চিকিৎসায় প্রস্রাবের ব্যবহার।

চিকিৎসায় প্রস্রাবের ব্যবহার। 
    চিকিৎসার জন্য প্রস্রাবের ব্যবহার প্রাচীন কাল থেকেই প্রচলিত আছে। প্রাচীন রোমের মানুষ পর্তুগীজদের প্রস্রাব আমদানী করত। তাদের বিশ্বাস ছিল পর্তুগীজদের প্রস্রাব দ্বারা মুখ ধুলে দাঁত পরিষ্কার হয়। রোমানরা প্রস্রাবের গুণাবলীর উপর এতোই ভরসা করত যে তারা শহরের নানা স্থানে মানুষের প্রস্রাব সংগ্রহের জন্য বড় বড় পাত্র রাখত। মানুষ সেখান থেকে তাদের প্রয়োজন মত প্রস্রাব নিয়ে যেত।  আবার যারা দাতা তারা সেখানে প্রস্রাব দান করতেন। 

    তবে সুস্বাস্থ্যার জন্য নিজের নিঃসৃত প্রস্রাবও নানা দেশে ব্যাবহার করা হত।ভারতের প্রধান্মন্ত্রী মোরার্জী দেশাই নিজের প্রস্রাব পান করতেন । আবার বৃটিশ অভিনেত্রী সারাহ মাইল  ৩০ বছর যাবত নিজের প্রস্রাব পান করে বলেছিলেন এটাই তাকে সুস্থ রেখেছে। এছাড়াও বিশ্বের তারকা ফুটবলার ক্রীড়াবিদ তাদের নিজ প্রস্রাব পানের উপকারীতার কথা স্বগর্বে উল্লেখ করেছেন।
   চীনে এখনও Urine Therapy Association আছে যার সদস্য হাজারের উপরে।  ১৯৪৫ সনে বৃটিশ চিকিৎসক (alternative medicine)আর্মস্ট্রং আবার প্রস্রাবকে চিকিৎসায় ব্যবহার শুরু করেন। তার বক্তব্য ছিল যে নিজের প্রস্রাব প্রতিদিন পান করলে মানুষের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।  বৃক্ষের শুষ্ক পত্র যেভাবে গাছের গোড়ায় সারের যোগান দেয়, একই ভাবে মানুষের নিঃসৃত মুত্রও তার দেহের পুষ্টি যোগান দিতে সক্ষম।
   আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে গোমূত্র কিছু কিছু রোগারোগ্যের জন্য ব্যবহারের কথা আছে। আবার হাদিসে নবী মদীনায় আগতদের শারীরিক সুস্থতার জন্য উষ্ট্রমূত্র পান করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। মধ্যযূগের বিখ্যাত চিকিতসক ইবন সিনা উষ্ট্র মূত্র সম্পর্কে বলেন "সর্বোৎকৃষ্ট প্রস্রাব উতপাদন করে বেদুইনদের উট, যার নাম নাজিব।"
   তবে আধুনিক যুগের ঔষধ বানাতেও প্রস্রাব ব্যবহৃত হয়েছে। কিছুকাল আগেও ঘোড়ার প্রস্রাব থেকে হরমোন আহরণ করে বাজারজাত করা হত -Premarin নামে। গোমূত্র নিয়ে পরীক্ষা করেছে এক ব্রাজিলীয় প্রতিষ্ঠান, দেখা গেছে blood Sugar এতে কমে যায়। 
   এশিয়ার চীন, মায়ানমার, ইন্দোনেশীয়া, ছাড়াও আফ্রিকার কিছু দেশে urotherapy এখনও  alternative medicine হিসেবে প্রচলিত আছে। 
প্রস্রাব আজও কারও মতে ঔষধ কারো মতে কেবল বৈর্জ্য।

0/Post a Comment/Comments

যুক্তি সংগত কথা বলুন.................

Stay Conneted