়, কিন্তু লোহার তৈরী জাহাজ পানিতে ভাসে কেন?"
আমি বললাম, "পবিত্র কুরানুল কারীমে আছে মহান আল্লাহপাকের নির্দেশে জাহাজ পানিতে ভাসে।" (কুরান ১৭ঃ৬৬)
নাছোড়বান্দা ভাগ্নে আবার প্রশ্ন করলো, "তাহলে মামা এক খন্ড লোহা পানিতে ডুবে যায় কেন? এক খন্ড লোহাকে আল্লাহপাক পানিতে ভাসিয়ে রাখেননা কেন?"
আমি বললাম, "এই বিষয়ে কুরান হাদিসে সুস্পষ্ট বক্তব্য নাই। তাই আমি উত্তর দিতে পারছিনা।"
পাকনা ভাগ্নে তখন কোন এক বিজ্ঞানীর নাম জানি বললো। আর্কিমিডিস না কি জানি নাম। সে নাকি প্রায় ২২০০ বছর আগেই এর উত্তর দিয়ে গেছে। কোন বস্তু কর্তৃক অপসারিত পানির ওজন যদি ঐ বস্তুর ওজনের সমান বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে নাকি সেটা পানিতে ভাসে। আমি মূ*-র্খসূর্খ মানুষ। তার কথার আগামাথা কিছুই বুঝলাম না। বোঝার দরকারও নাই।
ভাগ্নেকে বললাম, "তুই এসব কি ধরনের কথা বলছিস? আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কি জাহাজ ভেসে থাকতে পারে? তুই কি দেখিস না কত লঞ্চ, জাহাজ, ফেরী পানিতে ডুবে যায়? তখন তোদের এই বিজ্ঞানের ছাইপাশ সূত্র কাজ করেনা কেন?"
ভাগ্নে বললো, "কোন কারণে যদি কোন বস্তু কর্তৃক অপসারিত তরলের ওজন ঐ বস্তুর চেয়ে কম হয়ে যায় তাহলে সেটা ডুবে যাবে। সেটা লোহা হোক, জাহাজ হোক, নৌকা ভেলা যাই হোকনা কেন। অপসারিত তরলের ওজনের চেয়ে বেশি ওজনের কোন কিছুকে আল্লাহ জিহোভা গড কেউই ভাসিয়ে রাখতে পারবেনা। এটা অসম্ভব। দূর্ঘটনা কবলিত লঞ্চ, ফেরী বা জাহাজ কর্তৃক অপসারিত পানির ওজন বেশি হয়ে পড়ায় তারা ডুবে যায়।"
আমি মনে মনে নাউজুবিল্লাহ আস্তাগফিরুল্লাহ পড়লাম। ভাগ্নেকে কি জবাব দেয়া যায় খুঁজে পেলাম না। কিন্তু কোমলমতি বাচ্চাদের মনে এসব প্রশ্ন আসছে কেন? এগুলো তাদের কী পড়ানো হচ্ছে? এগুলো পড়ানোর দরকারটা কি? এভাবে প্রশ্ন করতে থাকলে ওদের ঈমান ঠিক থাকবে তো? জাহাজ ডুবলো না ভাসলো, কেন ভাসলো, কিভাবে ভাসলো এত কিছু জেনে লাভটা কি? এই দুনিয়ার জীবন কয়দিনের? আখিরাতের জন্য আমরা আমাদের সন্তানদের সঠিকভাবে প্রস্তুত করতে পারছি তো?
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................