‘উত্তিষ্ঠিত , জাগ্রত—পাড়ায় পাড়ায় দুর্গ গড়ে তোলো’।

‘উত্তিষ্ঠিত , জাগ্রত—পাড়ায় পাড়ায় দুর্গ গড়ে তোলো’
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ (মৃনালানন্দ হিন্দু)

*** এই লেখাটা আমি প্রায় ৪ বছর আগে লিখেছিলাম, পোষ্ট ও করেছিলাম, যা আজ অতি বাস্তব হয়ে দাড়িয়েছে)********* আমার বিনীত অনুরোধ সবাই একটু পড়ে দেখো, কষ্ট করে কি লিখেছি, তার পর 'লাইক বা কমেন্ট' করো******* 

ভারত বর্ষের হিন্দুরা অত্যাচারিত সেই ৭১২ সাল থেকে। এর মধ্যে উত্তর পশ্চিম কাশ্মীর -পাঞ্জাব এবং পুর্ব দিকে বাংলা, সবচেয়ে বেশী অত্যচারিত। উত্তর পশ্চিমের দিকে অত্যচার এখন বন্ধ বলতে গেলে,কিন্তু পুবে সেই একই ধরনের অত্যাচার চলেইছে। এর যেনো কোনো শেষ নেই।

আমরা আশা করে আছি দিল্লি আমাদের বাচাবে। আমি মনে করি না। বিদেশী আক্রমন বেশীর ভাগ হয়েছে উত্তর পশ্চিম থেকে কিন্তু তারা ঘুরে দাড়িয়েছে দিল্লির সাহায্যে। এখানে আমরা সমান ভাবে মার খেয়ে চলেছি,কিন্তু আমাদের হয়ে কথা বলার কেউ নেই। যারা বলছে তারা শুধু রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য।

তাই আমাদের ভাবনা আমাদেরই ভাবতে হবে। চীন,রাশিয়ার ভক্তরা বাঙ্গালীর বুদ্ধিমত্তা ভেংগে চুরমার করে দিয়েছে। আর এখন কংগ্রেসের দ্বিতীয় সংষ্করন (টি এম সি) আমাদের ভীন জাতির কাছে "আংগিনায় পড়ে থাকা মরচে ধরা লোহা লক্কড়" এর মতো কে জি দরে বিক্রি করে দিতে সব ব্যবস্থা পাকা করে ফেলেছে।

আমাদের সংগ্রাম তাই অতীব কঠিন। সেই সংগ্রাম শুরু করতে হবে এখনই। যদি ভাবি  আরো অপেক্ষা করি, ওই দাদা এসে আমাদের বাচাবেন, তাহলে দেরী হয়ে যাবে। মরচে ধরার লোহা লক্কড়ের ব্যাবসায়ীরা এবং ওদের ফড়ে দালাল গুলো কাজ ওরা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রকারন্তরে ওদের সাহায্য করে চলেছি। আমরা বুঝতেই পারছি না যে "পশ্চিম বাংলায় বাঙ্গালী হিন্দু আজ বিক্রি হয়ে যাচ্ছে, আর তাও কে জি দরে পচা জিনিষ পত্র এবং লোহা লক্কড়ের মতো'। ৩৪+৯= ৪৩ বছরে বাঙ্গালী হিন্দু আজ সেখানে দাঁড়িয়ে আছে।

আমি আগেই লিখেছি এবং সব সময় বিশ্বাস করি ও বলি, এই সংগ্রাম নবীন প্রজন্মের। পুরণো দের দিয়ে কিচ্ছু হয় না। তারা তো কোন না কোণ ভাবে নিজেদের বিবেক,বুদ্ধিমত্তা কোথাও না কোথাও বন্ধক রেখেছে। সুদে মুলে সেই বন্ধক এতো বেশী যে তারা এই জীবনে আর সেই বেড়া জাল থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না। পারবেন শুধু কার্ল মার্ক্স , আর বর্তমানে "অগ্নি কন্যা" র জাবর কাটতে।  আর এখন ওরা নতুন করে কিছু ভাবতে বা করতে পারবে না। ওদের বাদ দিয়েই যা করার করতে হবে। নেতৃত্ত হাতে তুলে নিতে হবে নতুন প্রজন্মকে। নইলে বর্তমান এবং ভবিষ্যত সব  শেষ হয়ে যাবে। 

যদি তরুন প্রজন্ম ভাবে যে, কোন রাজনৈতিক দল বা নেতৃত্ত , কোন ধর্মীয় সংঘটন তাদের সমুহ বিপদ থেকে উদ্ধার করতে আসবে, তবে আমি দ্বায়িত্ব নিয়ে বলছি , সে গূড়ে বালি। ১৯৪৬ সালের ‘ডাইরেক্ট একশন’ থেকে কলকাতার হিন্দুদের বাচাতে কেউ আসেনি , এসেছিলেন একমাত্র ‘গোপাল মুখার্জী’,আর তিনি কোনো রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব ছিলেন না। রাজনীতিকরা আসে সব শেষ হয়ে গেলে মায়া কান্না কেঁদে ফায়দা লুটতে, যেমন এসেছিলেন গান্ধী ডাইরেক্ট একশনে অসংখ্য মানুষ মারা যাবার পর। ১৯৬৪ সালেও দেখেছি, পুর্ব পাকিস্তানের হিন্দুদের বাচাতে কোনো রাজনৈতিক নেতা আসেন নি, এমন কি ভারতের প্রধান মন্ত্রী জহরলাল একটি শব্দও খরচ করেন নি যখন লক্ষ লক্ষ হিন্দু ভিটে মাটী ছেড়ে ভারতে আসতে শুরু করলো ‘মারন যজ্ঞ’ এর হাত থেকে বাচতে। 

আজো প্রতিদিন বহু হিন্দু আসছে ভারতে আর তাদের হয়ে কথা বলার কেউ নেই,কোথাও।  সবাই কে কোন মন্ত্রীত্ব পাবে সেই 'দিবাস্বপ্নে' এবং 'সুখ স্বপ্নে' ব্যাস্ত। শুধু হিন্দু এই কারনে এখোনো (২ দিন আগেও অনুকুল ঠাকুরের এক ভক্ত কে) বাংলাদেশে মানুষ মারা হচ্ছে। নীল গাই মরলে এখানকার মানুষ, মিডিয়া প্রতিবাদ করে, কিন্তু বাংলাদেশে হিন্দুরা খুন হলে কোথাও কোনো প্রতিবাদ হয় না। বরং, ৪ বছর আগে যিনি সি পি এম করতেন এবং দিনরাত আর এস এস কে গালি গালাজ দিতেন, সাহাবুদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে রাখী পরিয়েছেন, আজ তিনি রাজ্য সভার সদস্যা। তিনি বাংলাদেশ সরকারের আমন্ত্রনে বাংলাদেশে গিয়ে বলে এসেছেন, "বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপরে কোনো অত্যচার হয় না", অর্থ্যাত তারা দুধে ভাতে আছে। কি সুন্দর পর্যবেক্ষন। একে যারা রাজ্য সভার সদস্যা বানিয়েছে তাদের কাছে বাঙ্গালী কি আশা করে????

পশ্চিম বংগেও সংখ্যাগুরু বাঙ্গালীদের মান সন্মান নিয়ে  বেচে থাকতে হলে নিজেদের “আত্মরক্ষা” নিজেদের করতে হবে। কোনো নেতা তাদের বাচাতে আসবে না। তরুন প্রজন্মকে তাদের সমুহ বিপদ বুঝে ফোঁস করা জানতে হবে,শিখতে হবে এবং ফোঁস করতে হবে প্রয়োজন অনুসারে। এর জন্য প্রস্তুতি দরকার। শুধু ফেসবুকে ঝড় তুলে কোনো কাজ হবে না।

যেকোনো বিপদ থেকে নিজেকে বাচিয়ে রাখা প্রতিটি মানুষের জন্মগত অধিকার। এতে কোনো দোষ নেই। হিংসা, প্রতিহিংসা এক, আর আত্মরক্ষা সম্পুর্ন আলাদা। আত্মরক্ষায় অপারগ হলে বিনাশ ছাড়া আর কি হতে পারে ?

পুরোনোরা তো আমাদের বাপ ঠাকুরদার মতো হাত ধুয়ে বলবে "বুঝতে পারিনি এমন হবে", ঘরে বসে কার্ল মার্ক্স আর স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের পোকায় খাওয়া পাতা উল্টাবেন, আর বৌমা দের কাছে "এক কাপ চা দাও তো মা'--- এই বলে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়বেন।

তাই বিবেকানন্দের ভাষায় বলছি--- "উত্তিষ্ঠত, জাগ্রত"-- শুরু করো একত্র হয়ে লড়াই এর জন্য তৈরী হতে। পাড়ায় পাড়ায় দুর্গ গড়ে তোলো। সেই দুর্গ যেনো অচ্ছেদ্য হয়। সেই দুর্গের পাহারাদ্বার থাকবে, অনিন্দ্য সুন্দরের ডাকে , রুদ্রবীনার ঝংকারে উদ্বীপ্ত তরুনেরা তরুনীরা। যেদিন – “রুদ্রবীনার ঝংকারেতে ক্ষুব্ধ জীবন  ঊঠবে মেতে” সেই দিন একমাত্র সেই দিনই হবে বাঙ্গালীর মুক্তি। তার আগে নয়।

প্রতিটি অঞ্চলে (ধরুন প্রতিটি পঞ্চায়েত এলাকায়) কমপক্ষে ৫ টি করে ‘সুরক্ষা কমিটি” তৈরী হলো। এক একটি কমিটিতে ১০ জন করে তরুন তরুনী, শিক্ষিত, মার্জিত, দেশপ্রেম, জাতি প্রেমে উদবুদ্ধ। এরা নিয়ম করে প্রতি সপ্তাহে এক দিন কম পক্ষে ১ ঘন্টা কোথাও মিলিত হবে। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবে নিজ নিজ এলাকায় যে কোনো আপত কালীন অবস্থা, দুর্যোগ——সে প্রাকৃতিক বা যে কোনো প্রকারের হোক, অন্যায়, অত্যাচার কি হচ্ছে ,তা নিয়ে আলোচনা করবে। সিদ্ধান্ত নেবে কি করা উচিত এবং স্থানীয় ভাবে স্থানীয় মানুষকে প্রতি নিয়ত সাবধান করা থেকে শুরু করে বিপদে তাদের পাশে এসে দাঁড়াবে। এই ভাবে চলা শুরু হলে, ধীরে ধীরে যে বিশাল “সুরক্ষা বাহিনী” তৈরী হবে, তাদের আর কেউ ডরাতে সাহস পাবে না। এক বার শুরু করলে, দিকে দিকে একই রকম সংগঠন তৈরী হয়ে যাবে। এই সংঘটন সমাজের, ধর্মের, সর্ব বিধ বিপদে আপদে সামনে এসে দাঁড়াবে। ঠিক যেমন, ইউরোপে তৈরী হয়েছিলো “নাইট” রা। যাদের মুল উৎপত্তি হয়েছিলো খ্রীষ্টান ধর্মকে তাদের জ্ঞাতি ভাইদের (শান্তির ধর্ম) হাত থেকে বাঁচাতে। শুধু সাবধান থাকতে হবে, যেনো, ধুর্ত রাজনীতিবিদ রা এতে ঢুকে পড়ে সব গুলিয়ে না দেয়।আর এমন কেউ সামনে এগিয়ে না যান, যিনি সব জান্তা আর একমাত্র মাতব্বর, যার সুরে অন্য সবাইকে নাচতে হবে।

প্রথমে, স্থানীয় ভাবে, একটা দুটো তৈরী হলে,পরে এর মধ্যে সমন্বয় করার মতো মানুষের অভাব হবে না। চাইলে আমি নিজে সবার পাশে থাকবো। তবে আমি অনেক জনকে জানি যারা নে্তৃত্ব দিতে সক্ষম এবং আমার থেকে পারদর্শী। তারা এগিয়ে আসবেন।   

তাই, আমার তরুন তরুনী ভাইপো, ভাইঝি, ভাই বোন, বন্ধুরা--- এগিয়ে এসো। এই দেশ, এই সমাজ,এই ধর্ম, এর সব ভবিষ্যত উত্তরাধীকারি শুধু তোমরা। তোমরা যদি তোমাদের ভালোবাসা ধরে না রাখো তবে অন্যে তো ছিনিয়ে নেবেই, আর তার জন্য সব পরিকল্পনা শুধু নয় কাজ চলছে।
কেনো নিজের ভালোবাসা অন্যকে দিয়ে নিজে শেষ হয়ে যাবে??????????????????????

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted