মানবপ্রেমের ইতিকথা।
💗💝💕💙💛💑
অদ্ভুদ, অপার্থিব শুভ্রতার চাদরে মোড়া শান্ত মায়াময় এক পরিবেশ। ঘন কুয়াশায় ধোয়াসা অস্পষ্ট আলোর আভা চারপাশে। এই অস্পষ্ট মায়াময় শুভ্র আলোর মাঝে অনেকগুলো মানব অবয়ব। ধ্যানমগ্ন প্রতিমূর্তি যেন। নিরব নিস্তব্ধ, নিশ্চল। কোন সাড়া নেই, শব্দ নেই, স্থবির, নিশ্চল মানব মূর্তি যেন- অথচ মূর্তি নয়- সবই যেন সজীব জীবন্ত সত্ত্বা। এক্ষুনি যেন ধ্যনভঙ্গ হলেই জেগে উঠবে।
যেন অন্তরালে থেকে কেউ এদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছে। এভাবেই অনন্তকাল ধরেই এভাবে রয়ে গেছে।
হঠাৎ কোন এক অদ্ভুদ খেয়ালে কারো অদৃশ্য ইশারায় দুটি মানব প্রতিমূর্তিকে যেন নাড়িয়ে ধ্যানভঙ্গ করে দিলো। এমন কখনই হয়নি। এই প্রথম।
কোন অদৃশ্য, অন্তরাল থেকে দুটি অবয়বে প্রাণ সঞ্চারিত হল যেন।
অদ্ভুদ চঞ্চলতা ভর করেছে এদের মধ্যে । অদ্ভুদ চঞ্চলতায় যেন কিছু খুজছে। অন্যসব মূর্তিবৎ যেমন আছে তেমনি ধ্যানমগ্ন। এদের দুজনকে অলক্ষ্যে জাগিয়ে দিয়ে যেন আড়াল থেকে কেউ পর্যবেক্ষন করছে।
একটি মানব, অন্যটি মানবী। দুজনেই মাথা তুললো। স্পষ্ট চোখ মেলে চারপাশটা দেখতে লাগলো অদ্ভুদ ঘোরলাগা দৃষ্টিতে। একসময় দুজনের দৃষ্টি বিনিময় হল। এবার প্রচন্ড কৌতুহল নিয়ে একে অপরকে দেখতে লাগলো। দূর্বার এক আকর্ষণ ভর করলো যেন। অন্যসব নিরব নিথর অবয়বের ভীরে দুজন জীবন্ত সচল সত্ত্বা একে অপরকে দেখছে বিস্ময়ের ঘোর লাগা দৃষ্টিতে।
প্রচন্ড আবেগ, উত্তেজনায় সারা শরীর এক প্রচন্ড শক্তি ভর করেছে। দুজন দুজনের কাছে যাবার দূর্বার আকর্ষনে ধ্যানমগ্নের ভঙ্গিমা ঝেড়ে ফেলে উঠে দাড়ালো-প্রায় একই সঙ্গে।
সহসা সেই মৌনতা খান খান করে সুতীব্র এক অপার্থিব আর্তনাদ বের হয়ে এলো "থামো"।
সেই অপার্থিব স্বরের তীব্রতায় সকল অবয়ব মূহুর্তে ভেঙ্গে খান খান হয়ে গেল। শুধু দুটি অবয়ব ঠায় দাড়িয়ে আছে। নিষ্পলক চেয়ে আছে একে অপরের দিকে। সেই দৃষ্টিতেই প্রথম ভালবাসার জন্ম।
এরপর সবকিছু সুনসান, নিস্তব্ধ৷ শুধু দুটি হৃদয়ের হৃদস্পন্দন একই লয়ে বেজে সেই নিস্তব্ধতাকে ভ্রুকুটি করতে লাগলো।
এভাবে যেন অনন্তকাল কেটে গেল। আবার সেই অপার্থিব স্বর ফিরে এলো। যেন অস্পষ্ট ভাবে বহুদূর থেকে ভেসে আসছে এক হতাশা, ঈর্ষা, ক্ষোভ মিশ্রিত এক নিরুত্তাপ অপার্থিব স্বর। স্বরটি বলছে" তোমরা পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছো। নিজেদের দূর্বার আকর্ষণে এই নিস্তব্ধতা, এই ধ্যানমগ্নতাকে খান খান করে দিয়েছো নিজেদের চিত্তচাঞ্চল্যতায়, অসীম শক্তিতে নিজেদের অবিচল রেখেছো প্রবল আকর্ষণে। এই বিশাল শক্তি এই ধ্যানমগ্নতার আবহকে গুড়িয়ে দিয়েছে। এই অসীম শক্তিকে আরো কঠিন পরীক্ষার ক্ষেত্রে প্রমাণ করতে হবে।
সেখানে এই শক্তির প্রমাণ দিয়ে বিজয়ী হতে হবে। তবেই এখানে ফিরতে পারবে। আজ হতে সেই কঠিন পরীক্ষা ক্ষেত্রে তোমরা নির্বাসিত। তোমাদের পরষ্পর এই আকর্ষন সেখানে ধরে রাখতে পারলেই প্রমাণ হবে এই অসীম শক্তির শ্রেষ্ঠত্ব। তবেই অভিষেক হবে নব শক্তির। তবেই আবার এখানে ফিরতে পারবে- যাও"।
সেই স্বর ক্রমেই ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে মিলিয়ে গেল। অসহ্য যন্ত্রণায় একদিন নিজেদের আবিস্কার করলো মর্তের মাটিতে। দুজন বিচ্ছিন্ন দুজনের থেকে। তারপর থেকে চলছে একে অন্যকে খুঁজে ফেরার পালা। এই পার্থিব জীবনে তাকে খুঁজে পেতেই হবে। তবেই ফিরতে পারবে।
নিরন্তর চলছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম সেই ভালবাসার জুড়ি খুঁজে ফেরা। প্রচন্ড ভালভাসার জুটি।
কেউ পারছে, কেউ পারছে না৷ কেউবা হাল ছেড়েই দিয়েছে পার্থিব পাকচক্রে।
যারা খুঁজে পাচ্ছে তারাই ফিরতে পারছে অকৃতিম ভালবাসার র
জোরে। যারা পারছে না এই পার্থিব জীবনের কঠিন পরীক্ষায় তাদের আর ফেরাই হচ্ছে না। এই পার্থিব জগতেই তাকে পড়ে থাকতে হচ্ছে৷ সেই অকৃত্রিম চির ভালবাসার রাজ্যে ভালবাসার প্রেমের জোরেই স্থান পাওয়া যায়। ভালবাসায় বিশুদ্ধ নির্মল আত্মারই স্থান সেখানে। সেটা নিয়েই
আবার ফেরা যায়।
আপনি ফিরছেন তো?
-----------
নিঃসীম আকাশ তলে,
একাকী নিথর নিরব,
চোখে অসীম বিস্ময়।
ঋজু দেহে দাড়ান ঠায়,
প্রথম স্বর্গচ্যুত মানব।
সহসা স্বপ্ন ভঙ্গের,
ঘোরলাগা দৃষ্টিতে
করে অনুভব।
খুঁজে ফেরে অস্পষ্ট কোন স্মৃতি,
মূর্ত অবয়ব।
বিরহী কোন সুর,
নিভৃত গোপন পথে,
যেন গুঞ্জরিয়া উঠে,
সুপ্ত অনুভব।
উদাসী দৃষ্টি মেলে,
বিস্ময় জাগে অভিনব;
কোন দূরালোক হতে,
কে যেন ফুকারিয়া উঠে,
যেন সে বাস্তব।
-★★★-
( ভালবাসা দিবসের গল্প)
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................