সমস্ত মসজিদ মাদ্রাসা হজ ওমরাহ বন্ধ হয়ে গিয়ে মুসলিমদের নিজ ধর্ম নিয়ে সুপার সুপ্রিমিটিতে আঘাত লেগেছে।

কওমী মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা হলো একটু আগে। এই কওমী মাদ্রাসার হুজুরাই কয়েকদিন আগে পর্যন্ত করোনা ভাইরাসকে কাফেরদের জন্য আল্লার গজব বলেছিল। আজকেই ওয়াজ শুনছিলাম, আল্লার রসূল বলেছেন,  ছোঁয়াচে রোগ বলতে কোন কিছু নেই। আল্লাহ যদি চান আপনার করোনা হবে না তাহলে হাজার হাজার মানুষের মধ্যে বসে থাকলেও ভাইরাস ধরবে না। ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়লে আর ওজু করলেও করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকা যাবে। ...

মাদ্রাসার মুফতিরা এগুলো প্রচার করে এখন নিজেরা বাঁচতে মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষকে ওয়াজের মাধ্যমে বিভ্রান্ত করে ফেলেছে আগেই। সাধারণ মানুষ মনে করে মরন লেখা থাকলে করোনা উছিলা মাত্র। হায়াতের একদিনের বেশি কেউই বাঁচতে পারবে না...।

কোন হুজুর এসবে বিশ্বাস করলে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্ট নিয়ে বাঁচার জন্য শেষ চেষ্টা করত না। ৯২ বছরের আহমদ শফি যদি বিশ্বাস করে থাকে আল্লাহ হায়াৎ যতদিন লিখে রেখেছেন তার এক ঘন্টাও বেশি বাঁচা যাবে না তাহলে ঘরে শুয়ে না থেকে কেন বিমানে করে  ইন্ডিয়া যায় চিকিৎসা নিতে?

হুজুর ওয়াজ করছে, মক্কা মদিনায় পথের মোড়ে মোড়ে ফেরেশতা পাহারায় থাকে তাই সেখানে কোন মহামারী ঘটতে পারে না। অথচ ইতিহাস জুড়ে সৌদি আরবে প্রচুর মহামারী রক্তপাত হিংস্রতা ঘটে গেছে। সাম্প্রতিক ইতিহাস হচ্ছে সেখানে মার্শ ভাইরাসের বহু মানুষ মারা গেছে। ফেরেশতা বলতে অদৃশ্য কিছুতে কেউ আস্থা রাখলে কাবার তাওয়াফ বন্ধ করা হত না। বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসা বন্ধ থেকেও একই রকম আস্থাহীনতারই জয় হয়েছে। কেউ আল্লার উপর ভরসা করে শত শত মাদ্রাসা ছাত্রের জীবন নিয়ে ঝুঁকি নেয়নি। এখন সাধারণ ধার্মিকদের এই ঘটনাগুলি দেখিয়ে সাবধান করা উচিত যে, আমাদের রক্ষা করতে কেউ বসে নেই। মালয়েশিয়া সরকার জানিয়েছে তাবলীগ জামাতের দল থেকেই তার দেশে করোনা ছড়িয়েছে। 

করোনাভাইরাস হাফেজদের ছেড়ে অন্যদের ধরবে, হুজুর দেখে এড়িয়ে যাবে না। সমস্ত মসজিদ মাদ্রাসা হজ ওমরাহ বন্ধ হয়ে গিয়ে মুসলিমদের নিজ ধর্ম নিয়ে সুপার সুপ্রিমিটিতে আঘাত লেগেছে। পৃথিবীর একমাত্র সত্য ধর্ম, ইসলাম ছাড়া আর কোন ধর্ম আল্লাহ মনোনীত নয়- এরকম অহংকার দৃঢ় বিশ্বাসের জায়গায় থেকে যখন করোনা ভাইরাসের দাপটে ইসলামের সব কার্যক্রম বন্ধ হলো তখন সাধারণ মানুষের ইসলামের অন্ধ বিশ্বাস থেকে বের হয়ে আসাটাই হবে এখান থেকে আমাদের বড় লাভ। নগরে আগুন লাগলে দেবালয়ও রক্ষা পায় না। দেবতার ঘর রক্ষা করতে তাই মানুষকেই দমকল বানাতে হয়েছে। আমাদের মত ধর্মান্ধ দেশের মানুষদের শেখার এই তো সময়। হুজুর যখন আল্লায় আস্থা না রেখে গাট্টি বোঁচকা নিয়ে ভাগছে তখন আমাদেরও আল্লার উপর ভরসা না করে নিজেদের সচেতন হতে হবে। ...

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted