আত্মরক্ষায় ব্যর্থ ভারতে পশ্চিমা বিশ্বের মনস্তাত্বিক দাসত্ব।
হিন্দুরা দুর্বল বলে সকল অস্ত্র মাটি দিয়ে নির্মিত মুর্তির হাতে তুলে দিয়ে নিজেকে সুরক্ষা করতে চায়। কিন্তু মাটির মুর্তির কি বিন্দুমাত্র ক্ষমতা আছে? কালীর মুর্তি দেখতে কী ভয়ঙ্করা। দুর্বল চিত্তের হিন্দুরা শত্রু নিধনে এর চেয়ে জুতসই দেবী অথবা অস্ত্র কল্পনা করতে পারেনি। এতো বলহীন বলেই এতো কাপুরুষ বলেই হিন্দুরা ভয়ঙ্করা দেবীকে তাদের রক্ষার দায়িত্ব দিয়ে চোখ বন্ধ করে কল্পনায় দেখে সব সমাধান। কিন্তু তাকি আর হয়? একটু নাড়া চাড়া করলেই মুর্তি নিজেই গুড়িয়ে ঝরে পড়ে। দেবীতো আর রক্ষা করেনা দেবীকে রক্ষা করতেই আমাদের বেহাল দশা।
যারা মাটির পরিবর্তে কাগজে কথা দিয়ে যুক্তি দিয়ে প্রবন্ধ লেখেন তাদের পক্ষে মাটির মুর্তির মতইকাগুজে বাঘ হওয়া সম্ভব কিন্তু একটা বিড়ালের মতঁ আচড় কাটার ক্ষমতাও নেই।
পাকিস্তানের বিরূদ্ধে ৭১ স্বাধীনতার যুদ্ধ কাগজ কলমের যুদ্ধ ছিলনা বলেই জিতেছি। গান্ধীর সত্যাগ্রহ আর জিন্নাহর ডাইরেক্ট একশনের তফাত ছিল বলেই স্যুট টাই পরে জিন্নাহ কায়েদে আজম হয়েছিলেন।ভারতকে খাবলে ছিঁড়ে পাকিস্তান গড়তে গান লাগেনি, কবিতা লাগেনি, বুদ্ধীজীবিদের কলম লাগেনি। বৃটিশের সাথে লড়তে হয়নি কেবল সোরোয়ার্দীর ছুরির জোড়েই "হাত মে বিড়ি মুখ মে পান লড়কে লেঙ্গা পাকিস্তান" হয়ে গেল।
নজরুল রবীন্দ্রনাথ, বঙ্কিম, দ্বিজেন্দ্রলাল, রজনীকান্ত যাদেরকে অগ্নিযুগের সাহিত্যিক বলা হয় , তাদের কিন্তু কোন অবদান নেই ১৯৪৭ এর বিকলাংগ স্বাধীনতায়। যারা রক্ত নিয়ে খেলেছিল তারাই জিতেছে। ভবিষ্যতেও তারাই জিতবে। মানবতার পরাজয় আমরা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছি । বাংলাদেশ পাকিস্তান রাজনৈতিকভাব স্বাধীন হয়েছে যার জন্য বিশ্বের কেউ তাদের শাসন পদ্ধতি নিয়ে মাথা ঘামায়না। কিন্তু ভারতে স্বাধীনতা দেয়নি বৃটেন। পশ্চিমা শক্তি রাজনৈতিক ভাবে এখনও ভারতের ক্ষমতায়। তারা transfer of power করেছিল, কিন্তু ভারতের রাজনীতিকে নিজেদের পকেটে রেখে দেয়। মাউন্ট ব্যাটন তাই ১৯৪৭ সনের ১৫ই আগষ্ট হলেন ভারতের সর্বোচ্চ পদ গভর্নর জেনারেল। আর পাকিস্তানের গভর্ণর জেনারেল হলেন জিন্নাহ।
১৯৪৭ সন থেকে পশ্চিমারা যে নিয়ন্ত্রণ জারী করে তাতে পশ্চিমের সৃষ্ট কংগ্রেস যুগের পর যুগ ভারত শাসন করে যায় এবং একটি রাজনৈতিকভাবে পংগু সম্প্রদায় সৃষ্টি করে যারা পশ্চিমকে অনুকরণ ভিন্ন নিজেদের সকল যৌক্তিক ভাবনার বিলুপ্তি ঘটায়। স্বদেশী আন্দোলন ক্ষুদিরাম, ভগত সিংকে যখন ফাসিতে ঝুলানো হল এরা বললেন” ওরা অন্যায় করছে। ফাঁসি হওয়াই উচিত”। যখন গডসে পশ্চিমের রাজনৈতিক সখা গান্ধীকে বুলেট দিয়ে হত্যা করে নিজেকে পুলিসের কাছে সমর্পণ করলেন তখন চারিদিক থেকে ধিক্কার ছাড়া আর কিছু শোনা গেলোনা। গডসের সবচেয়ে পরিচয় গান্ধী হত্যা নয়; তিনি ছিলেন অকুতোভয় এক দেশপ্রেমিক। গডসেকে ফাঁসি দিয়েই ওরা থামেনি; দেশপ্রেম মূল মন্ত্রটাকেই স্থায়ীভাবে হত্যা করেছিল। যে গান্ধীর জন্য কোটি কোটি মানুষ ভিটে মাটি ছাড়া হল; যার কারনে লক্ষ লক্ষ মানুষের রক্তের নদী সৃষ্টি হল- তার হত্যায় পশ্চিম আর পাকিস্তান হারিয়েছিল তাদের এক পরম বন্ধুকে, আর ভারতের পশ্চিমী স্তাবকরা হারিয়েছিল তাদের গুরুকে।
গান্ধীর মূর্তি, গান্ধীর চিতার আগুন এখনও সেই বন্ধাত্ব্ থেকে ভারতকে মুক্তি দিচ্ছেনা। পশ্চিমের দাসত্ব ও আত্মবিস্মৃতির এমন একটি সাক্ষী যতদিন ভারত তার পরিচয় হিসেবে ব্যবহার করবে ততদিন এ থেকে মুক্তি হবেনা।
Post a Comment
যুক্তি সংগত কথা বলুন.................