ফ্রান্স প্রেসিডেন্টের ধর্ম অবমাননার পক্ষাবলম্বন ও কাশ্মীরী পন্ডিত, রঙ্গীলা রসূল, গুজরাট কসাই সমাচার।

ফ্রান্স প্রেসিডেন্টের ধর্ম অবমাননার পক্ষাবলম্বন ও কাশ্মীরী পন্ডিত, রঙ্গীলা রসূল, গুজরাট কসাই সমাচার
................................................
ইটের বদলে পাটকেল মারলে তার নাম হয় 'মুসলিম বিদ্বেষ ইসলাম বিদ্বেষ'। সম্প্রতি ফ্রান্সে মিলা নামের একটি মেয়ে ইসলাম ধর্মকে নোংরা ধর্ম বলেছিল তাতে মুসলমানরা ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তোলে। অথচ একটি মুসলিম যুবক প্রথম মিলাকে নোংরা সমকামী বলে আক্রমণ চালায়। মিলার জবাবটা ছিলো ইটের বদলে পাটকেল মারা। অথচ একজন সমকামীর যৌন জীবনকে নোংরা বলাটা চাপা পড়ে গেলো 'মুসলিম বিদ্বেষ' শোরগোলে!

মুসলিমদের গায়ে পড়ে ঝগড়া করাটা সব সময় চাপা পড়ে যায় কারণ ইটের চেয়ে পাটকেল আকারে বড় ও জোরালো। লোকে ওটাই দেখতে পায়। রঙ্গীলা রসূল লেখার পর প্রকাশককে খুন করা হলো সবাই ইসলামের নবীকে নিয়ে কটুক্তিটা বড় করে দেখল। অথচ রঙ্গীলা রসূল ছিলো হিন্দুদের সীতাকে বেশ্যা বলে লেখা মুসলমানদের একটি বইয়ের জবাব। লেখার বদলে লেখা দিয়ে জবাব দেয়াটাই গ্রহণযোগ্য। সেটাই করা হয়েছিল। কিন্তু লেখককে খুন করে মুসলিমরা ইসলাম বিদ্বেষ আজহারী তুলে সীতাকে নিয়ে কটুক্তিকে ঢেকে দিয়েছিল। ফ্রান্স প্রেসিডেন্টের বক্তব্য এখানেই ঐতিহাসিক ও অনন্য। তিনি মিলার বক্তব্যের পরই ব্লাসফেমির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। রঙ্গীলা রসূলের পর সেটাই উচিত ছিলো ভারতীয় লিবারালদের। আমি জানি না আসামে মাদ্রাসা বন্ধের সরকারি ঘোষণার পর অরুন্ধতী রায় ইসলাম বিদ্বেষের অভিযোগ তুলেছে কিনা। নোয়াম চমেস্কি ফ্রান্সের বিরুদ্ধে মুসলিমফোবিয়ার অভিযোগ তুলেছে কিনা! 

স্পর্শকাতর গুজরাট দাঙ্গার কথা এবার বলি। গুজরাট দাঙার সূচনা হয়েছিল হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ট্রেনে আগুন দেয়ার পর। সেই দাঙ্গায় মারা পড়ে অসংখ্য নিরহ মানুষ। গুজরাট কসাই খ্যাত নরেন্দ্র মোদীর দায় নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই কিন্তু ট্রেনে আগুন দিয়ে তীর্থযাত্রীদের পুড়িয়ে যারা মেরেছিল সেই কাজকে সমান ঘৃণা করা উচিত ছিলো। সেটা হয়নি। যদি কাশ্মীরী পন্ডিতদের নিজ দেশ থেকে উচ্ছেদকারী মুসলমানদের বিরুদ্ধে পাটকেল চালানো হত আমি নিশ্চিত এখন আমরা 'কাশ্মীরের কসাই' বলে কাউকে পেয়ে যেতাম এবং কাশ্মীরী পন্ডিতদের উচ্ছেদ বেমালুম চাপা পড়ে যেতো! এখানেই ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট মিলার বাক স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়ানো অনেক বড় একটি ঘটনা। তিনি যদি ফ্রান্স মুসলিমদের ভোট বাগাতে "ফ্রান্সে মুসলিম ও ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের কোন স্থান নেই" বলতেন তাহলে সমকামীদের ইসলামী চেতনায় নোংরা বলা মুসলিমদের বগলে ইটের মজুদ আরো জোরদার হত। আমি নিশ্চিত ভারতে এই ঘটনা ঘটলে লিবারালরা মিলার বিরুদ্ধেই অবস্থান নিত। 

ধর্মের সমালোচনাকে শুধুমাত্র "ইসলাম বিদ্বেষ " হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে অমুসলিম লিবারালদের ভূমিকা সবচেয়ে বড়। বাংলাদেশ পাকিস্তানের মত মুসলিম দেশের তথাকথিত মুসলিম লিবারালদের  ইসলাম বিদ্বেষ বিরোধিতা  স্বধর্মীয় অবস্থান থেকে। এদের কথার তাই কোন বস্তুনিষ্ঠতা নেই। যারা জঙ্গিবাদের সঙ্গে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই বলে জঙ্গিবাদ নিয়ে কথা শুরু করে তাদের চরিত্র নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। 

সৃজনশীল নাস্তিকতার তড়িকা চালু করা কিছু বামাতীর মুখেও ফ্রান্স প্রেসিডেন্টের ধর্ম অবমাননার পক্ষাবলম্বন পাটকেল ছুড়ে পড়েছে। ... হা হা হা এবার প্রেসিডেন্ট সাহেবকে এডওয়ার্ড সাঈদ চমোস্কি পড়ে আসতে বলে কিনা দেখার বিষয়। সমকামী বিরোধী মুমিন ভাইটি আসলে ফ্রান্সের কলোনিয়াল যুগের নিপীড়নের  প্রতিশোধ  নিচ্ছে। নতুবা মুমিন ভাইটি  আমেরিকার ছাপানো কুরআন পড়ে বিপথগামী হয়েছে ...!

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted