করোনা বিপর্যয় উপমহাদেশে দীর্ঘদিন ধরেই চলার কথা!
যে দেশের সরকার সঠিক প্ল্যান করতে পারেনা,
সেই দেশের মানুষ কেন শৃংখলাপরায়ণ হবে?
---------------------------------------------------------
৩০ এপ্রিল পর্যন্ত হোম অফিস। তাই কাল থেকে নতুন কিছু শেখা শুরু করেছি। বাঙালি পত্রিকা ও বাঙালি লোকের ফেসবুক মেসেজ পরে দুঃখ হয়, জ্ঞান কমে, রাগ হয়! যে দেশের সরকার এর পক্ষে লক ডাউন ( মানে বুঝিনা) করার পূর্বে জানাতে পারলোনা, কারা কারা কেন রাস্তায় বের হতে পারবে, কোন কোন অফিস দফতর দোকান কারখানা ট্রাস্নপোর্ট কখন খোলা থাকবে! কারা কাজ করতে পারবে! পুলিশ কি দেখলে ছেড়ে দেবে! কোম্পানি কোনো বিশেষ পরিচয় পত্র দেবে কিনা! যে দল গুলো মানুষের বাজার বাড়ি পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করতে পারলোনা, নোঙ্গরখানা খুলতে পারলোনা, এরা কোন মুখে দাবি করে যে দেশ সেবা করছে? কোন মুখে ভোট চায়? কোন অধিকারে জনগণ কে জ্ঞান দেয় , ভুল ধরে! কোনো প্ল্যান ছাড়া , হোম ওয়ার্ক ছাড়া, লোক (লক ) এর মনোবল ডাউন করে দিয়েছে! অসহায় মানুষ দের রাস্তায় কুকুরের মত পুলিশ গুলো পেটাচ্ছে, কারণ তাদের কাছে কোনো স্পষ্ট বার্তা যায়নি! লক ডাউন এর মানে কি বোকাচোদারা? কেন মাতৃভাষায় বলতে পারিসনি?? সরকার কেন হোমওয়ার্ক করে লোকের মনোবল ডাউন করার ঘোষণা দিলোনা? কেন আগে থেকে খাদ্যদ্রব্য সব অঞ্চলে মজুতের ব্যবস্থা করলোনা? কেন একাধিক কোম্পানি নেই , যারা টেস্ট কিট বানায়? স্বাস্থ্য কর্মী ও সিস্টেম রিলেভেন্ট কর্মী ( যেমন পুলিশ , দোকানদার .....দের মাস্ক .)দের FFP ৩ মাস্ক বা N ৯৫মাস্কের তেমনি পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট এর ব্যবস্থা করলোনা? কেন মহকুমা বা থানা বেসিস এ পর্যাপ্ত কোয়ারেন্টাইন এর ব্যবস্থা করলোনা? ডাক্তার পুলিশ সাস্থকর্মী রা কি মানুষ নয়? তারা যাতায়াত কি করে করবে? হাসপাতালে কি করে যাবে?
এমার্জেন্সি জিনিস কেন দেশে একাধিক কারখানায় উৎপন্ন হবেনা? এতকাল সরকার গুলো কোন চুল ফেলেছে?
এ কোন সরকার? আমলারা কেন মন্ত্রী দের মনে করিয়ে দেয়নি? এমনিতেই মানুষ ডিপ্রেশন , ভয়ে, চিন্তায় মরছে! তারউপর পুলিশের মার! মেনে নেয়া যায়না! জনগণের জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে! রাজনৈতিক দল গুলোর উপর ঘৃণা হচ্ছে! অযোগ্য নেতাদের মুখে থু থু দিতে ইচ্ছা করছে! পাপ করলেই উপমহাদেশে তে জন্ম হয়! জন্মই আসলে আজন্মের পাপ উপমহাদেশে!
বাংলদেশের সরকার হেফাজতি দের খেপাবেনা বলে ধর্মীয় সমাবেশ বন্ধ করেনি! ওয়াজের নামে মসজিদে অবৈজ্ঞানিক কথা বলেই চলছে! বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো প্রবাসী দের খেপাবেনা বলে, বাধ্যতামূলক অন্যদেশের মত কোয়ারেন্টাইনে রাখেনি। বিজ্ঞান ও সরকার আল্লার ও ইসলাম ধর্মের কাছে অসহায়!লোকজন ভয়ে বা পেটের ক্ষুধায় বা মরলে এক সাথে মরবো- এই চিন্তায় যে যার ফ্যামিলির কাছে শহর ছেড়ে যাচ্ছে।আর এতো ভিড় যে সেখান থেকেই ছড়াবার খুব সুযোগ! এর পর কি হবে কেহ জানেনা! সরকারি বেসরকারি কর্মীদের জীবনের মূল্য আছে, কিন্তু সেজ বা গার্মেন্টস কর্মীদের জীবনের দাম নেই! কারণ এদের কাজ বিদেশী মুদ্রা আনে! যা নেতা ও ব্যবসায়ী রা বিদেশে পাচার করে! বাংলদেশের ম্যাক্সিমাম MP SEZ বা গার্মেন্টস এর সাথে জড়িত। খুব কম সাধারণ মানুষ MP হয় বাংলদেশে। দাঁড়ালে লোক ভোট দেয়না! কারণ সাধারণ ক্যান্ডিডেট রা ভোটার সময় এদের চা নাস্তা দিতে পারেনা! লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু!
ক্যাথলিক ইতালি স্পেন এর মৃত দেহ র সৎকার করার কেহ নেই- মাত্র কয়েক হাজার মরেছে! আপনি মরলে সৎকার হবে তো? ভাবুন তো জীবনে কি করলেন? টাকা আপনার চিকিৎসা কিন্তু দেবেনা? কারণ ডাক্তার নার্স ভয়ে পালাতে পারে! ট্রাক ড্রাইভার এর ও ভয় আছে! সেও ড্রাইভ করে খাদ্য সরবরাহ ঠিক না রাখতে চাইতে পারে! টাকা দিয়ে করবেন কে? এতোদিনেও কি শেখেন নি যে টাকার আসলে কোনো মূল্য নেই! মূল্য হলো জিনিসের, উনিটি ও সার্ভিসের ! এমন দিন ও যে আসতে পারে, ভেবেছিলেন? মদ খেয়ে কি বরাবরের মত চিন্তা-যন্ত্র লক ডাউন করে রাখবেন? ধুমধাম পূজা এক বছর বন্ধ করে, সেই টাকায় নোঙ্গরখানা খুলুন, মানুষ বাঁচলে দেবতার নাম করার কেহ থাকবে!
দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি সুইজারল্যান্ড বা স্কান্ডেনেভিয়ান দেশগুলোর কোনো সমস্যা হয়নি। সব প্ল্যান মাফিক সিস্টেমিক ওয়ে তে , এক্সপার্ট ও বিজ্ঞানীদের পরামর্শে চলছে। চলছে সব কিন্তু ধীর গতিতে! হুড়াহুড়ি নেই! আছে চাপা ভয়! সরকার ও বিরোধীদল দিন রাত বসে আলোচনা করছে, পথ খুঁজছে, আইন করছে বর্তমান সমস্যা সমাধানের, তেমনি এরপর অর্থনীতি কি করে আবার চাঙ্গা করবে তার প্ল্যান ও করে ফেলছে! আর উপমহাদেশ????
কত ব্যক্তি করোনা তে আক্রান্ত হয়েছিল , সেটা কোনোদিন কোনো কেহ সঠিক ভাবে বলতে পারবেনা! উপমহাদেশে আক্রান্ত দের ৫% ও কি সনাক্ত হবে?কি করে? অত কীট , ল্যাব ও টেকনিশিয়ান ও নেই! ফ্রি নয়! কাজেই লক ডাউন এর আসল উদ্যেশ্য ব্যাহত হবে! লক ডাউন করে আক্রান্ত ও সুস্থ ব্যক্তিদের আলাদা করতে চাইছে, যাতে আক্রান্ত দের থেকে নতুন করে কেহ আক্রান্ত না হয়! সেটা কিভাবে সরকার করবে? কারণ একজনের দেহে করোনা জীবাণু ঢুকলে, তেমন কোনো সমস্যা তার না হলেও, কতদিন তার দেহে সেই জীবাণু থাকবে ও সেখান থেকে ছড়াবে, সেই হিসাব তো কোনো ভাইরাস স্পেশালিস্ট এখনো বলেনি? আর বাচ্চাদের বা যাদের ইমিউন শক্তি ভালো, তারা টের হয়ত পাবেনা! আর ডাক্তার খানা যাবার ও আগ্রহ থাকবেনা, যদিনা শ্বাস কষ্ট হয়! যাবার ট্রান্সপোর্ট ও পরীক্ষার টাকা কোথায় পাবে?কাজেই লোক ডাউন হবে, সমাধান হবে কি? আর ইন্ডিয়া তে ১০০০০০ এর বেশি শ্বাস কষ্টের সিরিয়াস রুগী দের ভেন্টিলেশনে মানে কৃত্তিম শ্বাস করাবার যন্ত্র নেই, আর এই চিকিৎসা ফ্রি নয়! বাংলদেশে কত আছে জানিনা! কাজেই বিপর্যয় দীর্ঘদিন ধরেই চলার কথা!
আশা করি, কিছু অকাল মৃত্যুর বিনিমিয়ে ও খালি পেটে কিছুদিন কষ্ট করার বিনিময়ে মানুষ ধর্ম আল্লা নেতা বিরোধীদল সরকার যে কি চিজ, বুঝবে ও সেই শিক্ষা মনে রাখবে!
মৃণাল মাজুমদার , বার্লিন, ২৬.০৩.২০২০
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................