সিপিএম এর আমলেই হিন্দু মধ্যবিত্ত বাঙালী প্রথম নিজ ঈশ্বরবাদ ও ঈশ্বরবিশ্বাস কে তাচ্ছিল্য করতে শেখে। যে প্রজন্মের তখন কৈশোর তারাই সবচেয়ে বেশি কমিউনিজম মাদকাসক্ত হয়েছে। দেখেছি সিপিএম নেত্রী, সিঁদুর ব্যবহার করেছেন নিজে কিন্তু দেবদেবী র ছবির পরিবর্তে লেনিন, মার্কস ও কাকাবাবু মুজফফর আহমেদ এর ছবি দিয়ে সাজিয়েছেন নিজ বাড়ি।
এ এক অদ্ভুতুড়ে যুগ, যা পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরা ছাড়া সম্ভবত ভূভারতে কোথাও নেই। আর কোথাও কমিউনিজম এর নামে বাধ্যতামূলক নাস্তিকতা প্রচার ও প্রসার হয়নি হিন্দু বা সনাতনী দের মধ্যে। এবং হিন্দুদের ই নাস্তিক বানানো হয়েছে আন্তরিক উদ্যোগে, উপাস্য দেবদেবী ও রীতিনীতি র তাচ্ছিল্য এবং উপহাস করাটিই ছিল প্রগতিশীল সাজার চাবিকাঠি।
এমন বেশিরকম ক্ষতি আগুনবরণ নকশালি আমলেও বোধকরি ব্যক্তিগত স্তরে হয়নি।
আজ বিশ্বজুড়ে কমিউনিজম হত হলেও সনাতনী বাঙালী দের পঞ্চাশের, ষাটের ও সত্তরের দশকের মানুষ দের এই দীক্ষা র ছাপ রয়ে গেছে বৈকি।
এঁদের অধিকাংশ ই চূড়ান্ত রকম স্বজন বা স্বদলপোষণ করেছেন বাম শ্বাসনকাল জুড়ে, কিন্তু এখন চোখে আঙুল দিয়ে দেখালে বিষম অসন্তুষ্ট হন। এঁরাই মরিচঝাঁপি, বিজন সেতু, সাঁইবাড়ি, নন্দীগ্রাম এর পরিকল্পিত গণহত্যা র কথা উচ্চারিত হলেও আঁতকে ওঠেন। এঁরাই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে আপত্তির প্রতিবাদ করেননি ( আসলে প্রতিবাদ করেছিলেন পাঁচফুট মহামতি জ্যোতি, যিনি নিজেকে স্টালিন এবং স্টাইলিশ ভাবতে ভালোবাসতেন, এবং কম্পিউটার ও ইংরেজি বর্জন করে সনাতনী বাঙালী দের দুটি প্রজন্ম সযতনে বরবাদ করে দিয়েছিলেন) এবং এই গুণমুগ্ধ স্তাবক রা বিরোধিতা করার কথাই স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি।
পদে নিয়োগ, পদোন্নতি, সরকারি ক্ষেত্রে ট্রান্সফার সবই দল ও দর্শনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল দের হয়েছে, বহু নেতাই বহু অনিয়মিত সম্পত্তি র মালিক হয়েছেন, শুধু বিরুদ্ধতা করার সাহস সাধারণ মানুষের ছিল না, ভীমরুলের চাকে কেই বা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ঢিল ছোঁড়ে?
বিশ্ব জুড়ে বঞ্চিত দের একীকরণ এর অবাস্তব স্বপ্নের ও মৃত্যু হয়েছে।
তথাপি মগজ ধোলাই এমন পরিপক্ব হয়েছে যে তার রেশ দিব্য আছে এখনো, যদিও নির্বাচনে এরা নোটার কাছেও পরাভূত।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................