কে কথা কয়রে দেখা দেয় না ।
Susupto Pathok (সুষুপ্ত পাঠক):
৭১ টিভিতে মুনতাসির মামুন বললেন, আমি তো হজ করে এসেছি, মসজিদে নামাজ পড়তে যাই, তাহলে আহমদ শফি কিসের ভিত্তিতে আমাকে মুরতাদ ঘোষণা করে? অজয় রায়কেও মুরতাদ ঘোষণা করে কিভাবে? অজয় রায় কিভাবে মুরতাদ হন?...
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ৭১ টিভির উপস্থাপিকা যখন মুনতাসির মামুনকে প্রশ্ন করলেন, বঙ্গবন্ধুর সেক্যুলার রাজনীতি থেকে বর্তমান আওয়ামী লীগকে দেখি ধর্মের রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়ছে এর কারণ কি? মুনতাসির মামুন তার পুরোনো রেকর্ড তখন ফের বাজালেন, আওয়ামী লীগকে হিন্দুদের দল, শেখ হাসিসাকে হিন্দু বলে বিএনপি জামাত যে প্রচারণা চালিয়েছিলো তাকে মোকাবিলা করতেই আওয়ামী লীগকে বাধ্য হয়ে ধর্মকর্মে যেতে হয়েছে…। তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা ধর্মকর্ম করে সারাজীবনটা শেষ করে দিলেন অথচ তাকে হিন্দু এটা শুনতে হয়! আপনাদের তো এসব বুঝতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রোবটের মত সেক্যুলারিজমের সংজ্ঞা পড়ে তো বাস্তবতা বুঝা যাবে না… ইত্যাদি।
মুনতাসির মামুন যে একজন হাজি ও নামাজী সেটা আজকে জানলাম। এবার ক্লিয়ার হলে তার রানা দাশগুপ্ত ও পিযুষ বন্দোপাধ্যায়ের উপর হিন্দুত্ববাদী দোষারোপ চাপানোর শানে নযূল। মুনতাসির মামুনদের ধর্মনিরপেক্ষতাও পরিস্কার। ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতা কি করে এক ঘরে বাস করে সেটা আওয়ামী বুদ্ধিজীবীদের কাছ থেকে জানা উচিত। বাংলাদেশের বামেদের নামাজ চর্চা, নিজেদের মুসলমান বলে গর্ব প্রকাশের মচ্ছব বিপরীতে ভারতের বামদের হিন্দু ধর্মের প্রতি তীব্র বিরোধীতা, হিন্দুত্ববাদের উপর আক্রোশ এখানে আলোচনায় প্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে করছি। মুসলমানদের বামপন্থা বা ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি সোনার পাথর বাটি কিনা সেই প্রশ্ন সব সময়ই ছিলো। টকশোতে যখন মুনতাসির মামুন, শাহরিয়ার কবিররা আসেন কোন মুফতির সঙ্গে বিতর্ক করতে যে ইসলামে জঙ্গিবাদ নেই, ইসলামে গণতন্ত্র, সেক্যুলারিজম ইত্যাদিতে ভরপুর তখন মাদ্রাসার একজন সামান্য মুফতির কাছে ঘোল খান এ কারণেই। একজন প্রগতিশীল শিক্ষক বুদ্ধিজীবী যদি নিজ উদ্যোগে হজ করতে যান তার পক্ষে সত্যিকারের সেক্যুলারিজমকে হজম করা কঠিন। আপনি যদি একটি ধর্মে বিশ্বাসী হোন, তাহলে তার সঙ্গে বাস্তব দুনিয়ার সাংঘর্ষিকতা আপনার চোখ এড়াবে না যদি আপনি সংবেদনশীল মানুষ হোন। আর তখনি আপনাকে ভন্ডামীর আশ্রয় নিতে হবে। একটা সিনেমার সাফল্য কামনা করে যদি কোন পরিচালক নায়ক নায়িকা বলেন, ইনশাল্লাহ আল্লার রহমতে সিনেমাটা আশা করি হিট করবে তখন আমাদের কানে কথাটা লাগে। ‘ইনশাল্লাহ’ ও ‘আল্লার রহমত’ শব্দ দুটি যে ধর্ম বিশ্বাস থেকে এসেছে সেই ধর্মের ঈশ্বরের কাছে সিনেমার মত বেগানা নারী পুরুষের অভিনয় নাচ গানের সাফল্য কামনা করা কি হাস্যকর না? মুনতাসির মামুনদের সেক্যুলার প্রগতিশীলতার দাবী ঠিক সেই মাপের হাস্যকর। ভারতীয় সেক্যুলার প্রগতিশীলদের সঙ্গে এ কারণে পাকিস্তান বাংলাদেশের প্রগতিশীলদের বড় তফাত। ভারতীয় বামপন্থিদের সঙ্গেও বাংলাদেশ পাকিস্তানের মুসলমান বামপন্থিদের তফাতটা বড় দাগে।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................