গাভী ভক্ত হিন্দু বনাম গরুখোর।

“ গাভী ভক্ত হিন্দু বনাম গরুখোর”
মৃনালানন্দ হিন্দু

হিন্দুরা গরুর মাংস খায় না,গাভীকে মা বলে ডাকে, এমনকি পুজোও করে। এই নিয়ে নানা দিকে নানা ভাবে অপপ্রচার করা হয়, গালাগাল দেওয়া হয়। প্রশ্ন তোলা হয়, হিন্দু ধর্মে কোথায় লেখা আছে যে "গরুর মাংস' খাওয়া নিষিদ্ধ?

প্রকৃত পক্ষে হিন্দুদের কোনো লিখিত নিয়ম কানুন নেই যা বলে "কি ভাবে জীবন যাত্রা নির্বাহ করতে হবে।" প্রাচীন বৈদিক দর্শন থেকে উদ্ভুত "এক বিশ্বাস, এক ধরনের চিন্তা ভাবনা, এক ধরনের জীবন শৈলী, সমাজে একে অপরের সঙ্গে কেমন ভাবে সহবাস করবে, মানুষ সৃষ্টির অন্য সব কিছুর সংগে কি ভাবে সম্পর্ক তৈরী করবে সেটাই হলো পরবর্তি কালে হিন্দু ধর্ম।

হ্যাঁ, তবে বৈদিক দর্শনে বলা আছে-- নানা সুত্রে, নানা কাহিনীর মাধ্যমে মানুষের কথা। কোথাও হিন্দু কথাটাই নেই। প্রকৃত হিন্দু হতে হলে সেই দর্শন জানতে হবে, মানতে হবে, সেই ভাবে চলতে হবে। বৈদিক দর্শনের ব্যাখ্যা বহু পন্ডিত নানা ভাবে করেছেন। জানতে বুঝতে হলে কয়েকজন্ম কেটে যাবে। সার সক্ষেপ হচ্ছে মাত্র কয়েকটি শব্দে--

"গীতা গঙ্গা চ গায়ত্রী গোবিন্দেতি হৃদি স্থিতে
চতুর্গকার সংযুক্তে পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে"। 

গীতা, গঙ্গা, গায়ত্রী মন্ত্র, গোবিন্দ এই চারটি হৃদয়ে স্থিতি করতে পারলে তার আর পুনর্জন্ম হয় না, মোক্ষ প্রাপ্ত হন।

হিন্দু ধর্মে বেদান্ত দর্শন, উপনিষদ, ব্রহ্মসুত্র এবং গীতা এই হচ্ছে গ্রন্থ। গীতা বৈদিক দর্শনের সার কথা। মানব কল্যানে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের ভাবাদর্শ। এর কোথাও লেখা নেই “গরুর মাংস খাবে না”। কিন্তু কোন ধরনের খাদ্য খাওয়া উচিত বা অনুচিত তা বলা আছে। 

ডাক্তাররা বলেন “রেড মিট” খাওয়া উচিত নয়, টিনিয়া সোলিয়াম, টিনিয়া সাজাইনেটা নামক ফিতে ক্রিমি গরুর মাংস এবং শুয়োরের মাংস থেকে আসে। তাছাড়া এই রেড মিট রক্তে কোলেষটারল বাড়ায়, রক্তের চাপ বাড়ায়, হার্টের ক্ষতি করে। এর মধ্যে পাঠার মাংস বা খাসির মাংস ও পড়ে”। 

তবে, হিন্দুরা জানে গরুর দুধ না হলে এই বিশ্ব সংসার চলে না। প্রানীদের মধ্যে একমাত্র গরুর দুধ ই শ্রেষ্ট। গরু পালন সহজ এবং গরুর দুধ দিয়ে “পাস্তুরাইজড গুড়ো দুধ” বানানো হয়। ভেড়ার দুধে বা ছাগলের দুধে সারা পৃথিবীর দরকারী ‘গুড়ো দুধের’ সরবরাহ অসম্ভব। আমি ছোট বেলায় আমার মায়ের বুকের দুধ খেয়ে বড়ো হয়েছি , এখন গুড়ো দুধের ওপরে ভরসা। সেই তো গরুর দুধ। আমার মা বেচে নেই, কিন্তু রেখে গেছেন গরুর দুধ। তা মাকে কি করে কেটে খাই?????? সেটা তো শিখিনি, কি করে “মা বা মায়ের মতো কোনো প্রনীকে কেটে খাই”???????? 

ওই ভটচাযবাবু বা ব্যনার্জী দিদি একটু বলবেন???? ঊত্তর টা দেবেন????? 
******
কুর-আন হচ্ছে নবী মহম্মদের মুখ নিঃসৃত বানী, যা তিনি সরাসরি আল্লার কাছ থেকে শুনতে পেতেন। সেই বানী গুলো লিখে রাখা হয়েছে। নবী নিজে লেখেন নি কারন তিনি ছিলেন নিরক্ষর।

হাদিস হচ্ছে 'ইসলাম ধর্ম' যারা কবুল করেছে তারা কি ভাবে চলবে, জীবন যাত্রা নির্বাহ করবে সেই নিয়ম কানুন,নির্দেশ। এগুলো নবীর জীবিত কালে লেখা হয় নি, অনেক পরে হয়েছে।

আমি যতোদুর জানি এবং “ঐস্লামিক ধর্ম , কুর আন, হাদিস যা পড়েছি, তার কোথাও পাইনি , একমাত্র “গরু না কেটে খেলে চলবে না। গরু কেটে কুরবানী করতে হবে”। যারা এটা করেন বা বলেন, তাদের জন্য বলি---- ওই আরবের রুক্ষ মরুভুমিতে গরু পাওয়াই যায় না। তা সেই কতো কাল আগে গরু কোথা থেকে এলো??? কুরবানী প্রথার আমদানী হয়েছে, এব্রাহাম(আব্রাহাম) থেকে। বুড়ো বয়ষে তরুনী ভার্যাকে বিয়ে করে পড়েন মুশকিলে। তাকে খুশী করতে, তিনি তার পুত্র ‘ইসমেলকে’ (ইসমাইল) না কেটে পাশে দাড়ীয়ে থাকা দুম্বা টিকে হালাল করে, সেই রক্ত মাখা ছুরি নিয়ে তার তরুনী বৌকে দেখান। ইসমেল বা ইসমাইল থেকে “কুরাইশ বংশ’ আসে, নবী সেই কুরাইশ বংশের অনেক অধঃস্তন পুরুষ। 

তাহলে, এই গরু কাটা বা গরুর মাংস খাওয়া এক পবিত্র কর্ম কি করে হলো???

হিন্দুদের সব কিছুর বিরোধীতা করতে করতে এই প্রথা টাও এসে গেছে হিন্দুস্তানে। আর “গরুর মাংস খাই, খাবো’ বলা টা একটা পরম রাজনৈতিক ‘বুলি’ এসে দাড়িয়েছে। ওই বললে এবং হিন্দুদের গালাগাল দিলে ভোট জেতা যায়,তাই না??????

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted