আর কে না জানে যে শিল্পীর স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক।

জনৈক হক সম্প্রতি একটা শিবের ছবি এঁকেছেন। তাই নিয়ে বেশ চর্চা চলছে। হক সাহেব শুনলাম শিল্পী মানুষ। আর কে না জানে যে শিল্পীর স্বাধীনতা গণতান্ত্রিক। এর আগে এক মকবুল হুসেন সরস্বতী এঁকে গণতন্ত্রকে ফিদা করে দিয়েছিলেন। তারপর ফ্রান্সে শার্লি হেবদো পত্রিকায় মহম্মদের কার্টুন অবশ্য গণতন্ত্রের পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি। জঙ্গী হামলা হয়েছিল ফ্রান্সে ঐ পত্রিকার ছবিটির জন্য। 
   যাই হোক, সোজাসুজি বলি। গণতন্ত্র ও শিল্পীর স্বাধীনতার নামে যেটা চলছে সেটার লক্ষ্য একটাই-  দার-উল-ইসলামের প্রতিষ্ঠা। এবং তার সহযোগী বুদ্ধিজীবী হিন্দুরাই। এখানে দার-উল-ইসলামের কারিগরদের লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের থেকে পৃথক করে বৃহত্তর ইসলামিক বাংলাদেশের অঙ্গ করা। পশ্চিমবঙ্গ যে সব দিক দিয়েই ভারতের থেকে আলাদা পৃথক স্বত্ত্বা তা প্রতিষ্ঠার জন্য বাঙ্গালীকে সব সময় ইসলামের সাথে এক করা হয়। যেমন 'হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী' বলতে শেখ মুজিব নামক পাকিস্তানপন্থী, ১৯৪৬ এর কলকাতা হিন্দু গণহত্যার নায়ককেই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এখানে 'হাজার বছর' শব্দের মাধ্যমে সুকৌশলে বৌদ্ধ ও মুসলমান যুগকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বঙ্গভূমির অহিংস বৌদ্ধরা যেহেতু ইসলামের তরবারির নিকট দ্বিতীয়বারের মত স্বধর্ম বিসর্জন দিয়েছিল, তাই 'হাজার বছর' বলতে বঙ্গমানসে ইসলামকেই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। যদিও বঙ্গ সংস্কৃতিতে ইসলামের অবদান ১% হলেও হতে পারে। 
   শিবঠাকুরের বিষয়ে আসার আগে রামের প্রসঙ্গে যাই। যদিও পশ্চিমবঙ্গে শ্রীরামপুর, রামরাজাতলা, সীতারামপুরের মত অজস্র জায়গা আছে; যদিও রামমোহন, রামপ্রসাদ, রামকৃষ্ণ বঙ্গভূমিতে জন্মেছেন; যদিও কৃত্তিবাস ওঝা 'শ্রীরাম পাঁচালি' লিখেছেন; যদিও পশ্চিমবঙ্গের বহু টেরাকোটার মন্দিরে রামায়ণের কাহিনী অঙ্কিত হয়েছে... তবুও শ্রীরামচন্দ্রকে পশ্চিমবঙ্গে বহিরাগত বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে এখন। লক্ষ্য একটাই- পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের থেকে পৃথক করা। 
    দুর্গা ঠাকুরকে নিয়ে যে সব নোঙরামি চালায় কমিউনিস্টরা, তার ফলশ্রুতিতে যে এখানে কোনো জঙ্গী উৎপাদন হয়নি তা হিন্দুর মহানুভবতা নয়, দুর্বলতা। দুর্গাঠাকুরকে আর্য সভ্যতার প্রতীক ও অনার্যদের উপর প্রতিহিংসার প্রতীক রূপে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে বহুদিন ধরে। লক্ষ্য একটাই- বাঙ্গালীকে আর্যসভ্যতার থেকে পৃথক করা। যদিও ৮০০ বছর আগের ইসলাম বাঙ্গালীর সহি পরিচিতি। 

   এখন শুরু হয়েছে শিবঠাকুর। অনেক বছর ধরে দুগ্ধ সহযোগে শিবরাত্রিতে শিবপুজোর ক্ষতি বোঝানোর চেষ্টা চলছে সোমালিয়ার শিশুদের সামনে রেখে। ৩/৪ বছর ধরে হিন্দুত্ববাদীদের ক্রমাগত আক্রমণে সেই প্রোপাগ্যান্ডা এবার বাজার করতে না পারায় বাঙ্গালীর শিবঠাকুরকে ভারতের শিবঠাকুরের থেকে পৃথক করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। এবং এটা করতে যেভাবে সুঠাম দেবমূর্তিকে গুন্ডা সাজান হয়েছে তার প্রতিক্রিয়া বৌদ্ধিক না হলেও হতে পারে। জনৈক কমিউনিস্ট আবার দেখলাম ভারতচন্দ্রের ঈশ্বরী পাটনী কবিতা থেকে কিছু বাক্য উদ্ধার করে শিবঠাকুরকে গুন্ডা মস্তান দুশ্চরিত্র বলে প্রতিষ্ঠা করেছে। সম্ভবত ঐ কমরেড মাধ্যমিক পাশ করতে পারনি, কারণ মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকেই কবিতাটি আছে এবং ছাত্ররা সবাই জানে যে ব্যাজস্তুতি অলংকার ওখানে প্রয়োগ করেছেন কবি। যাই হোক, এখানেও লক্ষ্য একটাই- পশ্চিমবঙ্গকে ভারতের থেকে পৃথক করা। দার-উল-ইসলাম। 
   
 কিন্তু সেই দিন আর নেই। গান্ধীবাদী লোকজন বাঙ্গালীদের মধ্যে যেটুকু ছিল এখন সেটুকুও নেই। অসহিষ্ণু হয়ে যাচ্ছে সবাই। হিন্দু ধর্মের উপর কোনো ফর্ম্যাটের আঘাতই কেউ মেনে নিচ্ছে না। এক্ষেত্রেও মেনে নেবে না বাঙ্গালী।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted