ইসলাম এমন এক মানসিক রোগ যা একবার কাউকে ধরলে আক্রান্ত ব্যক্তি ইসলাম ছাড়লেও ইসলাম তার পিছু ছাড়ে না
©Mufti Masud
কুখ্যাত শিবির ক্যাডার নূর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিনা। কোন নাগরিককে গ্রেপ্তার করতে হলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা উচিত, এবং কেন তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে বিষয়ে বাকি নাগরিকদের জানতে দেয়া উচিত। যদি রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে শিবির ক্যাডার নুর মোহাম্মদকে গ্রেপ্তার করা হয় তা অবশ্যই নিন্দনীয়, তবে ধর্মীয় উস্কানি দেয়া ও সন্ত্রাস ছড়ানোর কারণে আটক করা হলে তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদ ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হলে নূর মোহাম্মদের আগে শামীম ওসমান, সেলিম ওসমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তাহেরদের গ্রেপ্তার করা উচিত ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি।
ইসলাম এমন এক মানসিক রোগ যা একবার কাউকে ধরলে আক্রান্ত ব্যক্তি ইসলাম ছাড়লেও ইসলাম তার পিছু ছাড়ে না। নাস্তিক হয়ে গেলেও ইসলামিক মনোবৈকল্য তার পিছু ছাড়ে না। এজন্যই আমরা দেখতে পাই, ইসলামিক সন্ত্রাসীকে পুলিশ গ্রেপ্তার না করলে আমাদের একদল বন্ধু পুলিশ এবং সরকারের তীব্র নিন্দা জানায়। অথচ ইসলামিক সন্ত্রাসীকে যদি পুলিশ ধরে তখনও আমাদের সেই বন্ধুরাই পুলিশ এবং সরকারের তীব্র নিন্দা জানায়! এটা আমাদের দোষ না; এটা হচ্ছে আমাদের মাথার মধ্যে ছোটকালে যে ইসলাম নামক ভাইরাস ঢোকানো হয়েছিল সেটির কুপ্রভাব। সন্ত্রাসী জাকিরের শিষ্য সন্ত্রাসী আজহারীকে দেশ ছেড়ে পালাতে সাহায্য করার কারণে যারা সরকারের নিন্দা করেছে সেই ব্যক্তিরাই আজহারীকে যদি পুলিশ গ্রেপ্তার করত তবে সরকারের তীব্র নিন্দা করত। একদল মুক্তমনা তো আজহারীকে মধ্যপন্থী বক্তা হিসেবে দাবি করে! হায় আফসোস!!
সন্ত্রাসী মাওলানা মামুনুল হক, সন্ত্রাসী মুফতি মাহমুদুল হাসান গুনবী, সন্ত্রাসী আহমদ শফী, সন্ত্রাসী বাবুনগরী ও সন্ত্রাসী আব্দুর রাজ্জাকদেরকে যদি পুলিশ আটক করে তাহলেও দেখবেন আমাদের অনলাইনের বুদ্ধিজীবী মুক্তমনাদের একটা অংশ বিক্ষোভে ফেটে পড়বে!
আমাদের বুদ্ধিজীবীদের একটা অংশ মনে করে, দাড়ি টুপি না থাকলে সে ব্যক্তি জঙ্গি হতে পারে না। আরেকদল মনে করে, মানুষ খুনের উস্কানি দেয়াটা ব্যক্তির বাকস্বাধীনতা, এই বাকস্বাধীনতার কারণে কাউকে গ্রেপ্তার করা উচিত নয়! আর তাই বিএনপি নেতা জঙ্গি মাহমুদুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা জঙ্গি শামীম ওসমান, জামায়াত নেতা সংগ্রাম সম্পাদক জঙ্গি আবুল আসাদ গং ও নূর মোহাম্মদ, দেশের ভয়ঙ্কর জঙ্গি নেতা আরিফ আজাদ তাদের দৃষ্টিতে সন্ত্রাসী নয়। আমাদের বুদ্ধিজীবীদের একাংশ দেখবেন, মোল্লারা নারীবিদ্বেষী বক্তব্য দিলে উষ্মা প্রকাশ করে, মোল্লারা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস করতে উস্কানি দিলে ক্ষোভ প্রকাশ করে; একই সাথে যখনই এই মোল্লাদের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয় অথবা তার সন্ত্রাসবাদী বক্তব্যের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয় তখন এই দরবেশ বুদ্ধিজীবীরা তীব্র নিন্দা করে! কেন নিন্দা করবেন? ব্লগারদের খুন করার উস্কানিদাতা, ব্লগারদের খুনে মিষ্টি বিতরণকারী, জঙ্গিবাদের নেটওয়ার্ক পরিচালনাকারী শিক্ষিত লোকদের গ্রেপ্তার করলে আপনার কেন ফেটে যায়? আপনি হয়তো বলবেন, সরকার তার নিজ দলের জঙ্গিদের কেন গ্রেপ্তার করেনা? আমি আপনার সাথে এখানে ১০০ ভাগ সহমত পোষণ করি। আমিও আপনার সাথে বলতে চাই, সরকার তার নিজ দলের শীর্ষ পর্যায়ে ঘাপটি মেরে থাকা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান না চালিয়ে জঘন্য অপরাধ করছে। সরকার জঙ্গিদেরকে ব্লগার হত্যা করে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছে। কিন্তু সরকারের এই অপরাধ অন্যান্য জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করার অন্যায্যতা ও অযৌক্তিকতা প্রমাণ করে না। এক সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার না করা আরেক সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করার যৌক্তিকতাকে ম্লান করে দেয় না।
সুশীলতা মারান ক্যান? সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ, জঙ্গি সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান, আওয়ামী ঘনিষ্ঠ জঙ্গি পীর দিল্লুর রহমান, বাল্যবিয়ের বৈধতার দাবিতে মানববন্ধনকারী ওলামা লীগের নেতাদেরকে গ্রেপ্তার করলে আপনার ফেটে যায় কেন? যদিও তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়নি, এবং হবে বলেও মনে হয়না। কিন্তু আমি নিশ্চিত, তাদের গ্রেপ্তার করলে সুশীলতা মারানো একদল বুদ্ধিজীবীর ফেটে যাবে! একদল মুক্তমনা দাবিদার লোকদেরও ফাটবে, প্রচন্ড ফাটবে। জঙ্গিদের মুক্ত রাখলেও আপনি কষ্ট পান, আবার তাদের গ্রেপ্তার করলেও আপনি কষ্ট পান; কিন্তু কেন? আমি তো এমনি এমনি বলি না, ইসলাম আমরা ছাড়লেও ইসলামের ভাইরাস আমাদের ছেড়ে যায় না; ওটা থেকে যায়। নাস্তিক হওয়ার পরেও ওটা থেকে যায়। আর তাই নাস্তিক হওয়ার পরেও অনেকে মোল্লাদের মতো কামড়াকামড়ি করি। নাস্তিক হওয়ার পরেও আমাদের অনেকে জঙ্গিদের গ্রেপ্তারে কষ্ট অনুভব করে।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................