"লাল-বাল পাল"- (আগের অংশের পর)
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে “আন্দোলনের ভিত” তৈরী করেছিলেন বাল গঙ্গাধর তিলক, ঋষি অরবিন্দ, রাসবিহারী বসু, বাঘাযতীন, খুদিরাম বোস, মাতঙ্গিনী হাজরা, বিনিয়-বাদল- দীনেশ, শহীদ ভকৎ সিং, লাল-বাল –পাল ত্রয়ী, নেতাজী সুভাষ ছন্দ্র বোস। এই সব প্রাতঃস্মরনীয় দেশ ভক্তদের অবদান সম্যক বুঝতে না পারলে আমরা কখনোই বুঝতে পারবো না, কি ভাবে গান্ধী এবং নেহেরু আমাদের ভারতবর্ষের বৈদিক হিন্দুদের সর্বনাশ করেছে দেশ টিকে ভাগ করে।
আগেই বলেছি, গান্ধী যখন দক্ষিন আফ্রিকা থেকে ভারতে এসে পৌছুলেন, তার আগেই তাকে বিখ্যাত বানিয়ে দিয়েছিলো ব্রিটিশ সরকারের মদতে ভারতের সংবাদ সংস্থাগুলো। নিয়মিত ভাবে গান্ধীর “শান্তি শান্তি রেব এ বচ এবং সত্যাগ্রহ” নামক এক বস্তা পচা বুলি কি ভাবে কাজে লাগানো যায় “স্বদেশী আন্দোলন” কে রুখে দিতে, সেটা ব্রিটিশ ভালোই বুঝে গিয়েছিলো।
ব্রিটিশের সংগে “ইসলামিক ঊম্মা” র হয় এক অতি গোপন বোঝাবুঝি। এর মুলে ইহুদীদের ইজরায়েল নামক “হোমল্যান্ড”। মধ্য প্রাচ্যের ওই অঞ্চল তখন ব্রিটিশের অধিকারে। মুসলিমরা চায় পুরো ইজরায়েল (“ইহুদীদের হোমল্যান্ড”—যা ওদের ‘জিহোবা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ---প্রমিসড ল্যান্ড)। ইহুদীরা চায় তাদের “নিজস্ব বাসভুমি” যা ৩০০০ বছর আগে তাদের ই ছিলো, যেখানে মুসলমানরা এসে দখল করেছিলো এবং ইহুদীদের সারা পৃথিবীতে “উদ্বাস্তু” হয়ে ঘুরে বেড়াতে হয়েছিলো। তাই জমির বদলে জমি। ব্রিটিশ, মুসলিমদের বললো, “তোমরা ইহুদীদের জন্য কিছু জমি ছাড়ো, আমরা তোমাদের শান্তির ভাইদের আরো বেশী জমি পাইয়ে দেবো ভারত ভাগ করে”। সামান্য এক টুকরো জমি “ইজরায়েল”, তার বিনিময়ে “ইসলামিক ঊম্মা” পেলো ভারতের এক তৃতীয়াংশ জমি ।যা আজ দুই দুটি ‘ঘোষিত মুসলিম দেশ’। হিন্দুদের দেশ ,সনাতনী ভারত , বৈদিক ভারত হয়ে গেলো দুটি আরবী ধর্মের দেশ ,পড়ে রইলো দুটি জিনিষ--- (এক)---- ‘পোকায় খাওয়া গনতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক’ ভারত যেখানে আজ “হিন্দু” কথাটাই তুচ্ছ তাচ্ছিল্যার নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
(দুই) ‘পোকায় খাওয়া এই ভারতকে রাহু কেতুর পুর্নগ্রাস করার ভবিষ্যতের সম্ভাবনা, যে সম্ভাবনার পরিকল্পনা ‘দুই সিমেটিক ধর্মী’ রা অনেক আগেই করে রেখেছে আর এখন চলছে তার কর্ম কান্ড।
৭১ বছর আগে, স্বজ্ঞানে বা অজ্ঞানে , ব্রিটিশের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে, নিজের দেশটাকেই বিকিয়ে দিলো এই দুই চতুর ব্যারিষ্টার, গান্ধী এবং নেহেরু।
***
যে দেশ সারা পৃথিবীকে দিয়েছে শান্তি, সম্প্রিতি আর মানবিকতার বানী, মানব সভ্যতার জন্মভুমি ‘সিন্ধু- সরস্বতী সভ্যতা, গাঙ্গেয় সভ্যতা, অসভ্য বর্বর আরবী, তুর্কি, আফগানিস্তানের ইতর উপজাতিগুলোর দ্বারা ধংস হলো ১০০০ বছর ধরে। ১৯৪৭ সালে, বৈদিক ভারতের ‘শ্রাদ্ধ –শান্তি’ অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করলো দুই ভারতীয়, এক আরবী ধর্মের সমর্থক, আর এক দখলদারী ব্রিটিশ।
স্বদেশী আন্দোলনের হোতারা শুধু অসহায় অবস্থায় দেখলেন এই তিন অশুভ শক্তির কার্যকলাপ। কারন তাদের কিছুই করার ছিলো না। ঋষি অরবিন্দ প্রথমে জেলে পরে পন্ডিচেরীতে নিজেকে সরিয়ে নিলেন।
বাল গঙ্গাধর তিলক কে ‘স্বদেশী আন্দোলন উদ্ভুদ্ধ করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। ১৮৯২ সালে এক ট্রেন যাত্রায় এই দুই মনীষীর দেখা হয়। বিবেকানন্দ দুই দিন তিলকের ঘরে আতিথ্য গ্রহন করেন। দুজনে মিলে পরিকল্পনা করেন দেশ মাতৃকার পরাধীনতা কি করে মোচন করা যায়। বিবেকানন্দ তিলক কে বললেন—“আমি সন্যাষী, আমি ভারতীয় হিন্দুদের মধ্যে আধ্যত্মিক চেতনা জাগাবার কাজ করবো, তুমি তাদের নিয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে দেশকে স্বাধীন করো। শুধু দেশ স্বাধীন হলেই চলবে না, কারন দেশ বাসী আধ্যাত্মিক চেতনায় উদবুদ্ধ না হলে সেই স্বাধীনতা টিকিয়ে রাখতে পারবে না। দেশকে মা হিসাবে ভাবতে না পারলে দেশকে সেবা কি করে করবে?”
একই কথা রবীন্দ্রনাথ ও গান্ধীকে বলেছিলেন--- “ যাদের জন্য স্বাধীনতা চাইছেন আগে তাদের তৈরী করুন। ১০০০ বছরের পরাধীনতার পর স্বাধীন হয়ে কি করে দেশ চালাতে হয়, আপনি তো সেটা করছেন না। ক্ষমতা দখল করা এক টিকিয়ে রাখা আর এক। স্বাধীনতা পাওয়া এক জিনিষ আর স্বাধীন মানুষের দ্বায় দ্বায়িত্ব পালন করা অন্য জিনিষ”।
গান্ধীর সেদিন রবীন্দ্র নাথের সেই কথা ভালো লাগেনি, কারন বিবেকানন্দ এবং রবীন্দ্রনাথের মতো দুরদৃষ্টি যদি গান্ধীর থাকতো তাহলে ওই ভদ্রলোক নেহেরুকে নিয়ে চলতেন না আর সুভাষ বোসকে একঘরে করে দিতেন না। অবাক হবার কিছু নেই, যখন গান্ধী লন্ডনে ‘রাঊন্ড টেবিল কনফারেন্সে’ গিয়ে বলেন “ আমি এখানে টেররিষ্টদের হয়ে ওকালতি করতে আসিনি। হয় আমার সঙ্গে কথা বলো না হলে তোমাদের টেররিষ্টদের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে”। “ I am here not to plead for the Terrorist. You either deal with me or you will have to deal with the Terrorist”. গান্ধীর কথায়, স্বাদেশী আন্দোলনের নেতারা, সেই তিলক , ঋষি অরবিন্দ থেকে শুরু করে, শহীদ ভকং সিং থেকে নেতাজী সুভাষ সবাই অর দৃষ্টিতে ‘সন্ত্রাষবাদী’। ঠিক ব্রিটিশের সুরে সুর মেলানো কথা।
*******
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................