"সন্তান উৎপাদন ও প্রতিপালন নিয়ে একটি নিবেদন"
ডাঃ মৃনাল কান্তি দেবনাথ
এই সংসারে মানুষের যতো কর্ম করতে হয়, সেই কর্ম গুলো দুই ভাবে করা যায়।
এক, কর্ম কর্তা শুধু তার নিজস্ব কামনা বাসনা পুর্ন মন নিয়ে তার করনীয় কর্মের পদ্ধতি ঠিক করতে পারেন। সেই কর্ম হয় শধু নিজের সুখ এবং মানসিক তৃপ্তি লাভের জন্য, কিন্তু সেই তৃপ্তি বেশীক্ষন থাকে না, আরো বেশী পাওয়ার বাসনা মনে আসে এবং অত্তৃপ্তির জ্বালাতে অশান্তি এসে বাসা বাধে।
আমরা প্রায় সবাই, নিজ সন্তানকে একমাত্র নিজস্ব ভেবে তাকে বড়ো করি, লেখা পড়া শেখাই, আশা করি আমাদের বৃদ্ধ বয়ষে সে আমাদের ভালো রাখবে। সেই আশা কি সকলের পুরোন হয় বা হচ্ছে? নিজের সনন্তানের পিতা মাতার প্রতি কর্ত্যব্যহীনতা আজ এক বিষম সামাজিকব্যাধি এবং মানসিক যন্ত্রনার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।
এই রকম ভাবনা চিন্তার মধ্যেও একরকম আত্মসুখ লাভ করার মতো আত্মসর্বস্ব্যতা ভাব থাকে-এটাই আমাদের জীবনের সবথেকে বড়ো মোহ। মোহগ্রস্থ মন কেমন???--
---"যদা তে মোহকলিলং বুদ্ধির্ব্যতিত রিষ্যতি"--
কলিল শব্দের অর্থ্য গহন বন। মোহ, নিজস্ব কামনা বাসনা, স্বার্থপুর্ন চিন্তা মানুষকে এই সংসারের গহন বনে নিয়ে যায়। তার বুদ্ধি তখন আর সেই গহন বন থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনা, আর চিরজীবনের মতো অশান্তির আগুনে জ্বলে পুড়ে খাক হয়ে যায়।
কর্মের দ্বিতীয় পদ্ধতি , সমস্ত কর্ম ঈশ্বরের কর্ম, এমনকি নিজ সন্তানকে ঈশ্বরের সন্তান বলে মনে করতে হবে। ঈশ্বর যেমন সারা বিশ্ব সৃষ্টি করে,সমস্ত প্রানীর লালন পালন করেন, ঠিক তেমনি 'আমার সন্তান আমার নয়, ঈশরের সন্তান। তাকে লালন পালন করা, প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত করা, তাকে সংষ্কার দেওয়া, একজন ভালো মানুষ তৈরী করা এটাই ঈশ্বর প্রদত্ত কর্ম' এই মনে করে সেই সন্তানকে প্রতিপালন করা , তাকে একজন পুর্নাংগ সামাজিক এবং দেশ হিতৈষী, দশ হিতৈষী করে তোলাই এই জীবনে মানুষের সর্ব প্রথম,সব চেয়ে কঠিন কর্তব্য কর্ম। বাকী সব অকাজ কুকাজ।
নিজের সন্তান সৃষ্টী এই বিশ্বের সৃষ্টি যজ্ঞে (বিশ্ব বিধাতার যজ্ঞ কর্মে) নিজের মতো করে অংশ গ্রহন করা, এই ধারনাটা আগে মনে বদ্ধমুল করতে হবে। নিজের জন্য নয় দেশের জন্য, দশের জন্য সন্তান উৎপাদন এটা জানতে হবে।
----------"লেখা পড়া করে যেই, গাড়ী ঘোড়া চড়ে সেই' -----------------
এক কথাটা ছুড়ে ফেলে দিতে হবে। মায়া মমতা এখানে কোনো ঠাই পাবে না। শুধু মাত্র সেই গর্ব টুকুই থাকতে পারে যে, ঈশ্বর আমাকে একটি সন্তানের পালন পোষন এবং নৈতিকতা তৈরীর গুরদ্বায়িত্ব দিয়েছেন, তার দেওয়া সেই আদেশ, প্রসাদ আমি পেয়েছি, এই জীবনে এটাই সব থেকে বড়ো পাওনা।
পুজার ডালি নিয়ে মঠ মন্দিরে গেলেই বড়ো পাওনা হয় না।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................